1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পোল্যান্ডে এক জাদুর স্কুল

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

হ্যারি পটার ম্যানিয়া যখন দুনিয়ার সর্বত্র, তখন জাদুবিদ্যার স্কুল, নাকি ডাকিনিবিদ্যের কলেজ? পোল্যান্ডে হতেই বা বাধা কী! চলুন, সোচা দূর্গের প্রাচীরের আড়ালে সে-রকম একটি প্রতিষ্ঠান দেখে এবং চেখে আসা যাক৷

https://p.dw.com/p/2YA24
DW EUROMAXX  Zauberschule Harry Potter
ছবি: DW

নানা ধরনের ম্যাজিক স্পেল বা মন্তর এদের সকলেরই জানা আছে৷ ‘কলেজ অফ উইজার্ডি' বা ডাইনিবিদ্যের কলেজের এই কোর্সে যে ১৩০ জন অংশ নিচ্ছেন, তারা সকলে জাদুকর বা ডাইনি হওয়ার প্রশিক্ষণ পাবেন৷ হাতে ম্যাজিক ওয়ান্ড বা জাদুকাঠি নিয়ে এরা ভূত-প্রেত-দত্যি-দানোর সঙ্গে লড়বেন৷

তিন দিন ধরে এরা শিখবেন তথাকথিত ‘লার্প' বা লাইভ রোল প্লেয়িং৷ সারা বিশ্ব থেকে ফ্যান্টাসির ফ্যানরা আসেন এই লার্প উপভোগ করতে৷

প্রশিক্ষণার্থীদের পাঁচটি কোর্সের মধ্যে একটি বেছে নিতে হয়, যেমন, তারা রোজা কিংবা ওঝা হওয়ার প্রশিক্ষণ নিতে পারেন৷ অ্যারিথম্যান্টিক-এর মতো বিষয়ে ক্লাস করতে হয়, যেখানে সংখ্যার সাহায্যে ভবিষ্যদ্বাণী করা শেখানো হয়৷

দূর্গের কারাকক্ষে বিস্টোলজি বিষয়টি পড়ানো হয়, যা দিয়ে অপদেবতাদের বিতাড়ন করা সম্ভব৷

জাদুবিদ্যার স্কুল

সিমন বোরুতা'র অ্যালকেমি ক্লাস সবসময়েই ভরা থাকে৷ এখানে ছাত্র-ছাত্রীরা নানা ধরনের পদার্থ মিশিয়ে জাদু পানীয় তৈরি করতে শেখেন৷

‘প্রফেসর অফ অ্যালকেমি' সিমন বোরুতা বললেন, ‘‘ঐন্দ্রজালিক সব পানীয় সৃষ্টির জন্যে অ্যালকেমি কাজে লাগে৷ প্রেমে পড়িয়ে দেবার পানীয়, মন ভালো কিংবা খারাপ করে দেবার বা কাউকে রক্ষা করার পানীয়, এ সবই তার মধ্যে পড়ে৷ উদ্দেশ্য ভালো কিংবা খারাপ, দু'ই হতে পারে৷ সাধারণত অ্যালকেমি আবেগ-অনুভূতির সঙ্গে জড়িত৷''

তবে উঠতি জাদুকরেরাও তো আর জাদু দিয়ে হোমওয়ার্ক করিয়ে নিতে পারেন না, তাই পড়া মুখস্থ করতে হয়৷ মুখস্থ করলেই হবে না, প্র্যাকটিস করতে হবে৷ কোনো জাদুমন্তর ভুলে গেলে, এই বইটাতে তা আবার দেখে নিতে হবে৷ প্রত্যেক পড়ুয়াকে এরকম একটা জাদুবিদ্যার ‘টেক্সট বই' দেওয়া হয়েছে৷

 সাজসরঞ্জামের দায়িত্বে আছেন আগাটা সুইস্টাক৷ তিনি বললেন, ‘‘থিয়েটার আর ফিল্মের রিকুইজিটের মধ্যে ওটাই ফারাক: রোল প্লেয়িং-এ সত্যিই এখানে-সেখানে যেতে হয়, বইটা পড়তে হয়, সব কিছু ব্যবহারযোগ্য হওয়া চাই, ধরাছোঁয়ার মতো হওয়া চাই৷ মাঝেমধ্যে আমরা গন্ধ ব্যবহার করে থাকি, যা এই ‘খেলুড়েরা' তাদের অবচেতন মনে উপলব্ধি করতে পারেন ও সেই সব জায়গার সঙ্গে যুক্ত করেন৷''

বাইরে খেলার জন্য আছে যেমন ধরা যাক ‘অগ্নিগোলক'৷ এখানে খেলুড়েদের তাদের পুরো সাজে দেখতে পাওয়া যায়৷ সাজপোশাকের জন্য দূর্গের বাইরে আছেন একদল মেক-আপ শিল্পী ও কসটিউম ডিজাইনার, যারা খেলুড়েদের সঠিক পোশাক পরাচ্ছেন ও মেক-আপ দিচ্ছেন৷

কসটিউম ডিজাইনার নিকোলাই ভিশার বলেন, ‘‘আমার যেটা সত্যি ভালো লাগে, সেটা হলো, যখন ওরা পোশাক পরে দেখবার জন্য প্রথমবার এখানে আসেন৷ ওরা যেন বদলে যান! সেই মুহূর্ত থেকে ওরা যেন অন্য কেউ হয়ে যান, অন্য আচার-ব্যবহার করেন, অন্যভাবে হাঁটেন৷ ওদের অঙ্গভঙ্গি বদলে যায়৷ অন্য কোনো চরিত্রে ঢুকে যাবার জন্য পোশাকটা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ৷''

কোনো কোনো রোল বা ভূমিকা গভীরভাবে নাড়া দেয়৷ ডাকিনিবিদ্যের কলেজ আসলে একটি নাট্যশালা, যেখানে বড় বড় আবেগ-অনুভূতি বুক কাঁপিয়ে দেয়৷

 

কলেজ অফ উইজাড্রির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক ক্লাউস রাস্টেড৷ তিনি মনে করেন, ‘‘সিনেমা দেখে চরিত্রদের জন্য সহানুভূতি অনুভব করা যায়৷ কিন্তু রোল প্লেয়িং-এ পঞ্চেন্দ্রিয় দিয়ে সব কিছু অনুভব করা যায়৷ শিল্পকলার গ্রাহক না হয়ে, নিজেই শিল্পকলার অংশ হওয়া যায়৷''

শিক্ষার্থীরা তাদের জাদুকরি বিদ্যার পাঠশালের কথা এত সহজে ভুলে যাবেন না৷ সোচা দুর্গের প্রাকারের পিছনে তারা যে অভিজ্ঞতা করেছেন, তা চিরকাল রাখা থাকবে স্মৃতির আড়ালে৷

ডানিয়েলা স্প্যাট/এসি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য