1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কেমন আছে কিউবা?

২৪ নভেম্বর ২০১৭

অসুস্থতার কারণে জীবনের শেষ কয়েক বছর কিউবার দায়িত্বে থাকতে পারেননি বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো৷ তবুও সমর্থকদের জানা ছিল, তাঁদের প্রিয় নেতা বেঁচে আছেন৷ কিন্তু গতবছর সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়৷

https://p.dw.com/p/2oAgp
Balkon-Galerie  Fidel Castro 1984
ছবি: picture-alliance/dpa/UPI

২০১৬ সালের ২৫ নভেম্বর ৯০ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ফিদেল কাস্ত্রো৷ ২০০৬ সালে অন্ত্রে অসুস্থতার কারণে অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন তিনি৷ এর দু'বছর পর ভাই রাউল কাস্ত্রোর হাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন৷

কাস্ত্রো চাননি, তাই কিউবায় গেলে তাঁর নামে কোনো রাস্তা কিংবা তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে কোনো স্মৃতিস্মারকের দেখা পাওয়া যাবে না৷ কিন্তু তারপরও তাঁর অস্তিত্ব টের পাওয়া যাবে৷ কাস্ত্রোর চিন্তাধারা স্কুলে পড়ানো হয়৷ অনেক সরকারি ভবনে তাঁর ছবি এখনও ঝোলানো আছে৷ অর্থাৎ কিউবার মানুষের কাছে কাস্ত্রোর মৃত্যুতে কিউবা খুব কম পরিবর্তনই এসেছে৷ মাদ্রিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুসানে গ্রাটিউস বলছেন, ‘‘মৃত্যুর অনেক আগেই সরকার ব্যবস্থা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন ফিদেল কাস্ত্রো৷ কিন্তু তারপরও তিনি সবসময় সবার কাছে একটি প্রতীক হয়ে ছিলেন৷''

শুরুতে ধারণা করা হয়েছিল ফিদেলের ভাই প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রো ভাইয়ের ছায়া থেকে বেরিয়ে আসবেন৷ এবং ফিদেল কাস্ত্রো যে সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছিলেন তাতে গতি আনবেন৷ কিন্তু তা হয়নি৷ ‘‘সংস্কার কাজ এখন থেমে আছে৷ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আবারও সম্পর্কের অবনতি হওয়ার পর কিউবা সরকারের এখনকার নীতি হচ্ছে, কোনো পরীক্ষা নয়'', বলেন গিগা ইন্সটিটিউটের রাজনৈতিক বিশ্লেষক বার্ট হোফমান৷ তিনি বলেন, ‘‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে শীতল যু্দ্ধের পরিস্থিতি আবার ফিরে এসেছে৷''

উল্লেখ্য, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে কিউবার উপর নিষেধাজ্ঞা শিথিলের যেসব নীতি গ্রহণ করা হয়েছিল তার কয়েকটি বাতিল করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ এছাড়া কিউবার সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ব্যবসার উপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন তিনি৷

এদিকে, গত আগস্ট মাসে কিউবায় মার্কিন দূতাবাসের কর্মীদের উপর রহস্যজনক ‘অ্যাকুস্টিক সাউন্ড অ্যাটাক'-এর পর হাভানার মার্কিন দূতাবাস থেকে অনেক কূটনীতিককে ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে৷ এই হামলার জন্য কিউবাকে দায়ী করেছে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন৷ তবে কিউবা এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে৷ ঐ হামলার কারণে মার্কিন কূটনীতিকরা কানে কম শোনা থেকে শুরু করে নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগেছেন বলে জানা গেছে৷

ইটালির সাংবাদিক জিয়ান্নি মিনা একবার ১৬ ঘণ্টা ধরে ফিদেল র সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন৷ তিনি মনে করেন, কাস্ত্রোর মৃত্যুর পর কিউবায় তেমন কিছু পরিবর্তন আসেনি৷ ‘‘আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম থেকে থেকে কিউবার নাম হয়ত সরে গেছে৷ কিন্তু ল্যাটিন অ্যামেরিকার অনেক দেশের কাছে কিউবার বিপ্লবের এখনও গুরুত্ব আছে'', বলেন মিনা৷ বামপন্থি আন্দোলনকারীদের কাছে কাস্ত্রো এখনও বেশ গুরুত্বপূর্ণ৷ তাই তো গত আগস্টে কাস্ত্রোর জন্মবার্ষিকীতে তাঁর প্রশংসা করে বক্তব্য দিয়েছিলেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো ও বলিভিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান ইভো মোরালেস৷

কাস্ত্রোর মৃত্যুর পর কয়েকদিন ধরে পুরো কিউবায় একটি গান শোনা গিয়েছিল৷ গানের কথা ছিল এ রকম, ‘‘বাবা – আমার হাত ছেড়ো না৷ আমি এখনও জানি না তোমাকে ছাড়া আমি কীভাবে দৌড়াব৷'' বাস্তবে কাস্ত্রোকে ছাড়া কিউবানরা দৌড়াতে পারে, কিন্তু তাঁরা এখনও নিশ্চিত নয় কোন দিকে দৌড়াতে হবে৷

জেডএইচ/ডিজি (ডিপিএ)