1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘নির্বাচনে অংশ নিলেও বিরোধীদের জয় নিষিদ্ধ'

৭ মে ২০১৯

তুরস্কের ইস্তানবুল শহরে নতুন করে পৌর নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিলো নির্বাচন কর্তৃপক্ষ৷ এই পদক্ষেপকে প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ানের স্বৈরাচারী মনোভাবের প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন দেশ-বিদেশের সমালোচকরা৷

https://p.dw.com/p/3I3P5
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ান
ছবি: picture alliance/AP Photo/Presidential Press

নির্বাচনের ফলাফল পছন্দ না হলে শাসক দল যদি সর্বশক্তি প্রয়োগ করে নতুন করে নির্বাচনের দাবি আদায় করে ছাড়ে, গণতন্ত্রের জন্য তা কল্যাণকর হতে পারে না৷ তুরস্কের নির্বাচন কর্তৃপক্ষ গত ৩১শে মার্চ ইস্তানবুল শহরে সাম্প্রতিক পৌর নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করায় দেশে-বিদেশে এমনই সমালোচনার ঝড় উঠেছে৷ তুরস্কের বিরোধী দল সিএইচপি-র এক নেতা বলেছেন, ‘‘শাসক একেপি দলের বিরুদ্ধে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অনুমতি রয়েছে, কিন্তু জয় নিষিদ্ধ৷ এটা হলো খোলামেলা একনায়কতন্ত্র৷''

দেশজুড়ে একাধিক পৌর নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ানের একেপি দল, বিশেষ করে বড় শহরগুলিতে তেমন ভালো করতে পারেনি৷ রাজধানী আংকারাও দলের হাতছাড়া হয়ে যায়৷ কিন্তু নিজের ইস্তানবুল শহরে পরাজয়ের গ্লানি মেনে নিতে পারেননি এর্দোয়ান৷ ১৯৯৪ সালে তিনি শহরের মেয়র হিসেবে জয়যাত্রা শুরু করেছিলেন৷ তিনি একবার বলেছিলেন, ‘‘ইস্তানবুল হারালে আমরা তুরস্কও হারাবো৷'' গত ২৫ বছরে এই প্রথম এই দুই শহরের উপর একেপি দলের নিয়ন্ত্রণ রইলো না৷ শাসক দলের চাপেই শহরে আগামী ২৩শে জুন নতুন করে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বলে বিরোধীরা অভিযোগ করছে৷

তুরস্কের সুপ্রিম ইলেক্টোরাল কাউন্সিল, অর্থাৎ সর্বোচ্চ নির্বাচন কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপীল করার কোনো সুযোগ নেই৷ কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাদি গুভেন এই সিদ্ধান্তের কোনো ব্যাখ্যা করেননি৷ ফলে বিরোধীরা বাধ্য হয়ে নতুন নির্বাচনের প্রস্তুতির প্রতি মনোযোগ দিচ্ছে৷ প্রধান বিরোধী দল সিএইচপি-র সদ্য নির্বাচিত মেয়র একরেম ইমামোলু নির্বাচন কর্তৃপক্ষের কড়া সমালোচনা করে সব শহরবাসীর কাছে তাঁদের ভোট চেয়েছেন৷ উল্লেখ্য, গত ১৭ই এপ্রিল নির্বাচন কর্তৃপক্ষ তাঁকে মেয়র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল৷ ক্ষুব্ধ সমর্থকদের সামনে তিনি বলেন, ‘‘লক্ষ লক্ষ মানুষের ঘামের দৌলতে আমরা জয়ের মুখ দেখেছিলাম৷'' শহরের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষ বাসন বাজিয়ে পুনর্নির্বাচনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান৷

প্রায় এক কোটি ষাট লক্ষ জনসংখ্যার শহর ইস্তানবুলে তুরস্কের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভোটার বসবাস করেন৷ ফলে শাসক একেপি দলের কাছে এই শহরের বাড়তি গুরুত্ব রয়েছে৷ নির্বাচন কর্তৃপক্ষের উপর চাপ সৃষ্টি করে পুনর্নির্বাচনের সিদ্ধান্ত আদায় করেও অস্বস্তি কাটাতে পারছেন না এর্দোয়ান৷ তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্যও করেননি৷ এতকাল তাঁর স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে সমালোচনার জবাব হিসেবে তিনি নির্বাচনি জয়কে হাতিয়ার করে এসেছেন৷ ইস্তানবুল শহরে নতুন করে নির্বাচন আয়োজন করেও যদি জয় আবার হাতছাড়া হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে তাঁর মানসম্মান হুমকির মুখে পড়বে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন৷

আন্তর্জাতিক মঞ্চেও ইস্তানবুলে পুনর্নির্বাচনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনা শোনা যাচ্ছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিশনর ফেডেরিকা মোগেরিনি এক বিবৃতিতে বলেন, অত্যন্ত রাজনৈতিক এক প্রেক্ষাপটে নেওয়া এই সিদ্ধান্তের সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে৷ অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত যাচাই করার সুযোগ দেওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন৷

এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি)