1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরিযায়ী পাখিদের সঙ্গী প্রযুক্তি

৩০ মে ২০১৭

পরিযায়ী পাখিরা হাজার হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে পৌঁছে যায়৷ কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাদের যাত্রাপথ বদলে যাচ্ছে৷ বিজ্ঞানীরা এক অভিনব উপায়ে তাদের গতিবিধির উপর নজর রাখছেন৷

https://p.dw.com/p/2djom
Storch Ronny in Glambeck
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Zinken

প্রতি বছর আগস্ট মাসে সারস পাখিদের যাত্রা শুরু হয়৷ ইউরোপে তাদের চারণক্ষেত্র থেকে আফ্রিকায় শীতকালীন আশ্রয়স্থল পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে হয়৷ তবে সম্ভবত  জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাদের যাত্রাপথ বদলে যাচ্ছে৷ পৃথিবীর বুকে এই পরিবর্তনের লক্ষণ স্পষ্ট হয়ে উঠছে৷

মিশায়েল কাৎস সারস পাখিদের শরীরে হাইটেক ট্রান্সমিটার লাগিয়ে জানতে চান, পাখিগুলি পরিবর্তনশীল জলবায়ুর কারণে কী প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে৷ তিনি বলেন, ‘‘জিপিএস ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট ব্যবস্থার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তা পাঠানো হয়৷ অর্থাৎ ট্রান্সমিটারে বসানো সিম কার্ডের মাধ্যমে সারসের অবস্থান দেখা যায়৷''

মাক্স প্লাংক ইন্সটিটিউটের সহকর্মী মার্টিন ভিকলেস্কিকে নিয়ে মিশায়েল কাৎস নতুন এই প্রযুক্তি পরীক্ষা করে দেখছেন৷ অ্যান্টেনার মাধ্যমে তাঁরা ট্রান্সমিটার বসানো পাখিগুলির অবস্থান নির্ণয় করছেন৷ এই প্রযুক্তিকে সফল হতে হবে, কারণ গবেষকদের বড় এক লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে৷ তাঁরা চান, মাইক্রো-ট্র্যাকার সারস পাখির গোটা জীবন ধরে তথ্য প্রেরণ করে যাবে৷ পক্ষীবিজ্ঞানী ড. মার্টিন ভিকলেস্কি বলেন, ‘‘এর মধ্যেই আমরা আমাদের গ্রহের পরিবর্তনগুলি দেখতে পাচ্ছি৷ আমরা নিশ্চিতভাবে জানি, পাখিরা কোনদিকে যাচ্ছে, ২০ বছর আগে কোথায় যেত৷ তাদের যাত্রাপথে কী পরিবর্তন এসেছে এবং বিগত কয়েক বছরে ঠিক কী কী পরিবর্তন ঘটেছে?''

 যত বেশি সংখ্যক সারস পাখি অনুসরণ করা হবে, বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর অবস্থা সম্পর্কে তত বেশি তথ্য জানতে পারবেন৷ তার জন্য যাত্রা শুরুর আগে কম ও বেশি বয়সি সারস পাখিদের শরীরে ট্রান্সমিটার বসাতে হবে৷ কাজটা মোটেই সহজ নয়, কারণ সারস পাখি স্বভাবে বড়ই লাজুক৷ তবে তাদের কী ভাবে ধরতে হয়, মিশায়েল কাৎস তা জানেন৷ সারস পাখি ঘাসের উপর নেমে খাবারের খোঁজ করার সময় বিশেষ এক ধরনের ফাঁদের সাহায্যে তিনি তাদের বন্দি করেন৷ তারপর ধীরে-সুস্থে তাদের শরীরে ট্রান্সমিটার লাগানোর পালা৷ পিঠে রাকসাক ব্যাগ গলিয়ে নেওয়ার মতো ট্রান্সমিটার লাগানো হয়৷ পাখিটিকে শান্ত রাখতে কাপড় দিয়ে তার চোখ ঢেকে দেওয়া হয়৷ পাখির কাছে অন্ধকার মানেই ঘুম৷ সবার শেষে পরীক্ষা করতে হয়, মিনি ট্র্যাকার ঠিকমতো লাগানো হয়েছে কিনা৷ ড. মিশায়েল কাৎস বলেন, ‘‘এটি একটি ট্রায়াক্সিকাল অ্যাক্সিলারেটর সেন্সর এবং তার গতি দেখে বোঝা যায় সারস পাখিটি কী করছে৷ যেমন সে বসে আছে অথবা নিজের পালক সাফ করছে৷ মানে শুধু তার অবস্থান নয়, সেখানে সে কী করছে, সেটা জানতে পারা সত্যি বিস্ময়কর৷''

শুধু পাখিদের আচরণ ও যাত্রাপথ নয়, এত তথ্যের সাহায্যে বিজ্ঞানীরা ভবিষ্যতে আরও অনেক বিষয় জানতে চান৷ যাত্রাপথের পরিবর্তনে সূক্ষ্ম তারতম্য ইঙ্গিত দিতে পারে, যে সেই এলাকায় পঙ্গপালের উৎপাত, খরা অথবা রোগের প্রকোপ আছে কিনা৷ 

সারস পাখি যদি ভবিষ্যতে হাইটেক প্রযুক্তির কল্যাণে ধারাবাহিকভাবে তথ্য দিয়ে যায়, তার ভিত্তিতে আমাদের গ্রহের অবস্থা আরও নিখুঁতভাবে জানা যাবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান