1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফের গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধে সরব কংগ্রেসের একাংশ

১৬ নভেম্বর ২০২০

গান্ধী পরিবার কংগ্রেসের নেতৃত্বে রয়েছে। বিহারের ফলাফল দেখে ফের সেই নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব হলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতারা।

https://p.dw.com/p/3lLdJ
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Swarup

বিহার ভোটের পরে ফের কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব হলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা কপিল সিবাল। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নাম না করে তিনি রাহুল গান্ধীর সমালোচনা করেছেন। সমালোচনা করেছেন কংগ্রেসের ভিতরে চলা পরিবারতন্ত্রের। এর আগেও এই বিষয়ে সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন কপিল। মাসখানেক আগে কংগ্রেসের একাধিক প্রবীণ নেতা চিঠি লিখে কংগ্রেস নেতৃত্বে পরিবর্তন আনার কথা বলেছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত তা কার্যকরী হয়নি।

বিহার ভোটে বাম এবং আরজেডির সঙ্গে জোট করেছিল কংগ্রেস। ৭০টি আসনে তারা লড়াই করেছিল। কিন্তু ২০টি আসনও জিততে পারেনি। অন্য দিকে, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশের উপনির্বাচনেও ধরাশায়ী হয়েছে কংগ্রেস। কার্যত অস্তিত্ব সংকটে দেশের স্বাধীনতার সঙ্গে যুক্ত জাতীয় দলটি।

কপিল সিবাল সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আত্মবিশ্লেষণের সময় আর নেই। কংগ্রেস দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হারিয়ে যেতে বসেছে। এই মুহূর্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে অনেক দেরি হয়ে যাবে। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বলতে তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা সহজেই অনুমেয়। দীর্ঘদিন ধরেই রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে কংগ্রেসের ভিতরে বিদ্রোহ তৈরি হয়েছে। রাহুল ঠিকমতো নেতৃত্ব দিতে পারছেন না বলে অনেকরই অভিমত। সোনিয়া গান্ধীও এখন অসুস্থ। ফলে গান্ধী পরিবার যে ভাবে কংগ্রেসের সর্বোচ্চ আসন ধরে রেখেছে, তা নিয়ে অনেকেরই নানা বিরূপ প্রতিক্রিয়া আছে। শক্তিশালী নেতাদের নেতৃত্বে নিয়ে এলে এই পরিস্থিতির বদল ঘটতে পারে বলেও অনেকে মনে করেন।

২০১৪ সাল থেকে কংগ্রেসের মুখ রাহুল গান্ধী। একের পর এক জাতীয় এবং আঞ্চলিক নির্বাচনে তিনি বিজেপির কাছে পরাজিত হয়েছেন। তার পরেও তাঁর নেতৃত্বে থাকা উচিত কি না, এ নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন কপিলরা। কিন্তু মুশকিল হলো, কংগ্রেসেরই একাংশ গান্ধী পরিবারের বাইরে অন্য কাউকে নেতৃত্বে দেখতে চান না। ফলে গান্ধী পরিবার নিয়ে কংগ্রেসের ভিতরেই একাধিক লবি তৈরি হয়েছে।

অন্য দিকে কংগ্রেসের যুব নেতৃত্বের বহু নেতাই দল ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন। রাহুল গান্ধীর এক সময়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া দলের সঙ্গে তীব্র বিতর্কে জড়িয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। রাহুলের আরেক বন্ধু শচীন পাইলট রাজস্থানে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করে বসেছিলেন। বিভিন্ন রাজ্যের শক্তিশালী নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। গোষ্ঠী সংঘাত চূড়ান্ত। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসকে রক্ষা করতে পারেন একজন শক্তিশালী নেতা। সকলে যাঁকে মানতে বাধ্য হবেন। কপিল সিবালরা আগেও বলেছেন, রাহুল গান্ধী সেই কাজটি করে উঠতে পারছেন না।

প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''কংগ্রেসের মধ্যে বয়স্ক বনাম তরুণ নেতাদের লড়াই বেশ কিছুদিন ধরে চলছে। এর আগে ২৮ জন নেতা সই করে সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখেছিলেন। এই প্রবীণ নেতাদের রাহুল আবার কোণঠাসা করার চেষ্টা করছেন। আর তাঁরাও প্রাসঙ্গিক থাকার জন্য বিদ্রোহের ধ্বজা তুলেছেন।'' শরদের মতে, ''তাঁরা যা বলছেন, তা মিথ্যা নয়। তবে এ কথাও সত্য যে, দলের এই ভরাডুবিতে এই ধারভারহীন নেতাদের অবদানও যথেষ্ট।''

প্রশ্ন হলো, বিহারের ভরাডুবির পরে কংগ্রেস কি নিজেদের সমস্যা বুঝতে পারবে? কপিল বলেছেন, আত্মসমীক্ষা করার আর সময় নেই। কংগ্রেস নেতৃত্ব কি তা বুঝতে পারছে? সেইটেই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।

এসজি/জিএইচ (ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)