1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফ্রান্স জুড়ে ধর্মঘট ৭ম দিনে গড়াল,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি

২০ অক্টোবর ২০১০

ফ্রান্সে জুড়ে চলা ধর্মঘট এই নিয়ে টানা সপ্তম দিনে গড়ালো৷ এই মঙ্গলবার প্রায় ৩৫ লক্ষ মানুষ তাদের দাবি দাওয়ার পক্ষে বিক্ষোভে অংশ নিতে ফ্রান্সের রাস্তায় নেমে এসেছিল৷

https://p.dw.com/p/Pilu
ছবি: picture-alliance/dpa

টানা সাতদিন ধরে চলা এই ধর্মঘটে আজ বুধবারও বিমানবন্দর এবং সড়ক অবরোধের কারণে ফ্রান্সে রীতিমতো অচলাবস্থাই বিরাজ করছে৷ জানা গেছে, প্রায় এক তৃতীয়াংশ তেলের পাম্প আজ পর্যন্ত জ্বালানির অভাবে বন্ধ৷ এদিকে বুধবার প্যারিসে এক সংবাদ সম্মেলনে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাস্তার সহিংস বিক্ষোভকারীদের প্রতি সরকার আরো কঠোর হবে৷

জানা গেছ, ব্যয় সংকোচের লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট নিকোলা সার্কোজি'র অবসর নেয়ার বয়স ৬০ থেকে ৬২ করার উদ্যোগ এবং দেশজুড়ে শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে সৃষ্ট জ্বালানি সংকটের প্রতিবাদে সেদেশের আপামর জনতা গতকাল মঙ্গলবার ফ্রান্সের রাস্তায় দিনব্যাপী এই বিক্ষোভ প্রদর্শন করে৷ উল্লেখ্য, গত একমাসে এটি ৭ম ধর্মঘট৷ মঙ্গলবারের ধর্মঘটে ফ্রান্সের স্কুল ছাত্ররা রাস্তায় নেমে আসার কারণে বিক্ষোভ আরো উত্তাল হয়ে উঠেছিল৷

সেদেশের ১২টি তেল শোধনাগারের শ্রমিকরা তাদের দাবি-দাওয়া আর বিক্ষোভ প্রকাশের জন্য ধর্মঘটে রয়েছেন৷ ফলে ফ্রান্সের শত শত তেলের পাম্প জ্বালানির অভাবে রীতিমতো বন্ধই হয়ে গেছে৷

জানা গেছে, প্যারিসে জেট ফুয়েল সরবরাহও বন্ধ হয়ে গেছে৷ যদিও সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ফ্রান্সে এখনো প্রায় তিন মাসের প্রয়োজনীয় জ্বালানি তেল মজুত আছে৷ কিন্তু ফ্রান্সের পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রী জ্যাঁ লুই বোর্লু জানিয়েছেন, প্রায় ৪ হাজার তেলের পাম্পে তেলশুন্য হয়ে পড়েছে৷

ফ্রান্সের বেশ কয়েকটি শহরের রাস্তায় মঙ্গলবার পুলিশ এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে৷ কয়েকটি স্থানে বিক্ষোভকারীদের গাড়ি পোড়ানোর প্রেক্ষিতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে৷ উঠতি তরুণদের তাণ্ডবে দোকান তছনচের ঘটনা ঘটেছে৷ জানা গেছে, এক জায়গায় স্কুটারে অগ্নি সংযোগের কারণে ১৫ বছরের এক কিশোরী দগ্ধ হয়েছে৷ এছাড়া পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য এবং একজন ফটো সাংবাদিকও আহত হয়েছেন৷

Air France Flugzeug am Flughafen in Paris NO FLASH
প্রায় অচল বিমানবন্দরছবি: AP

মঙ্গলবার রাতে একটি মাধ্যমিক স্কুলও আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে বলে পুলিশের বরাতে জানা গেছে৷ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানা গেছে এপর্যন্ত প্রায় এগারোশো জনের মতো বিক্ষোভকারীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে৷

পুলিশের এক মুখপাত্র টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, সহিংসতার ঘটনাগুলো মূলত ঘেটো এলাকার তরুণদেরই কীর্তি৷ যারা পুলিশকে আক্রমণের সুযোগ খোঁজে এবং এই বিক্ষোভের সুযোগে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে মিশে তারা এসব ঘটাচ্ছে৷

উল্লেখ্য, রাষ্ট্রীয় কোষাগারের ঘাটতি সামাল দিতে প্রেসিডেন্ট নিকোলা সার্কোজি গৃহীত উদ্যোগের কারণে কেবল শিক্ষাখাতেই প্রায় ৭০০০ চাকরি ছাঁটাইয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে৷ এছাড়া পেনশন খাতেও ব্যাপক সংস্কার আনতে চলেছে সরকার৷ কিন্তু জানা কথা, আয়েসি ফরাসিরা তাদের এই জীবন-যাপন রীতি বদলাতে চাইবে না৷ এসব পরিবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণের ফলে ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে পড়েছেন নিকোলা'র সরকার৷

যদিও জানা গেছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সেদেশের সরকার সম্প্রতি খানিক নমনীয় হয়েছেন৷ প্রেসিডেন্ট নিকোলা সার্কোজি এই মঙ্গলবার সংকট সমাধানের লক্ষ্যে এলিসি প্রাসাদে জরুরি আলোচনায় বসেছিলেন৷ কিন্তু চারপাশের যা পরিস্থিতি তাতে এর আশু কোন সমাধান বের করতে নিকোলা সমর্থ হবেনা বলে মনে হচ্ছে না৷

প্রতিবেদন: হুমায়ূন রেজা
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক