1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পৃথিবীর বিবর্তনের রহস্যের চাবিকাঠি চাঁদের বুকে

১৩ আগস্ট ২০১৯

চাঁদের রহস্য উন্মোচনের মাধ্যমে আসলে পৃথিবীর বিবর্তন সম্পর্কে অনেক নতুন তথ্য পাওয়া গেছে৷ অ্যাপোলো অভিযানে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে সামগ্রিকভাবে সৌরজগতের অনেক অজানা খবরও জানা গেছে৷

https://p.dw.com/p/3NoYg
ছবি: picture-alliance/NASA/Cover Images

চাঁদের ছয়টি জায়গায় অবতরণ করে অ্যাপোলো মিশনের মহাকাশচারীরা মাটি তুলে পৃথিবীতে নিয়ে আসেন৷ কয়েকটি জায়গায় ড্রিলিং করে মাটির বেশ কয়েক মিটার গভীর অংশ থেকে নমুনা তোলা হয়েছিল৷ এভাবে সূক্ষ্ম ধুলিকণা থেকে ফুটবলের সাইজের খণ্ড পাওয়া গেছে৷

চাঁদের মাটির নমুনা সত্যি মূল্যবান প্রমাণিত হয়েছিল৷ রাল্ফ ইয়াউমান-এর মতো জ্যোতির্বিদ এর মাধ্যমে অনেক নতুন জ্ঞান অর্জন করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এই পাথর অবশ্যই অন্য এক মহাজাগতিক বস্তু থেকে এসেছে৷ পাথর হিসেবে এটি অতি প্রাচীন৷ সে কারণে এটি অত্যন্ত মূল্যবান৷ গত ৪০০ কোটি বছর ধরে কীভাবে চাঁদের বিকাশ ঘটেছে, এই পাথর থেকে তা জানা যায়৷ পৃথিবীর খুব কাছে থাকার কারণে এই পাথর সেখানকার বিকাশ সম্পর্কেও কিছু ইঙ্গিত দিতে পারে৷''

এমন তথ্য খোদ পৃথিবীর বুকে পাওয়ার আর কোনো সম্ভাবনা নেই৷ কারণ সেখানে শিলার রূপান্তর ঘটে চলেছে৷ মাটির নীচে ভূ-স্তরের প্লেটগুলির স্থানান্তর ঘটে৷ ফলে পাথর গলে গিয়ে আগ্নেয়গিরির মাধ্যমে আবার বেরিয়ে আসে৷ সে কারণে পৃথিবীর আদি অবস্থার চিহ্ন লোপ পেয়েছে৷

অন্যদিকে চাঁদ অনেকটা সংরক্ষিত এলাকার মতো৷ সেখানকার আদি রূপ ও বিবর্তনের ইতিহাস আজও অক্ষত রয়েছে৷ মানুষ চাঁদের বুকে নামার আগে একাধিক স্যাটেলাইট তার উপরিভাগ পর্যবেক্ষণ করেছিল৷ সেই সব ছবির সাহায্যে চাঁদের গহ্বরের রহস্য উন্মোচন করা সম্ভব হয়েছিল৷ বহুকাল ধরে গবেষকদের ধারণা ছিল, যে সেই সব গহ্বর আসলে আগ্নেয়গিরি৷

তারপর জানা গেল, বিপুল গতিতে গ্রহাণু আছড়ে পড়ায় সেই সব গহ্বর সৃষ্টি হয়েছে৷ যেমন একটি গহ্বরের ব্যাস ৯০ কিলোমিটার৷ আল্পসের মতো উঁচু পর্বতশ্রেণি তার চারিপাশ ঘিরে রয়েছে৷ গ্রহ ভূবিজ্ঞানী হিসেবে রাল্ফ ইয়াউমান বলেন, ‘‘কয়েক মিনিটের মধ্যে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে৷ পৃথিবীতে তেমনটা ঘটে নি৷ প্লেটগুলির সংঘর্ষের ফলে কোটি কোটি বছর ধরে পর্বত জেগে উঠেছে৷ তারপর উধাও হয়ে গেছে৷ চাঁদের বুকে কয়েক মিনিটের মধ্যে এমন পরিবর্তন ঘটেছে৷ তারপর এমন বিশাল পর্বতশ্রেণি সৃষ্টি হয়েছে৷ ফলে পৃথিবীতে ভূতত্ত্বের বিবর্তন সম্পর্কে ধারণারও মৌলিক পরিবর্তন ঘটেছে৷''

গবেষণাগারে চাঁদের পাথরের বয়স নিখুঁতভাবে জানা গেছে৷ ফলে গ্রহগুলির বিবর্তন সম্পর্কে অনেক নতুন জ্ঞান পাওয়া গেছে৷ রাল্ফ ইয়াউমান বলেন, ‘‘এখন যদি কেউ বলে, যে শুধু চাঁদ নয়, গোটা সৌরজগতের ক্ষেত্রেই সেটা খাটে, সেক্ষেত্রে অন্যান্য গ্রহগুলির ক্ষেত্রেও এই উপলব্ধি প্রয়োগ করা যায়৷ অর্থাৎ চাঁদই আমাদের সৌরজগতের বিবর্তনের সময়সূচি দিয়েছে৷ অ্যাপোলো মিশনের আগে সেটা ছিল না৷''

সেই বিবর্তন ছিল আলোড়নে ভরা৷ মহাজাগতিক বস্তুগুলির উপর বার বার গ্রহাণু ও ধূমকেতু আছড়ে পড়েছে৷ প্রায় ৪০০ কোটি বছর আগে সেই বোমাবর্ষণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল৷

চাঁদে মানুষের প্রথম অবতরণের মাত্র ছয় বছর পর গবেষকরা নতুন এক তত্ত্ব সৃষ্টি করেন৷ তাঁদের মতে, প্রায় মঙ্গলগ্রহের মতো বড় কোনো মহাজাগতিক বস্তুর সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষের ফলে যে সব টুকরো ছিটকে বেরিয়ে গিয়েছিল, সেগুলি দিয়েই চাঁদ সৃষ্টি হয়৷ কিন্তু এখনো অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি৷

কর্নেলিয়া বরমান/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান