1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘নির্বাচন কমিশন আঁতাতে লিপ্ত’

রাহাত রাফি
২৭ ডিসেম্বর ২০১৯

নির্বাচন কমিশনের জনগনের আস্থা নেই বলে মন্তব্য করেছেন  সুশানের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার৷ বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠ নির্বাচন সম্ভব নয় বলেও ডয়চে ভেলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেন তিনি৷

https://p.dw.com/p/3VOQQ
Bangladesch Badiul Alam Majumdar, von Shushasoner Jonno Nagorik
ছবি: privat

ডয়চে ভেলে: ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কী? সুষ্ঠ নির্বাচন হওয়ার মতো পরিস্থিতি বিদ্যমান আছে কিনা?

বদিউল আলম মজুমদার: এ নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগের কারণ রয়েছে৷ কেননা, এ নির্বাচন কমিশনের নিরেপক্ষতা নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন রয়েছে৷  গত জাতীয় নির্বাচনে তারা নিজেদের বিতর্কের উর্ধ্বে রাখতে পারেনি, অনেক কারসাজির আশ্রয় নিয়েছে ৷ বস্তুত জাতীয় নির্বাচনে যা হয়েছে তা মূলত এক ধরনের অশুভ আঁতাত৷ নির্বাচন কমিশন, এক শ্রেণীর সরকারী কর্মকর্তা, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী  ও সরকারি দলের সাথে যুক্ত ব্যক্তিরা মিলে এ আঁতাত তৈরি করেছিল৷ যে কারণে এই নির্বাচনের কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে জনমনে ব্যপক সন্দেহ রয়েছে৷ তাদের কাছ থেকে একটি সুষ্ঠ নির্বাচনের আশা করা দুরাশা ছাড়া আর কিছুই না৷

সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহার করা হবে বলে জানানো হয়েছে৷  এ বিষয়টিকে কীভাবে দেখেন?

ইভিএম একটি বড় অংশের ভোটরদের ভোট প্রদান থেকে বঞ্চিত করছে৷  আমরা যদি গত জাতীয় নির্বাচনের দিকে তাকাই, তাহলে দেখা যায় ২৯৪ টি কেন্দ্রে সাধারণ ব্যলট আর বাকীগুলোতে ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছে৷ ইভিএমে ভোট পড়েছে ৫১ দশমিক ৪২ শতাংশ আর পেপার ব্যালটে ৮০ দশমিক ৮০৷ তাহলে ৩০ শতাংশের ফারাক কেন৷ সেক্ষেত্রে বলা যেতে পারে ৩০ শতাংশ মানুষ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে৷ হয় ইভিএমের ত্রুটি অথবা জটিলতা, কিংবা ইভিএমের প্রতি মানুষের অনীহা থেকেই ৩০ শতাংশ মানুষ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে৷৷ এ দায়ভার কে নেবে? এ পদ্ধতির যৌক্তিকতা কোথায়? সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইভিএম-এর ব্যবহার তাই একটি মস্ত বড় ভুল হবে৷ কেননা ভোটররা যদি ভোট দিতে না পারেন, আপনার পদ্ধতি যদি ভোটরদের মাঝে অনীহা তৈরি করা, তাহলে সেটি কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য কোন ব্যবস্থা নয়৷

বিএনপি একদিকে সরকারকে অবৈধ বলছে, নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করছে আবার এই সরকার ও একই নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে৷  বিএনপির এ অবস্থাকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন?

রাজনৈতিকভাবে বিএনপির নেতৃত্ব ব্যর্থ হয়েছে, তারা অনেক দুর্বল অবস্থানে চলে এসেছে৷  যদিও তাদের অনেক জনসমর্থন আছে বলে অনেকে মনে করে৷  তবে নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণের বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখতে হবে৷ একটি রাজনৈতিক দল যদি ক্ষমতায় আসতে চায় তাহলে তাকে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে৷ এদিকে তারা যদি নির্বাচনে না যায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীনেরা যে সকল অভিযোগ করছে, সে অভিযোগলো আরো  শক্তিশালী হবে৷৷ আমার মনে হয় না নির্বাচনে যাওয়া ছাড়া তাদের আর কোন উপায় আছে৷  তবে বিএনপি রাজপথে সরব হতে না পারার কারণ হলো যে, রাজপথ যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ও সরকারি দলের অংগসংগঠনের দখলে থাকে তাহলে সেখানে সরব হওয়া অসম্ভব৷

গত জাতীয় নির্বাচন ও পরবর্তী সময়ের স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচনগুলোতে ভোটরদের উপস্থিতি কম ছিল ৷ সিটি কর্পোরেশনের এ  নির্বাচনটিকে ভোটারদের দৃষ্টিকোণ থেকে কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?

ভোটারদের কম উপস্থিতির কারণ অনেক৷ যেমন অনেকের ধারণা আমি ভোট দিলেও কিছুই যায় আসে না৷ আবার অনেকে ভাবছেন আমি ভোট দিতে গেলে ভোট দিতে যে পারবো তার নিশ্চয়তা নেই৷ নির্বাচন বিষয়ে মানুষের মধ্যে ব্যপক অনাস্থা ও অনীহা সৃষ্টি হয়েছে৷  যা আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ভেঙ্গে ফেলেছে৷ এটি একটি অশনি সংকেত, কারণ নির্বাচনই একমাত্র সুষ্ঠ, শান্তিপূর্ণ ও নিয়মকান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা বদলের পন্থা৷  এটি বিলুপ্ত হয়ে গেলে তা কারো জন্যই মঙ্গল বয়ে আনবে না৷

আপনি বলছে নির্বাচন কমিশন ‘আঁতাত‘ করছে তাই নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে৷ কিন্তু আসছে নির্বাচন নিয়ে তো নাগরিক সমাজকে সরব হতে দেখা যাচ্ছে না৷ এটি কেন হচ্ছে?

সিভিল সোসাইটিকে ধ্বংস করে দিয়েছে৷ দুয়েকজন ছাড়া সিভিল সোসাইটির অধিকাংশই অনুগত ও সুবিধাপ্রাপ্ত৷ দুর্ভাগ্যবশত দুয়েকটি গণমাধ্যম ছাড়া কেউ দায়িত্বও পালন করছে না৷ সেলফসেন্সরশিপ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে৷

এ অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ কী বলে আপনি মনে করেন?

এ নির্বাচন কমিশন আমাদের মহা অনিষ্ট করে ফেলেছে৷ তাদের স্বউদ্যোগে পদত্যাগ করা উচিত৷  তা না হলে  সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন করে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা উচিত৷  বর্তমানে যে সমস্যা চলছে তার সমাধান আমাদের নিজেদেরই খুঁজে বের করতে হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য