1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে তথ্যচিত্র

পায়েল সামন্ত কলকাতা
১৯ মার্চ ২০২০

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে তাঁর জীবনের উপর ভিত্তি করে তথ্যচিত্র তৈরি করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট পরিচালক রাজা সেন৷ তথ্যচিত্রের নাম ‘সহস্রাব্দের সেরা বাঙালি‘৷

https://p.dw.com/p/3ZgcG
Bangladesch Historische Bilder
ছবি: Journey/M. Alam

১৯২০ সালের ১৭ মার্চ বাংলাদেশের এক অখ্যাত গ্রামে জন্ম নেন শেখ মুজিবুর রহমান৷ লড়াইয়ের দীর্ঘ পথ পেরিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালি জাতিসত্তার দাবি প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে শ্রেষ্ঠ আইকন৷ এই বছর স্বাধীন বাংলাদেশের জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ পালিত হচ্ছে৷ মুজিববর্ষে পশ্চিমবঙ্গ তাঁর প্রতি প্রণতি জানাচ্ছে একটি তথ্যচিত্রের মাধ্যমে৷ সম্প্রতি  পরিচালক রাজা সেন মুজিবরের জীবন ও কর্মভিত্তিক তথ্যচিত্র নির্মাণ শেষ করেছেন৷ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা বাঙালিদের ভোটের নিরিখে ২০০২ সালে একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বঙ্গবন্ধুকে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে চিহ্নিত করেছিল৷ তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের৷ সেই রাষ্ট্রের ভাষা হবে বাংলা৷ শাসক হবে বাঙালি৷ জীবদ্দশাতেই সেই স্বপ্ন পূরণ করেছিলেন মুজিবুর৷ তাই তিনি শ্রেষ্ঠ বাঙালি৷

জন্মশতবর্ষে তৈরি এই তথ্যচিত্রের মূল ভাবনা কী? তিনবার জাতীয় পুরস্কারজয়ী পরিচালক রাজা সেন বলেন, ‘এত বাঙালি মনীষী থাকতে কেন বঙ্গবন্ধুকে সহস্রাব্দের সেরা বাঙালি বলা হচ্ছে, তার যৌক্তিকতা খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে এই তথ্যচিত্রে৷ এ জন্য আমি বাংলাদেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি৷ সাহিত্যিক, অধ্যাপক, শিক্ষক থেকে রাজনৈতিক নেতা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে চেয়েছি, বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তাঁদের অনুভূতি কী৷‘ পরিচালকের সঙ্গে অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোঃ আখতারুজ্জামান, তথ্যমন্ত্রী মোঃ হাছান মাহমুদ সাংসদ, প্রাক্তন মন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর, মুক্তিযোদ্ধা নাসিরউদ্দিন বাচ্চু, নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এই তথ্যচিত্রকে সমৃদ্ধ করেছেন৷

‘‘বাঙালির আবেগ মুজিবকে নির্মাণ করেছে’’

শম্ভু মিত্র, সুচিত্রা মিত্র, তপন সিনহার উপর তথ্যচিত্রের নির্মাতা রাজা সেনের ছবি দামু, দেবীপক্ষ, আত্মীয়স্বজন উচ্চ প্রশংসিত হয়েছে চলচ্চিত্র মহলে৷ এই চলচ্চিত্র পরিচালকের শিকড় পূর্ব বাংলায়৷ ঢাকার সোনারগাঁওয়ে তাঁর জন্ম৷ সেই আবেগ কাজ করেছে এই নির্মাণের নেপথ্যে৷ পরিচালক বলেন, ‘‘যাঁরা বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্য পেয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি, আবেগকে ধরার চেষ্টা করেছি৷ এ জন্য বাংলাদেশ থেকে কাজ করতে হয়েছে৷ এই ব্যয়বহুল প্রযোজনায় আমাকে সাহায্য করেছেন তপনমোহন সাহা৷''

বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে পরিচালকের নিজস্ব অনুভূতি, ‘‘বাঙালির রাষ্ট্রনেতা মুজিবুর রহমান৷ তার নামে বাঙালি জোট বেঁধেছিল৷ এই ভালবাসা বঙ্গবন্ধুকে শ্রেষ্ঠ বাঙালির শিরোপা দিয়েছে৷ আবার এই ভালোবাসার জন্যই তিনি পর্যাপ্ত সুরক্ষা নেননি, সেটাই তাঁর মৃত্যুর কারণ হয়েছে৷'' তথ্যচিত্রে এমন অনেক আবেগ দিয়ে মালা গাঁথা হয়েছে৷ এই ছবির নেপথ্যে রয়েছে শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারের ভূমিকা৷ উপদেষ্টা হিসেবে তিনি বঙ্গবন্ধু সংক্রান্ত খবর, ছবি দিয়ে পরিচালককে সাহায্য করেছেন৷ কীভাবে ছবি নির্মাণ করা যেতে পারে, সে ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন৷

‘‘মুজিবর ছিলেন ক্যারিশম্যাটিক নেতা’’

বঙ্গবন্ধুর কথা বলতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন পবিত্র সরকার৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘মুজিবর ছিলেন ক্যারিশম্যাটিক নেতা৷ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, রাসবিহারী বসু ছাড়া কোনো বাঙালি নেতা মুক্তি সংগ্রামের ক্ষেত্রে সামরিক বিকল্পের কথা ভাবেননি৷ মুজিবর সেই সাহস দেখিয়েছেন৷ ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্সে বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতায় ছিল সেই যুদ্ধের ডাক৷ আবেদন-নিবেদন নয়, ঘরে যা আছে, তা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে৷মুজিবর বাঙালির মহৎ প্রতিনিধি৷ তাঁর হাতে বাঙালি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা পেয়েছে, বাঙালি স্বায়ত্তশাসন পেয়েছে৷ পৃথিবীর যেখানেই বাঙালি থাকুক, শুধু জাতিসত্তার জন্যই তারা মুজিবকে নিয়ে অহংকার করতে পারে৷ বাঙালির আবেগ মুজিবকে নির্মাণ করেছে, আবার সেই আবেগ দিয়েই তিনি বাঙালিকে উজ্জীবিত করেছেন৷''