1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নতুন রেকর্ড আওয়ামী লীগের

৩১ ডিসেম্বর ২০১৮

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ৷ নতুন রেকর্ড গড়ে এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা৷

https://p.dw.com/p/3AoAt
ছবি: Reuters/S. Sangstha

একাদশ সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন ২৯৮টি আসনের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেছে। ২৫৯টি আসনে জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ৷ সবমিলিয়ে মাত্র ৭টি আসনে জয় পেয়েছে ধানের শীষের প্রার্থীরা; তাদের চেয়ে বেশি আসন পেয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের অন্যতম অংশীদার জাতীয় পার্টি ২০টি৷

লাঙ্গল প্রতীকে জয়ী ২০টি আসন নিয়ে দৃশ্যত আবারও সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসতে যাচ্ছে এইচ এম এরশাদের দল৷ এবার ঘোষিত ২৯৮টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ এককভাবে পেয়েছে ২৫৯টি আসন, আর মহাজোটগতভাবে তাদের আসন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮৮টি৷

১৪ দলীয় জোটের দলগুলোর মধ্যে জাসদ ২টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ৩টি, বিকল্প ধারা ২টি, তরীকত ফেডারেশন ১টি আসনে জিতেছে৷ এর বাইরে আওয়ামী লীগের মিত্র দল জাতীয় পার্টি (জেপি) বাইসাইকেল প্রতীকে একটি আসনে জিতেছে৷

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলছেন, ভোট নিয়ে তিনি তৃপ্ত-সন্তুষ্ট৷ ভোটে কোনো অনিয়ম হয়নি৷ ভোটে তাঁরা লজ্জিত নন৷ একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে৷ নির্বাচন কমিশনার বলেন, এবারের নির্বাচনে ৮০ শতাংশের মতো লোক ভোট পড়েছে৷ অনিয়মের কারণে ১৬টি কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করা হয়েছে৷ ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২ আসনের ফল স্থগিত রাখা হয়েছে৷

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে বিএনপি ৫টি আসনে জিতেছে, গণফোরাম দুটি আসতে জিতেছে৷ তিনটি আসনে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা; তাদের দুজন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী, আরেকজন খালেদা জিয়ার আসনে বিএনপির সমর্থন পেয়েছিলেন৷

ভোটের হার কত, সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি ইসি; তবে ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, এটা ৮০ শতাংশের কাছাকাছি হবে৷

দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে সংসদের বাইরে থাকা বিএনপি এবার ভোটে অংশ নিলেও সংসদে প্রধান বিরোধী দলের আসনেও ফিরতে পারছে না৷ ভোটের ফল প্রত্যাখ্যান করার ঘোষণা দেওয়া বিএনপি যারা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের শপথ না নেওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে দলটির নেতাদের কথায়৷ সেক্ষেত্রে ওই আসনগুলোতে উপনির্বাচনের সম্ভাবনা থেকেই যায়৷

বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই ফল প্রত্যাখ্যান করে পুনঃনির্বাচনের দাবি তুলেছে৷ এ নির্বাচন জাতিকে ভবিষ্যতে ‘সমস্যায় ফেলবে' বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর৷ তিনি বলেছেন, ‘‘অনেকে মনে করে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে না যাওয়াটা ভুল ছিল, আজকের নির্বাচন প্রমাণ করল যে, সেটা ভুল ছিল না৷''

৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ের এই নির্বাচনে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতায় অন্তত ১৭ জনের মৃত্যু এবং বিরোধী জোটের ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগের মধ্যে দিনভর ভোটগ্রহণ চলে৷ ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীর মৃত্যুতে গাইবান্ধা-৩ আসনের ভোট আগেই স্থগিত হয়েছিল৷ তিনটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের ফল স্থগিত করা হয়েছে রোববার৷ ওই কেন্দ্রগুলোতে নতুন করে ভোট হওয়ার পর ফল ঘোষণা হবে বলে ইসি জানিয়েছে৷

বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে এর চেয়ে বেশি সংখ্যক আসন নিয়ে সরকার গঠন করেছিলেন একমাত্র বঙ্গবন্ধু; ১৯৭৩ সালের প্রথম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৯৩টি আসনে জয় পেয়েছিল৷

বিরোধী দলবিহীন ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিতর্কিত ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ২৭৮ আসনে জিতেছিল৷ এরশাদ আমলে ১৯৮৮ সালের চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ২৫১টি আসন পেয়েছিল৷ ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ২৩৪টি আসন৷

তবে ওই তিনটি নির্বাচনের কোনোটিতেই সব দলের অংশগ্রহণ ছিল না৷ এবার সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনে ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনের চেয়েও বেশি আসন পেয়েছে আওয়ামী লীগ৷

এপিবি (সূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)