1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রযুক্তির মাধ্যমে উষ্ণায়নের মোকাবিলা নিয়ে সংশয়

১১ ডিসেম্বর ২০১৮

প্রযুক্তির মাধ্যমে জলবায়ু প্রণালীর উপর হস্তক্ষেপ করে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মোকাবিলা করা খাতায় কলমে সম্ভব হলেও তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও এই শক্তির রাজনৈতিক অপব্যবহার নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছে৷

https://p.dw.com/p/39mgV
Solomon Islands - Lau Lagoon
ছবি: Beni Knight

শুধু সমুদ্র নয়, জমির উপরেও ক্লাইমেট ইঞ্জিনিয়ারিং-এর প্রয়োগ নিয়ে কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে৷ যেমন সুইজারল্যান্ডে এক প্লান্ট বাতাস থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড শুষে নিয়ে গাছের সার উৎপাদন করেছে৷ বিশাল গ্রিনহাউসে চাষের কাজে সেই সার কাজে লাগানো হচ্ছে অথবা মাটির নীচে তা জমা রাখা হচ্ছে৷ গোটা বিশ্বেই এমন মডেল প্রয়োগ করা যেতে পারে কি? সমুদ্রবিজ্ঞানী প্রো. আন্দ্রেয়াস ওশলিস মনে করেন, ‘‘সিওটু ভ্যাকুয়াম ক্লিনার অবশ্যই ভালো কাজ করে৷ কিন্তু তার মাপ কয়েকগুণ বড় হতে হবে৷ এমন অনেক যন্ত্র এবং মাটির নীচে দীর্ঘকাল কার্বন-ডাই-অক্সাইড রাখার ব্যবস্থাও প্রয়োজন৷ প্রযুক্তিগতভাবে এ সবই করা সম্ভব৷ প্রশ্ন হলো, আমরা কি সত্যি এমনটা চাই? সমাজে এর পক্ষে সমর্থন আদায় করা কি সম্ভব?''

মাটির নীচে সিওটু রাখার বিষয়টির সঙ্গে কিছু ভয়ভীতি জড়িয়ে রয়েছে৷ সমালোচকদের আশঙ্কা, এর ফলে তীব্র ভূমিকম্প ঘটতে পারে অথবা ভূগর্ভস্থ পানি দুষিত হতে পারে৷ মোটকথা, তার পরিণতি সম্পর্কে আজ ধারণা করা কঠিন৷

রাজনীতি জগতেও ক্লাইমেট ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে অস্বস্তি রয়েছে৷ আদৌ অথবা কীভাবে তা প্রয়োগ করা সম্ভব, সে বিষয়ে কোনো বিধিনিয়ম নেই৷ তবে কিছুই না করলে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মাত্রা যে আরও বেড়ে যাবে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷

তখন দুই মেরু অঞ্চলে আরও বরফ গলে যাবে এবং মরুভূমি আরও সম্প্রসারিত হবে৷ প্রো. আন্দ্রেয়াস ওশলিস বলেন, ‘‘বৈশ্বিক উষ্ণায়ন যে নাটকীয় মাত্রায় বেড়ে চলেছে, তা আমরা দেখতে পাচ্ছি৷ক্লাইমেট ইঞ্জিনিয়ারিং-এর প্রয়োগ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব নয়৷ অর্থাৎ হয় সব রকম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সত্ত্বেও এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে, অথবা জলবায়ু সংক্রান্ত লক্ষ্যমাত্রা ত্যাগ করতে হবে৷''

প্রযুক্তিগতভাবে এখনই বেশ কয়েকটি প্রক্রিয়া কাজে লাগানো সম্ভব৷ যেমন অগ্ন্যুৎপাত ঘটলে সূর্যের রশ্মি অব্যাহত রাখা যেতে পারে৷

১৯৯১ সালে ফিলিপাইন্সের পিনাটুবো আগ্নেয়গিরি জেগে ওঠার পর গন্ধকের যত কণা আকাশ ছেয়ে গেছিল, খাতায় কলমে ঠিক তত সংখ্যক কণা স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে পাঠানো সম্ভব৷ সে সময়ে গন্ধকের আস্তরণ সরতে এবং তাপমাত্রা স্বাভাবিক হতে প্রায় ১ বছর সময় লেগেছিল৷ মাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউটের উলরিকে নিমায়ার বলেন, ‘‘পিনাটুবো পৃথিবীর তাপমাত্রা অনেক কমিয়ে দিয়েছিল এবং বাতাসে গন্ধকের স্তর গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল৷ ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা আধ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে গিয়েছিল৷ক্লাইমেট ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ক্ষেত্রেও এমনটাই ঘটতে পারে৷ গন্ধকের পরিমাণ অনুযায়ী আমরা পৃথিবীর তাপমাত্রা কমাতে পারবো৷''

বিশেষজ্ঞদের মনে অবশ্য এখনো সংশয় রয়েছে৷ কৃত্রিমভাবে জলবায়ুর উপর হস্তক্ষেপ করলে অন্য বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কা রয়েছে৷ কিছু শক্তি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেও এই প্রযুক্তির অপব্যবহার করতে পারে৷ উলরিকে নিমায়ার বলেন, ‘‘এই প্রযুক্তির রাজনৈতিক প্রয়োগ নিয়েই আমার সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা৷ সবাই রাজি হবে এবং মেনে চলবে, এমন আন্তর্জাতিক বিধিনিয়ম স্থির করাও কঠিন৷ ব্যক্তিগতভাবে আমার আশঙ্কা হলো, কোনো এক সময় এর মাধ্যমে যুদ্ধ লেগে যাবে৷''

হাতে সময় খুব কম৷ তাছাড়া জলবায়ু প্রণালীর উপর এমন নির্দিষ্ট হস্তক্ষেপসত্যি সমাধানসূত্র হতে পারে কিনা, তা কেই বলতে পারে না৷

ডিয়র্ক কুনৎসে/এসবি