1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নিরাপত্তা পরিষদে ব্যর্থ রাশিয়া

১৫ এপ্রিল ২০১৮

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি সভায় সুবিধা করতে পারেনি রাশিয়া৷ সিরিয়ায় মার্কিন নেতৃত্বে মিসাইল হামলার নিন্দা প্রস্তাব পাশও হয়নি৷ তবে যুক্তরাষ্ট্র ও গ্রিসে হামলার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন হাজারো মানুষ৷

https://p.dw.com/p/2w4Vq
নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকছবি: Reuters/E. Munoz

সিরিয়ায় মার্কিন নেতৃত্বে ফান্স ও যুক্তরাজ্যের ক্রুজ মিসাইল হামলার পর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের ডাক দিয়েছিল রাশিয়া৷ শনিবারের নিউ ইয়র্কে সংস্থাটির সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিত ঐ বৈঠকে হামলার ঘটনায় একটি নিন্দা প্রস্তাব পাশের আহ্বান জানিয়েছিল তারা৷

সমর্থন পায়নি রাশিয়া
নিরাপত্তা পরিষদের সভায় রাশিয়ার বক্তব্য ছিল যে, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা সিরিয়ায় হামলা চালিয়ে আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করেছে৷ তাই এই হামলার নিন্দা জানিয়ে অচিরেই সিরিয়ায় তাদের আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে৷
কিন্তু তাদের সেই প্রস্তাব পাশ করেনি নিরাপত্তা পরিষদ৷ কারণ, পরিষদের ১৫ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে শুধুমাত্র চীন ও বলিভিয়া তাদের সমর্থন দিয়েছে৷ বাকি ১২টি রাষ্ট্রের মধ্যে আটটি তাদের প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে৷ আর চারটি রাষ্ট্র কোনো প্রকার ভোট দেয়া থেকে বিরত থেকেছে৷

পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের অভিযোগ হলো, গত সপ্তাহে সিরিয়ার পূর্ব গুটায় বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত সর্বশেষ শহর ডুমায় ‘রাসায়নিক হামলা' চালিয়েছে বাশার আল-আসাদের বাহিনী৷ তাই দেশটির সরকার নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন স্থাপনায় একযোগে আক্রমণ করেছে তারা৷ তাদের দাবি, যেসব স্থানে এ সব রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি বা মজুদ করা হয় সেখানেই হামলা চালানো হয়েছে৷
অন্যদিকে, আসাদ সরকারের মিত্র রাশিয়া আঙুল তুলেছে যুক্তরাজ্যের দিকে৷ তাদের দাবি, গত সপ্তাহে সিরিয়ায় যে রাসায়নিক হামলা হয়েছে তা মঞ্চায়িত করেছে এই দেশটি৷ তারা রাসায়নিক হামলার তদন্ত করছিল৷

Syrien Angriffe auf Ost-Ghuta
মিসাইলের অবশিষ্টছবি: Reuters/B. Khabieh

কিন্তু রাশিয়া ও সিরিয়ার দাবি কোনোভাবেই ধোপে টেকেনি৷ ন্যাটোর ২৯ সদস্যরাষ্ট্রের প্রত্যেকেই এই মিসাইল হামলার সমর্থন করেছে৷
হামলাকারী তিন দেশেরই দাবি, সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র কারখানাগুলো ধ্বংস করতে যে হামলা তারা করেছে, তা সফল হয়েছে৷ শিগগিরই তারা জাতিংঘে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেবে৷

দ্বিধাবিভক্ত বিশ্ব
এদিকে, সিরিয়ায় মিসাইল হামলা নিয়ে গোটা বিশ্বে দেখা দিয়েছে দ্বিধাবিভক্তি৷ অনেক রাষ্ট্র ও সংস্থা সরাসরি সিরিয়ায় রাষ্ট্রত্রয়ীর মিসাইল হামলাকে সরাসরি সমর্থন করেছে৷ অনেকে আবার পরোক্ষভাবে সমর্থন করতে গিয়ে এক সপ্তাহ আগের রাসায়নিক হামলার সমালোচনা করেছে৷
রাশিয়া ছাড়া এই হামলার নিন্দা করেছে ইরান, চীন ও ইরাক৷
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, ‘‘সিরিয়ায় হামলাটি একটি অপরাধ৷'' হামলাকারী তিন দেশের প্রেসিডেন্টকে ‘অপরাধী' হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘‘এর থেকে কিছুই হাসিল করতে পারবে না তারা৷''
চীন অবশ্য একটু সতর্কতার সঙ্গেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে৷ তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘‘আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে জোর খাটানোর বিরোধিতা সব সময়ই করে আসছে চীন৷ আমরা মনে করি, সিরিয়ার সমস্যা একমাত্র রাজনৈতিকভাবেই সমাধান সম্ভব৷''
ইরাক সতর্ক করে দিয়ে বলেছে যে, এমন একটি হামলার পরিণতি ‘ভয়াবহ' হতে পারে৷ এটি নতুন করে এ অঞ্চলে জঙ্গিবাদকে উসকে দিতে পারে৷
অনেক রাষ্ট্রই সমর্থন দিয়েছে এ হামলাকে৷ বিশেষ করে জার্মানিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ক্যানাডা সমর্থন দিয়েছে৷ তবে জার্মানি ও ক্যানাডা এ হামলায় অংশ নেবে না বলে আগেই জানিয়েছে৷
জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও ক্যানাডা প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ট্রুডো উভয়ই এই হামলাটি ‘জরুরি ছিল' বলে মন্তব্য করেছেন৷
এদিকে, তুরস্ক ও ইসরাইলও সমর্থন দিয়েছে এই হামলাকে৷ তারা রাসায়নিক হামলার বিষয়টি তুলে ধরে বলেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃ্ত্বে এই হামলার দরকার ছিল৷ আর জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রাসায়নিক হামলার নিন্দা করলেও সব পক্ষকে ‘শান্ত' থাকার আহ্বান জানিয়েছেন৷

গ্রিস ও যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবাদ
হাজারো গ্রিক নাগরিক রাজধানী এথেন্সে সিরিয়ায় হামলার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন৷ দেশটির কমিউনিস্ট পার্টির উদ্যোগে এই সমাবেশ থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়৷
শনিবার তারা শহরের কেন্দ্রে জড়ো হয়ে পরে মার্কিন দূতাবাসের দিকে এগিয়ে যান৷ এ সময় তাদের হাতে, ব্যানারে নানা ধরনের প্রতিবাদী বক্তব্য লেখা ছিল৷ অনেকেই দেয়ালে, ফুটপাথে লাল কালিতে লেখেন, ‘অ্যামেরিকানরা খুনি'৷

Demonstration in Nantes Frankreich
লস অ্যাঞ্জেলসেও প্রতিবাদছবি: picture-alliance/AP Photo/D. Dovarganes

পুলিশের বাধায় অবশ্য বিক্ষোভকারীরা মার্কিন দূতাবাসের দিকে যেতে পারেননি৷
একই রকমের প্রতিবাদ হয়েছে ওয়াশিংটনেও৷ হোয়াইট হাউজের সামনে নানান প্ল্যাকার্ড নিয়ে জড়ো হন বিপুল সংখ্যক প্রতিবাদকারী৷ তারা হামলার প্রতিবাদ জানান এবং সিরিয়ায় আগ্রাসন বন্ধের দাবি জানান৷

জেডএ/ডিজি (এপি, এএফপি)

সিরিয়ায় হামলা কী আপনি সমর্থন করেন? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷