1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরিবেশ দূষণ মোকাবিলায় উদ্যোগ

২১ নভেম্বর ২০১৮

ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশ ডমিনিকান রিপাবলিকে দূষণ একটা বড় সমস্যা৷ এক ব্যক্তির উদ্যোগে সে দেশের সরকার জঞ্জাল রিসাইক্লিংয়ের পথে অগ্রসর হচ্ছে৷ সাধারণ মানুষও সেই উদ্যোগের সুফল টের পাচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/38a2p
Müllkippe in Tangerang, Indonesien Sugianto Tandio
ছবি: DW/M. Kasper-Claridge

সান ক্রিস্টোবাল শহরের নিগুয়া নদী সত্যি খুব সুন্দর হতে পারতো৷ কিন্তু নদীর তীর আবর্জনায় ভরা৷ মানুষ যেখানে পারে জঞ্জাল ফেলে৷ এমন পরিস্থিতি গণস্বাস্থ্যের জন্য বড় ঝুঁকি সৃষ্টি করছে৷ ডিওনিসিও ব্রিটো এ কারণে বেশ কিছুকাল ধরে ক্ষুব্ধ৷ তিনি সান ক্রিস্টোবাল শহরের দরিদ্র একটি পাড়ার স্থানীয় সমিতির সভাপতি৷ ডিওনিসিও বলেন, ‘‘এখানকার নদী জঞ্জালের কারণে মারাত্মকভাবে দুষিত হয়ে গেছে৷ ফলে গোটা এলাকার মানুষেরও ক্ষতি হচ্ছে৷ ইঁদুর, মাছি, মশা নানা রোগের জীবাণু বহন করছে৷ তাছাড়া অনেক শিশু জঞ্চালের মধ্যে হেঁটে বেড়ায়৷ সত্যি কথা বলতে কি, এসব দেখে আমার মনে খুব দুঃখ হয়৷''

তবে ডিওনিসিও ব্রিটো-র উদ্যোগে সেই পাড়ায় কিছু পরিবর্তন আসছে৷ তাঁর সঙ্গে স্থানীয় স্কুলে গেলে তার কিছুটা আন্দাজ পাওয়া যায়৷ সেই স্কুলকে সবাই ‘প্রকল্প' হিসেবেই জানে৷

এই উদ্যোগের ক্ষেত্রে শিক্ষা একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ৷ বিজ্ঞান শিক্ষক হুয়ান পাবলো ফাবিয়ান তাঁর ক্লাসে শিক্ষার্থীদের সামনে জঞ্জাল আলাদা করার গুরুত্ব তুলে ধরছেন৷ কারণ, সেটা না করলে গ্রিনহাউস গ্যাস সৃষ্টি হয়, জলবায়ুর জন্য যা ক্ষতিকর৷ বিজ্ঞান শিক্ষক হুয়ান পাবলো ফাবিয়ান বলেন, ‘‘কাঠের এই বাক্সে আমাদের অরগ্যানিক জঞ্জাল যাবে৷ বিশেষ কয়েক ধরনের পোকা ও ব্যাকটেরিয়ার কল্যাণে এই অরগ্যানিক জঞ্জালে পচন ধরে৷  সেটি ইঁদুর আকর্ষণ করে না৷ কোনো দুর্গন্ধ ছাড়াই ময়লা পচে যায়৷ ইঁদুররা তো দুর্গন্ধই পছন্দ করে৷''

দুপুরে বিরতির সময় সেই তত্ত্ব হাতেনাতে যাচাই করার সুযোগ পাওয়া যায়৷ মধ্যাহ্নভোজের পর স্কুলপড়ুয়ারা অবশিষ্ট খাবারের উপযুক্ত অংশ ক্যান্টিনের পেছনে সার তৈরির জায়গায় ফেলে দেয়৷ সেখানেই এই জঞ্জাল জমা হয়৷

জাতীয় স্তরেও এমন ব্যক্তিগত উদ্যোগের সার্থকতা রয়েছে৷ জার্মানির আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জিআইজেড ও একাধিক পরিবেশ সংগঠনের সহায়তায় রাজনৈতিক নেতা হিসেবে ফ্রানসিস্কো মাটোস গুরুত্বপূর্ণ আইনের একটি খসড়া সৃষ্টি করেছেন৷ অদূর ভবিষ্যতে সেটি সেনেটে অনুমোদন করা হবে বলে শোনা যাচ্ছে৷ এর আওতায় ভবিষ্যতে বেসরকারি কোম্পানিগুলিকে জাতীয় স্তরে এক রিসাইক্লিং প্রণালী গড়ে তুলতে সাহায্য করতে হবে৷ সেইসঙ্গে আবর্জনার সব খোলা বন্ধ করে দেওয়া হবে৷ রাজনৈতিক নেতা ফ্রানসিস্কো মাটোস বলেন, ‘‘এই আইনের মাধ্যমে সব বিষাক্ত এলাকা বিষমুক্ত করা হবে৷ একবার ভেবে দেখুন, কোনো দেশে ৩৫০টি কলুষিত আবর্জনার ডিপো রয়েছে, যার জন্য তারা নিজেরাই দায়ী৷ সেগুলি মেরামত করা কি সহজ কাজ? পুরানো ডিপো বন্ধ করতে আইন পাস হলে সরকার তা করতে বাধ্য হবে৷ সেটা হবে বিশাল অগ্রগতি ''

এখনো পর্যন্ত গোটা দেশে একটি মাত্র রিসাইক্লিং প্ল্যান্ট রয়েছে৷ ২০১৭ সালে সান্তিয়াগোতে সেটির উদ্বোধন হয়েছিল৷ সেখানে দৈনিক এক হাজার টনেরও বেশি আবর্জনা আসে৷ কোম্পানির সূত্র অনুযায়ী, তার মাত্র ১৫ শতাংশ পুনর্ব্যবহারের উপযোগী নয়৷ বাকিটা শিল্পের জ্বালানি বা কৃষিকাজের সারে রূপান্তরিত করা হয়, অথবা অন্যভাবে পুনর্ব্যবহার করা হয়৷

সান ক্রিস্টোবাল শহরে ফেরা যাক৷ নদীর তীরের যে অংশ পরিষ্কার করা হয়েছে, ডিওনিসিও ব্রিটো তার ফলে গর্বিত৷ সেখানে এক সময় আবর্জনার ডিপো ছিল, মাটি জঞ্জালে ঢাকা ছিল৷ তিনি সেই দিনের ছবি দেখালেন, যে দিন অনেক স্বেচ্ছাসেবী এসে জায়গাটা পরিষ্কার করেছিলেন৷ ডিওনিসিও ব্রিটো বলেন, ‘‘এখন এখানকার পরিবেশ আবার পরিষ্কার হয়ে গেছে, বাতাসও নির্মল, দূষণ দূর হয়েছে৷ ফলে মানুষও উৎসাহ পাচ্ছে৷ আগে তাঁদের এ বিষয়ে কোনো ধারণা বা জ্ঞান ছিল না৷ এই প্রকল্প তাঁদের জ্ঞান বাড়িয়েছে এবং তাঁরা সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছে৷''

স্থানীয় মানুষ আজ নদীর এই অংশে এমনকি সাঁতারও কাটতে পারেন৷ বিশেষ করে শিশুরা তার ফলে খুবই আনন্দ পাচ্ছে৷

ক্রিস্টোফর স্প্রিনগেট/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান