1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফুটবল স্টেডিয়ামের মাঠে শুধুই জঙ্গল!

২৪ অক্টোবর ২০১৯

ফুটবল স্টেডিয়াম, অথচ মাঠে খেলোয়াড়ের বদলে জঙ্গল! অস্ট্রিয়ায় এক প্রকল্পের আওতায় ঠিক এমনটাই করা হয়েছে৷ প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক সংক্রান্ত এক চিত্রকর্মকে এভাবে বাস্তব রূপ দিয়েছেন এক শিল্পী৷

https://p.dw.com/p/3Rp8z
DW Euromaxx | Kunstinstallation "For Forest"
ছবি: DW

অস্ট্রিয়ার ক্লাগেনফুয়র্টের এক ফুটবল স্টেডিয়ামে পেনাল্টি শুটআউটের আশা করলে অবাক হতে হবে৷ ১৪ মিটার উঁচু এক জঙ্গল স্ট্রাইকারের গতিপথ ঢেকে দিয়েছে৷ গত শতাব্দীর সত্তরের দশকেই সুইজারল্যান্ডের শিল্পী ক্লাউস লিটমানের মনে এই আইডিয়া এসেছিল৷

অস্ট্রিয়ার শিল্পী মাক্স পাইন্টনারের ‘প্রকৃতির অটুট আকর্ষণ' নামের চিত্রের ভিত্তিতে তিনি এই প্রকল্প শুরু করেন৷ ক্লাউস লিটমান বলেন, ‘‘আমি এখানে আসলে অত্যন্ত ব়্যাডিকাল এক চিত্র তুলে ধরছি৷ মাক্স পাইন্টনারের মতো আমিও এখানে সৃষ্টির কাজ করছি৷ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্নভাবে হলোও আমাদের এক মৌলিক বিষয় রয়েছে৷ প্রকৃতির প্রতি আমি বা আমরা কী আচরণ করছি, সেই উপলব্ধির সন্ধান করছি৷''

দর্শকরা সেই জঙ্গল শুধু দেখতে পারেন৷ ছুঁয়ে দেখা বা তার মধ্যে প্রবেশ করা নিষিদ্ধ৷ ক্লাউস লিটমান জলবায়ু পরিবর্তনের স্মারক হিসেবে জঙ্গল সংক্রান্ত এক শিল্পকর্ম সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন৷ এই প্রকল্পের রূপায়ণ করতে ৬ বছর সময় লেগেছে৷

‘ফর ফরেস্ট' নামের এই প্রকল্প রূপায়ণের কাজে সুইজারল্যান্ডের ল্যান্ডস্কেপ স্থপতি এনসো এনেয়া তাঁকে সাহায্য করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘বিভিন্ন ধরনের গাছপালা রয়েছে৷ এগুলি মনে হয় পিনুস নিগ্রা৷ ১৬টি এমন গাছ লাগানো হয়েছে৷''

দুই গোলপোস্টের মাঝে এনসো এনেয়া ২৯৯টি গাছ লাগিয়েছেন৷ ইউরোপের জঙ্গলগুলিতে নানা ধরনের গাছের এমন মিশ্রণ বিরল হয়ে উঠেছে৷ তিনি জার্মানি, ফ্রান্স ও ইটালির নার্সারি থেকে গাছগুলি সংগ্রহ করেন৷ তার মধ্যে কয়েকটি প্রায় ৪০ বছর পুরানো৷

বদলে যাওয়া এক মাঠের কথা

সবকটি গাছই বেশ কয়েকবার নানা জায়গায় লাগানো হয়েছিল৷ সেগুলির শিকড় একত্র করে গিঁট বেঁধে জঙ্গলের মাটি খুঁড়ে বসিয়ে দেওয়া হয়৷ এভাবে শিকড় না ছড়িয়ে ও ক্ষতি এড়িয়ে গাছ বেঁচে থাকতে পারে৷ স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এনসো এনেয়া বলেন, ‘‘স্টেডিয়ামের কাঠামোর সঙ্গে সঠিক অনুপাত নির্ণয় করা আমার জন্য খুব কঠিন কাজ ছিল৷ কারণ শুরুতে আমি সামগ্রিক চিত্রটি কল্পনা করতে পারি নি৷ তারপর আমি ফুটবল খেলোয়াড়দের কথা ভাবলাম, যাদের গড় উচ্চতা ১ মিটার ৮০ সেন্টিমিটার৷ তাঁরা কীভাবে লং শট, হাই শট মারেন, সে কথা ভাবলাম৷''

এই স্টেডিয়ামে ৩০,০০০ দর্শক বসতে পারেন৷ ফলে অসংখ্য দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মাঠের উপর জঙ্গল পর্যবেক্ষণ করা যায়৷ দর্শকেরা আসনে বসে থাকতে পারেন অথবা গাছের সারির মাঝে হাঁটতে পারেন৷

চল্লিশ বছরেরও বেশি সময় আগে অস্ট্রিয়ার ভবিষ্যতদর্শী শিল্পী মাক্স পাইন্টনার এই ছবি এঁকেছিলেন৷ বিখ্যাত মিউজিয়াম অফ মডার্ন আর্টেও তাঁর শিল্পকর্ম শোভা পাচ্ছে৷ পাইন্টনারের জঙ্গল অবশ্য নিখুঁত সারিবদ্ধ একই রকম গাছ দিয়ে তৈরি – ফুটবল স্টেডিয়ামের মিশ্র জঙ্গলের মতো নয়৷ পাইন্টনার মনে করেন, ‘‘জঙ্গলটি যে অন্যরকম হয়ে উঠেছে, তা আমার অসাধারণ লাগছে৷ এখানে আসার পথে মনে আশঙ্কা ছিল, যে এটি আমার চিত্রকর্মের মতো হবে তো? সেটা হয় নি দেখে এখন আমি খুব খুশি৷''

‘ফর ফরেস্ট' এক টেকসই প্রকল্প৷ ২০১৯ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত দর্শকরা প্রায় রাত পর্যন্ত এই জঙ্গল দেখার সুযোগ পাচ্ছেন৷ তারপর সেই গাছগুলি কাছেই কোথাও আবার নতুন করে পুঁতে দেওয়া হবে৷

মার্গারেটে ক্রয়েৎসার/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য