1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
রাজনীতিবেলারুশ

পোল্যান্ড-বেলারুশ সীমান্তে আরো এক মরদেহ

১৩ নভেম্বর ২০২১

ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশের চেষ্টা করা অভিবাসীদের নিয়ে ক্রমবর্ধমান অচলাবস্থার মধ্যে পোল্যান্ড-বেলারুশ সীমান্তে এ নিয়ে অন্তত নয় জনের মৃত্যু ঘটলো৷ এদিকে, রাশিয়ার 'আশা' দ্বন্দ্ব নিরসনে বেলারুশের সঙ্গে কথা বলবে জার্মানি৷

https://p.dw.com/p/42xR1
ছবি: Leonid Shcheglov/AP/picture alliance

পোলিশ পুলিশ শনিবার জানিয়েছে যে বেলারুশ সীমান্তের কাছে একটি জঙ্গলে সিরিয়ার এক যুবকের মরদেহ পাওয়া গেছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের পূর্ব সীমান্তে রাজনৈতিক অচলাবস্থার সবশেষ শিকার তিনি৷

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই মরদেহ একদিন আগে ওলকা তেরেচওস্কা গ্রামের কাছে পাওয়া গিয়েছিল৷ মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি৷

এর আগে বৃহস্পতিবার বেলারুশ-ইইউ সীমান্তে ১৪ বছর বয়সি একটি কুর্দি বালক হাইপোথার্মিয়ায় মারা যায়৷ এই দুই মৃত্যুর ফলে পোলিশ সীমান্তে আটকা পড়ে অভিবাসীদের মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো অন্তত নয়জনে৷

ইইউ কর্তৃপক্ষের অভিযোগ বেলারুশ সরকারই কয়েক মাস ধরে ইইউভুক্ত রাষ্ট্র পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া এবং লাটভিয়ার সীমান্তে অভিবাসীদের ঠেলে দিচ্ছে৷

অচলাবস্থায় সংকটে অভিবাসীরা

ডয়চে ভেলের প্রতিবেদক মেরিনা স্ট্রস জানিয়েছেন, সীমান্তের কাছের এলাকাটি ‘‘বিশাল বনের মতো... সেখানে জলাভূমি আছে, নেকড়ের মতো বন্য প্রাণী আছে৷ এই অঞ্চলে, বিশেষ করে রাতে, হিমশীতল ঠান্ডা৷ ফলে যারা সেখানে পথ খোঁজার চেষ্টা করছে তাদের পরিস্থিতি কেমন তা সহজেই কল্পনা করা যায়৷'' 

স্থানীয় অ্যাক্টিভিস্ট স্ট্রসকে জানিয়েছেন যে আগের রাতেই তারা শিশুসহ ১০ জনকে 'খুব খারাপ অবস্থায়' দেখতে পেয়েছেন৷

২০২০ সালের বিতর্কিত নির্বাচন এবং প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সরকারের ভিন্নমতের বিরুদ্ধে সহিংস দমন-পীড়নের পরিপ্রেক্ষিতে ইইউ বেশ কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল৷ ইউরোপের বেশ কিছু রাষ্ট্রই অভিযোগ করেছে, এর প্রতিশোধ নিতেই অভিবাসীদের ‘অস্ত্র' হিসাবে ব্যবহার করছে বেলারুশ৷

পোলিশ সীমান্তে তিন থেকে চার হাজার অভিবাসী সব সময়ই অবস্থান করছেন৷ কিন্তু অনেক অভিবাসী বেলারুশের মধ্য দিয়ে সহজে ইউরোপে আসার উপায় দেখতে পেয়ে আরো দলে দলে পোল্যান্ড সীমান্তে জড়ো হচ্ছেন৷

এই পরিস্থিতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু দেশ নতুন অভিবাসন রুট বন্ধে সীমান্তে শক্তি বাড়াতে বাধ্য হয়েছে৷

পুটিনের 'আশা' বেলারুশ ও জার্মানি আলোচনা করবে

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন মনে করেন, উত্তেজনা নিরসনে ইউরোপীয় নেতাদের লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে কথা বলা দরকার৷

শনিবার সম্প্রচারিত একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে পুটিন বলেন, ‘‘আমি যা বুঝতে পেরেছি, আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো এবং (জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা) ম্যার্কেল একে অপরের সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত৷''

‘‘আমি আশা করি এটা অদূর ভবিষ্যতে ঘটবে - এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ৷''

তবে পুটিন অভিবাসী সংকটের জন্য আবারও পশ্চিমকেই দোষারোপ করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘মধ্যপ্রাচ্যে পশ্চিমা নীতির কারণেই অভিবাসীরা ইউরোপে যেতে চাচ্ছে৷'' 

তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় অভিবাসীদের এই সংকট কোথা থেকে এসেছে৷ বেলারুশ কি এই সমস্যার কারণ? নাকি অন্য কিছু? না, এই পরিস্থিতি ইউরোপীয় দেশগুলোসহ পশ্চিমা দেশগুলো নিজেরাই তৈরি করেছে৷ এই সংকট রাজনৈতিক, সামরিক এবং অর্থনৈতিক৷''

যুক্তরাষ্ট্রের 'উদ্বেগ'

এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শুক্রবার বেলারুশ-পোলিশ সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন৷

হোয়াইট হাউসে বাইডেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমরা আমাদের উদ্বেগের কথা রাশিয়াকে জানিয়েছি, আমরা আমাদের উদ্বেগের কথা বেলারুশকেও জানিয়েছি৷''

মস্কো লুকাশেঙ্কোকে সমর্থন দিয়ে আসছে, কিন্তু বর্তমান সংকটে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে আসছে৷

২০১৫ সালে ১০ লাখেরও বেশি অভিবাসী ইইউতে আশ্রয়ের আবেদন করেছিল৷ সেই সংকটের পুনরাবৃত্তি এড়াতে চায় ইইউ৷ ব্রাসেলস এখন লুকাশেঙ্কোর বিরুদ্ধে নতুন পদক্ষেপের কথা ভাবছে৷

বিমান চলাচলে নতুন নিষেধাজ্ঞা

তুরস্ক ২০১৫ সালের সংকটের পর সব মিলিয়ে এক লাখের বেশি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে৷ শুক্রবার ইরাকি, সিরিয়ান এবং ইয়েমেনিদের বেলারুশগামী ফ্লাইটে ওঠার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তুরস্ক৷

ইইউ কর্মকর্তারা তুরস্কের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন৷

এডিকে/এআই (এপি, ডিপিএ, রয়টার্স)