1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দিল্লির হিংসা নিয়ে আবার উত্তাল সংসদ, ধাক্কাধাক্কি

৩ মার্চ ২০২০

বিরোধীদের দাবি ছিল, দিল্লির হিংসা নিয়ে লোকসভায় আলোচনা করতে হবে। সেই দাবি নিয়েই আবার চরম উত্তেজনা এবং বিজেপি ও বিরোধী সাংসদদের ধাক্কাধাক্কি।

https://p.dw.com/p/3Yn2k
ছবি: picture-alliance/dpa

দিল্লির হিংসা নিয়ে লোকসভায় অশান্তি চরমে উঠল। লাগাতার দ্বিতীয় দিন লোকসভার ভিতর বেনজির বিরোধে জড়িয়ে পড়লেন বিজেপি ও বিরোধী সাংসদরা। তাঁদের মধ্যে আবার চিৎকার, চেঁচামিচি এবং ধাক্কাধাক্কি হল। সোমবারের থেকেও যার তীব্রতা সম্ভবত বেশি ছিল। সঙ্গে ছিল ওয়েলে নেমে দুই পক্ষের প্রবল চিৎকার, তর্ক-বিতর্ক। যার মধ্যে সামিল হলেন মন্ত্রীরাও। ফলে মঙ্গলবারও অচল থাকল লোকসভা।

দিল্লির হিংসার দায় নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ইস্তফার দাবি সোমবার থেকেই করছে কংগ্রেস। এর সঙ্গে মঙ্গলবার যুক্ত হয়েছিল আরেকটি দাবি। অবিলম্বে লোকসভায় হিংসা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। এই দাবি পুরোপুরি মানতে চায়নি সরকারপক্ষ। স্পিকার ওম বিড়লা জানিয়ে দেন, সরকার আলোচনা চায়, কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে দিল্লির হিংসা নিয়ে আলোচনা ঠিক হবে না। হোলি বা দোলের পরেই তা হওয়া ভাল। আগামী ১০ মার্চ হোলি। তারপরে এই আলোচনার সিদ্ধান্ত  বিরোধীরা মানতে চাননি। কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি, বিএসপি, এনসিপি সহ সব বিরোধী দলের সাংসদরা ওয়েলে নেমে আসেন। তৃমমূল সাংসদরা অবশ্য ওয়েলে নামেননি। তাঁরা নিজেদের জায়গায় দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন।

এই সময় স্পিকার ওম বিড়লা ব্যাঙ্কিং রেগুলেশন বিল পাস করাতে উদ্যোগী হন। তখন লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরী নিজের আসন ছেড়ে দিয়ে সোজা হাজির হয়ে যান প্রধানমন্ত্রী যেখানে বসেন তার সামনে, স্পিকারের আসনের ডান দিকে। ভারতে লোকসভা ও রাজ্যসভা কক্ষ হল প্রায় গোলাকার। স্পিকার যেখানে বসেন, তার ডানদিকে বসেন সরকারপক্ষ, বাঁদিকে বিরোধীরা। সামনে সচিবালয়ের কর্মীদের জন্য একটু জায়গা বরাদ্দ। তারপর সাংসদদের চলাচলের জন্য অর্ধচন্দ্রাকার জায়গাকে বলে ওয়েল। এ দিন সকালেই স্পিকার সর্বদলীয় বৈঠকের পর রায় দিয়েছিলেন, বিরোধীরা সরকারপক্ষের দিকে আসবেন না। সরকারপক্ষ বিরোধীদের দিকে যাবে না। কেউ এলে তাঁকে সাসপেন্ড করা হবে।

বিরোধী সাংসদরা নিজেদের দিকেই ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। দিল্লি দাঙ্গা নিয়ে আলোচনা না করে বিল পাস করানো হচ্ছে দেখে প্রবল উত্তেজিত হয়ে অধীর উল্টোদিকে চলে যান। তাঁকে থামাবার জন্য নেমে আসেন পশ্চিমবঙ্গ থেকে নির্বাচিত বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। বাধা অতিক্রম করে স্পিকারের পাশে পৌঁছে গিয়ে অধীর জানতে চান, কেন বিল পাস করা হচ্ছে? কেন আলোচনা হচ্ছে না? এরপরই শুরু হয় গোলমাল। বিজেপির সাংসদরা নেমে আসেন ওয়েলে। বিরোধীরাও চলে আসেন। শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। কিছু মন্ত্রীকেও দেখা য়ায় উত্তেজিত তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়তে। সব মিলিয়ে আবার সেই চূড়ান্ত উত্তেজনাকর পরিস্থিতি।  স্পিকার তখন অধিবেশন এ দিনের মতো মুলতুবি করে দেন।

বিরোধীদের দাবি, দিল্লিতে যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে, তাতে অবিলম্বে আলোচনা হওয়া দরকার। তাঁরা আক্রান্তদের কথা তুলে ধরতে চান, যাঁরা এখনও গৃহহীন। তাঁরা সেই সব মানুষের কথা তুলে ধরতে চান, যাঁরা সর্বস্ব খুইয়েছেন। সেই সঙ্গে যারা এই দাঙ্গা করেছে, তাদের শাস্তি দেওয়ার জন্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চান। অমিত শাহের ইস্তফার দাবিতে এ দিনও সোচ্চার ছিলেন তাঁরা।

কিন্তু সরকার চাইছে, উত্তেজনা আরও কম হোক। পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হোক। আর এখানেই বিরোধীদের সঙ্গে সরকারের সংঘাত দেখা দিচ্ছে। লোকসভার অন্দরেও তৈরি হচ্ছে অপ্রীতিকর দৃশ্য। দিল্লির হিংসা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে না। দুই পক্ষ তাঁদের মতে অনড় থাকলে হোলির আগে তা হওয়ার সম্ভাবনা কম। লোকসভা আরও উত্তাল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

জিএইচ/এসজি(পিটিআই,এএনআই)