1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরিবেশ রক্ষায় একা লড়ছেন অ্যালান

১৭ জুলাই ২০১৯

শখের গাড়িটি নিয়ে ছুটছেন৷ আর টায়ার থেকে নির্গত হচ্ছে অসংখ্য ক্ষুদ্র উপাদান৷ যা খালি চোখে দেখা যায় না৷ এই আণুবীক্ষণিক বর্জ্যকে বলা হয় ‘টায়ার ডাস্ট৷' পরিসংখ্যান বলছে, শুধু জার্মানিতেই বছরে এক লাখ টন টায়ার ডাস্ট উৎপন্ন হয়৷

https://p.dw.com/p/3MBq2
Allan Mitcham - Umweltschützer und Maler
ছবি: DW/T. Mehedi

বিষয়টিকে সামনে রেখে গত ১০ বছর ধরে একা প্রতিবাদ করে আসছেন অ্যালেন মিটশাম৷ জন্মসূত্রে তিনি ইংল্যান্ডের নাগরিক৷ বছর ১৫ হয় জার্মানিতে এসেছেন৷ এখন অবশ্য জার্মান নাগরিক৷ ছবি আঁকতে ভালোবাসেন৷ ছবিতেও ফুটে ওঠে পরিবেশপ্রেম৷ মানুষের জীবনযাপন সহজ হলে, বিশ্ব উপকৃত হবে৷ তাই তিনি মানুষকে সচেতন করতেন চান৷

বুধবার জার্মানির বন শহরের জাতিসংঘ ভবনের সামনে বসে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন তিনি৷ বিতরণ করছিলেন, সচেতনতা বিষয়ক পোস্টকার্ড আর হ্যান্ডবিল৷ হতাশা নিয়ে বলছিলেন, ‘‘রাস্তায় মানুষেরা আসা যাওয়া করছে৷ সবার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছিলাম৷ বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম৷ বেশিরভাগ মানুষই পাশ কাটিয়ে চলে যায়৷ খুব অল্প সংখ্যক মানুষ আছে, যাঁরা আগ্রহী হয়ে আমার কথা শোনে৷''

Allan Mitcham - Umweltschützer und Maler
অ্যালেন মিটশাম একজন পরিবেশপ্রেমী ও শিল্পীছবি: Alan Mitcham

পরিবেশবিদরা বলছেন, এই আবর্জনা খালি চোখে দেখা না৷ কিন্তু নিঃশ্বাসের সঙ্গে মিশে ঢুকে যাচ্ছে ফুসফুসে৷ একটা অংশ মিশে যাচ্ছে মাটিতে৷ বড় একটা অংশ মিশে যাচ্ছে সমুদ্র জলে৷ ফলে, ক্ষতিকর এই আবর্জনা সবার অলক্ষ্যে ঠাঁই করে নিচ্ছে আমাদের খাদ্যশৃঙ্খলে৷ অন্য আবর্জনার মতো টায়ার ডাস্টকে আলাদা করে ফেলারও কোনো সুযোগ নেই৷

তাঁর কথা, ‘‘পরিবেশবাদীরা শুধু প্লাস্টিক নিয়েই চিন্তিত৷ কিন্তু টায়ার ডাস্ট নীরবে ঘাতকের কাজ করে যাচ্ছে, সেটিকে সবাই এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে৷ অথচ এটা আমাদের চারপাশে আছে৷ এটাকে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই৷''

অ্যালানের দুঃখ টায়ার ডাস্ট প্রসঙ্গটি খবরের কাগজে জায়গা পেলেও ‘এটা কখনো শিরোনাম হয় না৷' তিনি মনে করেন এতো গাড়ির দরকার নেই৷ এতো এতো গাড়ি ছাড়াও মানুষ সহজভাবে জীবনধারণ করতে পারেন৷ যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব, সড়কে গাড়ির ব্যবহার কমানোর দাবি জানান তিনি৷ বিকল্প হিসেবে ট্রেনকে আরো নৌযান ব্যবহারের পক্ষে নিজের যুক্তি তুলে ধরেন অ্যালান৷

Allan Mitcham - Umweltschützer und Maler
অ্যালেন মিটশামছবি: DW/T. Mehedi

পৃথিবীর জন্য বিপজ্জনক অনেক কিছুর ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করছে কর্তৃপক্ষ৷ সিগারেটের ওপর প্রচুর কর আরোপ করা বা কিছু স্থানে প্রকাশ্যে ধূমপান থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে৷ কিন্তু বিমান উড়ার বিষয়ে তো কোনো বিধি-নিষেধ নেই বলে দাবি অ্যালানের৷

তাঁর কথা হলো, বিমান উড়তে প্রচুর পরিমাণে কেরোসিন পোড়ে৷ যার ফলে সংবেদনশীল অংশে বিষাক্ত উপাদান এবং প্রচুর কার্বন নির্গমণ ঘটছে৷ তার যুক্তি, যোগাযোগের স্বার্থে বিমান বন্ধ করার দরকার নেই৷ কিন্তু এতো ফ্লাইটেরও প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন না তিনি৷ মানুষ দূর-দূরান্তে যেতে চাইলে বিকল্প যানেও সেটা যাওয়া সম্ভব বলে মত তাঁর৷

পশ্চিমা দেশগুলো পরিবেশের কথা বললেও নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থের কথা ভেবে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বলে দাবি তাঁর৷ পত্রিকায় ছাপা হওয়া একটি সংবাদ দেখিয়ে অ্যালান বলেন, জার্মানি বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থ গাড়ির তৈরিতে ব্যয় করছে, কিন্তু যেখানে মনোযোগ দেয়ার কথা সেদিকে যাচ্ছে না৷

Allan Mitcham - Umweltschützer und Maler
পরিবেশপ্রেমী অ্যালন মিটশামের আঁকা ছবি ছবি: Alan Mitcham

নিজের এই আন্দোলনকে বড় রূপ দিতে, বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হতে চেয়েছিলেন অ্যালান৷ কিন্তু সবার কাজকে তাঁর ভাসা ভাসা মনে হয়৷ টায়ার ডাস্ট বা বিমানের কারণে পরিবেশের ক্ষতির দিকে কেউ আঙ্গুল তোলে না৷ তাই একা চালিয়ে যেতে যান এই যুদ্ধ৷

জার্মানিতে একটি চাকরি করে মেটান জীবিকার সংস্থান৷ আর যেহেতু তিনি আঁকিয়ে, তাই ছবি থেকেও আসে কিছু উপার্জন৷ নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে, বাকি অর্থ ব্যয় করেন পরিবেশ সচেতনতায়৷ সাংবাদিক জেনে একটু যেন আফসোস করেই অ্যালান বলেন, কদিন আগে তাঁর ছবি নিয়ে, বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে হয় একটি প্রদর্শনী৷ সেখানে খরচ হয়েছে তিন হাজার ইউরো৷ তবুও পরিবেশ রক্ষায় নিজের লড়াইটা চালিয়ে যেতে চান তিনি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান