1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গবেষণার সুফল দ্রুত প্রয়োগ করার উদ্যোগ

২৭ অক্টোবর ২০২০

দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বিজ্ঞানী, গবেষক ও ডাক্তারদের নিবিড় সহযোগিতা জরুরি বলে সুইজারল্যান্ডের এক বিশেষজ্ঞ মনে করেন৷ সেইসঙ্গে ক্যানসার নিরাময়ের লক্ষ্য পূরণের মতো এ ক্ষেত্রেও যথেষ্ট বিনিয়োগেরও প্রয়োজন৷

https://p.dw.com/p/3kTid
ছবি: picture-alliance/N. Hochheimer

বাসেল শহরের গবেষণা কেন্দ্র একাধিক ক্ষেত্রের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটাতে চাইছে৷ বোটন্ড রস্কা ল্যাবে মলিকিউলার বায়োলজি গবেষণা বিভাগের প্রধান৷ তাঁর সহকর্মী হেন্ডরিক শল হাসপাতালে ডাক্তারদের এক টিমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং রোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন৷ তাঁরা সবাই মিলে টিম হিসেবেই কাজ করছেন৷ রস্কা বলেন, ‘‘অতীতে দুই ক্ষেত্র পরস্পরের থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল৷ ডাক্তাররা নিজেদের কাজ করতেন৷ তাঁরা রোগের খবর দিতেন৷ মৌলিক বিজ্ঞানীরা নিজেদের প্রতিষ্ঠানে কোনো নির্দিষ্ট সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করতেন৷ কিন্তু তাঁরা আসল সমস্যা সম্পর্কে মোটেই সচেতন ছিলেন না৷ ফলে মৌলিক বিজ্ঞানে প্রায়ই অসাধারণ প্রযুক্তি দেখা গেলেও আমরা আসল সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি না৷’’

রস্কার টিম সেই পরিস্থিতি বদলাতে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে৷ তাঁরা অন্ধ রেটিনা কোষে সফলভাবে লাইট-সেন্সিটিভ প্রোটিন চ্যানেল বসিয়েছেন৷ ব্যাকটেরিয়াল জিনের মধ্যে সেটি উৎপাদন করা হয়েছে৷ এখন আলো পড়লে সেই কোষ প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে৷

গবেষকদের হাতিয়ার হলো তথাকথিত ‘ভেক্টর’৷ ক্ষুদ্র এই শাটল যান জিনের তথ্য সুনির্দিষ্ট কোষে পৌঁছে দেয়৷ প্রথমে অরগ্যানয়েডের মধ্যে, তারপর সরাসরি রোগীর রেটিনার মধ্যে তা চলে যায়৷ বোটন্ড রস্কা বলেন, ‘‘আমরা শুধু জিন নিয়ে সেটি জিন থেরাপি ভেক্টরের মধ্যে পুরো দেই৷ জিন থেরাপি ভেক্টর প্রোটিন কোষের মধ্যে চালান করা হয়৷ তারপর আমরা ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে চোখের মধ্যে সেটি প্রবেশ করাই৷ এটা অন্য যে কোনো ওষুধের মতোই সহজ এক ইঞ্জেকশন৷’’

অন্ধত্ব নিরাময়ে জিন থেরাপি?

অরগ্যানয়েডের উপর পরীক্ষা অনেকটা ল্যাবের পেট্রি ডিশের মতো মনে হলেও সেটি জিন থেরাপির সাহায্যে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনার স্বপ্ন পূরণ করার পথে উল্লেখযোগ্য মাইলফলক বটে৷ ল্যাবে যা পুরোপুরি সফল হয়েছে, রোগীদের উপর ক্লিনিকাল পরীক্ষায়ও তা কার্যকর হতে হবে৷

পাঁচ জন মানুষের উপর জিন থেরাপি প্রয়োগ করে তাঁদের রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা রোগ নিরাময়ের চেষ্টা শুরু হয়েছে৷ ফলাফল এখনো জানা না গেলেও গবেষকদের ধারণা, কোনো এক দিন অনেক ক্ষেত্রে অন্ধত্ব দূর করা যাবে৷ বোটন্ড রস্কা বলেন, ‘‘দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনার উপায় আমরা জানি৷ আমাদের কাছে সেই প্রযুক্তি রয়েছে৷ শুধু খুঁটিনাটি তথ্যের অভাব রয়েছে৷ সেইসঙ্গে উপযুক্ত কর্মী ও সমাজের বিনিয়োগের অভাবও দেখা যাচ্ছে৷ যেমন ক্যানসার জয় করতে অনেক বিনিয়োগ হচ্ছে, সেভাবে অন্ধত্ব দূর করতেও বেসরকারি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিকে অনেক বিনিয়োগ করতে হবে৷’’

বোটন্ড রস্কা অনেক মানুষের জন্য আশার আলো নিয়ে আসছেন৷ সংগীতের মতো সাফল্য পেতে হলে বিজ্ঞানকেও নানা প্রতিভার মধ্যে সহযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে বলে তাঁর বিশ্বাস৷ রস্কার মতে, ‘‘শিল্প বা সংগীতের ক্ষেত্রে একজন পরিচালক থাকেন, যিনি খুঁটিনাটি বিষয়গুলি নিয়ে মাথা ঘামান৷ শিল্পী দর্শকদের জন্য পরিবেশন করেন৷ বায়োমেডিসিনের ক্ষেত্রে মৌলিক বিজ্ঞানীরা নতুন চিকিৎসা প্রস্তুত করছেন, উদ্ভাবন করছেন৷ ক্লিনিকের ডাক্তাররা তারপর সেই চিকিৎসা সাধারণ মানুষ, অর্থাৎ রোগীদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন৷’’

কাজ এখনো শেষ হয় নি বটে, কিন্তু বোটন্ড রস্কা ও তাঁর টিম এরই মধ্যে যথেষ্ট সাফল্য পেয়েছেন৷ তাঁরা সেই কাজ চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর৷ ফলে ভবিষ্যতেও বাসেল শহরের এই বিজ্ঞানীদের কাজের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে বৈকি!

ফ্লোরিয়ান ফাই/এসবি