1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দুর্নীতিমুক্ত দেশ চান মুক্তিযোদ্ধা অহিদুল

১৮ নভেম্বর ২০১১

চট্টগ্রামের মীরসরাই এলাকার মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ অহিদুল হক৷ নিজেকে তিনি মনে করেন, খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিনিধি৷ সেই হিসেবেই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ৷ স্বাধীন দেশে অনেক কিছুতেই সন্তুষ্ট তিনি৷

https://p.dw.com/p/13CYS
Bangladesch The Liberation War Museum Dhaka
ছবি: DW/M.M. Rahman

স্বাধীনতার বার্তা বহন

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান'এর আদর্শে উদ্দীপিত সৈনিক মোহাম্মদ অহিদুল হক৷ একাত্তরের সাতই মার্চ শেখ মুজিবের ভাষণ সম্পর্কে তিনি জেনেছিলেন মীরসরাইতে অবস্থান করেই৷ এরপর ছাব্বিশে মার্চ নিজের এলাকায় বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার খবর ছড়িয়ে দেন হক৷ সেদিন দুপুরেই অবশ্য মীরসরাইয়ের হানা দেয় পাকিস্তানি বাহিনী৷ হকরা প্রতিরোধের চেষ্টা করেন৷ তখন প্রাণ হারায় এক তরুণ৷

প্রয়োজন অস্ত্র, প্রশিক্ষণ

মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে অহিদুল হকদের কাছে অস্ত্র ছিল না, যুদ্ধের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ঘাটতিও তাদের ছিল৷ তাসত্ত্বেও লাঠিসোটা নিয়ে পাক হানাদারদের প্রতিরোধের চেষ্টা করেন তারা৷   কিন্তু সেই চেষ্টা খুব একটা স্থায়ী হয়নি৷ খুব সহজেই মীরসরাই দখল করে নেয় হানাদাররা৷ অহিদুল হকরা তখন আশ্রয় নেন রামগড়ে, সেখান থেকে তারা ভারতে চলে যান গেরিলা প্রশিক্ষণের জন্য৷

Unabhängikeitsfeier in Bangladesh
ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে বাংলাদেশের এক খুঁদে নাগরিকছবি: AP

দেশে ফেরা

জুন মাসে দেশে ফেরেন অহিদুল৷ সুযোগ বুঝে দখলদার হানাদার বাহিনীর উপর হামলা চালাতে থাকেন তারা৷ গেরিলা যোদ্ধা হয়েও সরাসরি শত্রুসেনার মোকাবিলা করতে পিছপা হননি মুক্তি সেনারা৷ একাত্তরের এরকমই এক যুদ্ধের কথা জানালেন অহিদুল৷ তিনি বলেন, ‘‘মিঠাছড়া এলাকায় একবার আমরা অবস্থান নিয়েছি৷ সেখানে পাঞ্জাবিরা এসেছিল ট্রাকে করে৷ আমাদের উদ্দেশ্য ছিল ট্রাকটা উড়িয়ে দেওয়া৷ এজন্য রাস্তায় ‘অ্যান্টি ট্যাংক মাইন'ও পোতা হয়৷ আমাদের অন্য কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা সেসময় পাঞ্জাবিদের ট্রাকের তেলের ট্যাংকিতে বালু ঢুকিয়ে দেয়৷ ফলে ট্রাকটি তখন তারা নিতে পারেনি৷ পরবর্তীতে ক্রেন নিয়ে ট্রাক উদ্ধার করতে আসে পাক বাহিনী৷ কিন্তু সেই ক্রেন আমাদের পোতা মাইনের বিস্ফোরণে উড়ে যায়৷ বেশ কয়েকজন শত্রু সেনা তখন প্রাণ হারায়''৷ 

Sheikh Mujibur Rahman Flash-Galerie
৩০শে মার্চের সেই বিখ্যাত ভাষণ দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধু...ছবি: bdnews24

তিন হাজার যোদ্ধা

অহিদুল জানান, একাত্তরে শুধু মীরসরাইয়ে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল তিন হাজারের মত৷ এদের মধ্যে কয়েকজন যুদ্ধে প্রাণ হারায়৷ তাদের অক্লান্ত চেষ্টায় চূড়ান্ত বিজয়ের আগেই শত্রুমুক্ত হয় মীরসরাই৷ তিনি বলেন, কেউ বলে ডিসেম্বরের আট তারিখই মীরসরাই শত্রুমুক্ত হয়েছে৷ কিন্তু আমরা যতটা মনে পড়ে ১৪ ডিসেম্বর আমাদের এলাকা শত্রুমুক্ত হয়৷

‘বৈষম দূর হয়নি'

বর্তমানে অহিদুল হক এর বয়স ৬৪ বছর৷ একাত্তরে স্বাধীনতা যুদ্ধের পর কলেজে ফিরে যান তিনি৷ পরবর্তীতে জাসদের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন এই যোদ্ধা৷ নিজেকে তিনি মনে করেন কৃষক, মজুর, খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিনিধি৷ স্বাধীনতার চল্লিশ বছর সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বললেন, ‘‘আমি মনে করি মুক্তিযোদ্ধাদের নব্বই শতাংশই ছিলেন কৃষক, মজুরের সন্তানেরা৷ তাদের আকাঙ্খা ছিল, এই দেশ স্বাধীন হলে তারা সুখে শান্তিতে খেয়ে পরে বাঁচবে৷ অন্ততপক্ষে সমাজ ব্যবস্থায় যে শোষণ এবং অত্যাচার এগুলো থেকে রেহাই পাবে৷ কিন্তু আজকে চল্লিশ বছরেও বৈষম্য, বিশেষ করে অর্থনৈতিক বৈষম্য থেকে আমরা মোটেও উতরে উঠতে পারি নাই''৷

বর্তমান সরকারের কাছে একটি দাবি আছে এই বীরযোদ্ধার৷ দুর্নীতিমুক্ত একটি দেশ পেতে চান অহিদুল৷

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান