1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ত্রাণের বিনিময়ে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ

৭ মে ২০২০

করোনার সঙ্কটে নিম্নবিত্তদের ত্রাণ দিতে এগিয়ে এসেছে সরকার এবং নানা সংস্থা৷ অনেকে ব্যক্তি উদ্যোগেও চালাচ্ছেন সহায়তা কার্যক্রম৷ কিন্তু পাকিস্তানে অভিযোগ উঠেছে সংখ্যালঘুদের জোর করে ধর্মান্তরিত করার৷

https://p.dw.com/p/3bu6L
ছবি: UGC/Vishal Anand/InterFaithIftar

পাকিস্তানের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা কেএনএ জানিয়েছে করোনা সংকটের সময় ত্রাণ নিতে যাওয়া খ্রিস্টান ও হিন্দুদের জোর করে ধর্মান্তিরত করার চেষ্টা করছে দাওয়াত-এ-ইসলামি নামের একটি সংগঠন৷

ক্যাথলিক টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান আঞ্জুম জেমস পল ইউসিএনিউজকে জানিয়েছেন, ‘‘যারা নিজের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের কথা চিন্তা না করে অন্যদের সাহায্য করে, তাদের আমরা স্বাগত জানাই৷ কিন্তু যাদের সাহায্য দরকার তাদের ধর্ম নিয়ে টানাহেঁচড়া না করাই ভালো৷''

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একটি সংগঠনের প্রতিনিধি চমন লাল ইউসিএনিউজকে জানান, ‘‘আমাদের যেসব ভাই-বোনদের সাহায্য দরকার, তাদের ব্রেইনওয়াশ করার চেষ্টা চলছে৷'' সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া দাওয়াত-এ-ইসলামির একটি ভিডিওতে দেখা যায় যারা খাদ্য সহায়তার বিনিময়ে ইসলাম গ্রহণ করছেন, তাদের স্বাগত জানাচ্ছে সংগঠনটি৷ এমন ভিডিও প্রচারেরও সমালোচনা করেন হিন্দু ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতারা৷

পাকিস্তানে করোনা সংকটের মধ্যে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের এটিই একমাত্র উদাহরণ নয়৷ গত কয়েক সপ্তাহে করাচি ও অন্যান্য অনেক শহরে কেবল মুসলিমদের জন্য ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর অভিযোগ উঠেছে কয়েকটি সংগঠনের বিরুদ্ধে৷ দাওয়াত-এ-ইসলামি পাকিস্তানভিত্তিক হলেও জার্মানিসহ বিশ্বের নানা দেশে এর কার্যক্রম রয়েছে৷ জার্মানির অফেনবাখ শহরে মসজিদ ও কমিউনিটি সেন্টারও পরিচালনা করে সংগঠনটি৷

ইউএস ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম কমিশন- ইউএসআইআরএফ করোনা সংকটের মধ্যেও এমন ধর্মীয় বৈষম্যের নিন্দা জানিয়েছে৷ সংস্থাটির কমিশনার অনুরিমা ভার্গব বলেন, ‘‘এ ধরনের কর্মকাণ্ড নিন্দনীয়৷ কোভিড-১৯ যখন ছড়িয়ে পড়ছে, পাকিস্তানের কিছু মানুষ নিজেদের পরিবারের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার পাশাপাশি ক্ষুধার বিরুদ্ধেও লড়াই করছে৷ কারো ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর নির্ভর করে সাহায্য করা উচিত নয়৷ আমরা পাকিস্তান সরকারকে আহ্বান জানাই যাতে সব ধর্মের মানুষের জন্য খাবার ও অন্যান্য সহায়তা সমানভাবে নিশ্চিত করা হয়৷''

ইউএসআইআরএফ জানিয়েছে, করাচিতে সায়লানি ওয়েলফেয়ার ইন্টারন্যাশনাল ট্রাস্ট নামে একটি এনজিও গৃহহীন ও শ্রমিকদের মধ্য়ে ত্রাণ কার্যক্রম চালাচ্ছে৷ কিন্তু এই কার্যক্রমের আওতার বাইরে রাখা হচ্ছে অমুসলিমদের৷ যুক্তি হিসেবে সংগঠনটি বলছে, এ ত্রাণ কেবল মুসলিমদের জন্যই আনা হয়েছে৷

ইউএসআইআরএফ এর কমিশনার জনি মুর বলেন, ‘‘সাম্প্রতিক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশে বলেছেন তার সরকারকে একই সঙ্গে কোভিড-১৯ এবং ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে৷ এখন ইমরান খানের সরকারের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার সময়৷ যদি এ লড়াইয়ে অন্য সম্প্রদায়ের মানুষদের বাদ দেয়া হয় তাহলে চলমান সংকটে যোগ হবে ধর্মীয় বৈষম্য ও সাম্প্রদায়িক অসহিষ্ণুতাও৷''

২০১৯ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে ইউএসআইআরএফ জানিয়েছে পাকিস্তানে হিন্দু ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ নিয়মিত নিরাপত্তা হুমকিতে ভোগেন৷ সামাজিক নির্যাতন ও বিভিন্ন সুযোগসুবিধা থেকে প্রায়ই বাদ দেয়া হয়ে অমুসলিমদের৷

এডিকে/কেএম (কেএনএ, ইউসিএনিউজ)