1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বরফ ফুরোলে হারায় গ্রাম

হলগার ত্রেৎসাক/এসি২৯ ডিসেম্বর ২০১৫

আন্দিজ পর্বতমালায় ইনকাদের গ্রামও একদিন জনশূন্য হয় পানির অভাবে৷ হিমবাহের বরফ ফুরোয়৷ পাহাড়ের উপরের মানুষজন উপত্যকায় নেমে আসেন৷ এই অবক্ষয় রোখার পন্থার খোঁজ চলেছে পেরুতে ৷

https://p.dw.com/p/1HUt1
Peru Gipfel des Huascaran
ছবি: picture alliance/blickwinkel/F. Neukirchen

একটি হিমবাহ রয়ে গেছে৷ এত উঁচুতে, পেরুর ইয়াউইয়স-কচাস ন্যাশনাল পার্কে আগে অনেক হিমবাহ ছিল, এখন সেগুলো উধাও হয়েছে৷ তা সত্ত্বেও রবেহিলডো তাইপের কাছে এখানকার প্রকৃতি অপরূপ৷ হিমবাহের হ্রদের পানি যতদিন না উধাও হচ্ছে, ততদিন চার হাজার মিটার উচ্চতায় এই মনোরম উপত্যকাটি রবেহিলডোর খুবই প্রিয়৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার জন্মানোর সময়েই এখানকার হিমবাহে কোনো বরফ ছিল না৷ শীতে আজও কখনো-সখনো বরফ পড়ে৷ ওপরে গিরিপথে বরফ পড়ে থাকে, কিন্তু শীত শেষ হলেই এখন যেরকম দেখাচ্ছে, সেরকম দেখায়৷''

নীচের উপত্যকায় রবেহিলডোর নিজের গ্রাম মিরাফ্লোরেস৷ প্রবীণরা বলেন, এখানে শীঘ্রই জলাভাব দেখা দিতে পারে৷ কেননা তারা পিতৃপুরুষের কাহিনি জানেন৷ ইতিমধ্যেই উপত্যকায় জীবনধারণ কঠিন হয়ে উঠছে৷ টুরিস্টরা আসেন বটে, কিন্তু বস্তুত এখানকার মানুষদের পেশা কৃষিকাজ৷ ওদিকে চাষবাস ক্রমেই অনিশ্চিত হয়ে উঠছে৷ বহু লোকে গ্রাম ছেড়েছে৷ রবেহিলডো নিজেও একবার বছর চারেকের জন্য গ্রাম ছেড়ে গিয়েছিলেন; রাজধানী লিমায় ওয়েল্ডিং-এর কাজ শিখেছিলেন৷ পরে তিনি গ্রামে ফিরে আসেন৷ তাঁর জীবনদর্শন হলো, ‘‘মানুষ যখন যায়, তখন একটা কিছু শিখতে যায়৷ আমি দূরে গিয়ে যা শিখেছি, তা আমি এখানে যারা ছোট, তাদের শেখাতে পারি, যাতে তারা আরো উন্নতি করতে পারে৷''

জলবায়ু বদলাচ্ছে

তা সত্ত্বেও রবেহিলডো একটি ব্যতিক্রম৷ একেবারে নীচে, আন্দিজ পর্বতমালার পাদদেশে, সেটা স্বচক্ষে দেখা যায়৷ এ ধরনের নতুন নতুন গ্রামে যারা থাকেন, তারা পাহাড় এলাকা থেকে পালিয়ে এসেছেন, কেননা সেখানে জলবায়ুর কোনো নিশ্চয়তা নেই৷ কাজেই তারা এখন শহরেই ভাগ্যের সন্ধান করতে পছন্দ করেন৷ নতুন বাসিন্দা মার্লেনে লাসারো বলেন, ‘‘অনেক কিছু বদলে গেছে৷ আগে যখন নিয়মিত বর্ষা হত, তখন যেরকম ফসল পাওয়া যেত, আজ তা পাওয়া যায় না৷ আজকাল হয়ত একবার বৃষ্টি হলো, তারপর মাসের পর মাস কোনো বৃষ্টি নেই৷ সব কিছু খুবই অনিশ্চিত৷''

ওপরে, মিরাফ্লোরেস গ্রামের কাছেও দেখা যায় যে, বহু চাষি ভিটেমাটি ছেড়ে পালিয়েছেন৷ পেরু সরকার জার্মান সহযোগিতায় এই প্রবণতা রোখার চেষ্টা করছেন৷ মাছের চাষ, পশুপালন, আলপাকা পশম, এ সব এখনও চলে৷ ছোট ছোট খেতগুলোয় নতুন করে লাঙল দেওয়ার আগে বছর দুয়েক ফেলে রাখা যায়৷ তবে কিছু নতুন সমস্যা দেখা দিয়েছে৷ মিরাফ্লোরেস গ্রামের বাসিন্দা ইল্ডা লারা কাস্তিয়া জানালেন, ‘‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এখানে শুঁয়োপোকা বেড়েছে, অসময়ে ঠান্ডা পড়ছে, ভু্ট্টায় পোকা ধরছে৷ এর ফলে শুঁটি কিংবা আলুর গাছগুলো মরে যাচ্ছে৷''

একেবারে ওপরে, চার হাজার মিটার উচ্চতায়, ইনকাদের গ্রাম উয়াকিস৷ পানি না থাকায় একশ’ বছর আগে গ্রামের বাসিন্দারা গ্রামটি ছেড়ে অন্যত্র যেতে বাধ্য হয়েছিলেন৷ মিরাফ্লোরেস গ্রামটির পত্তন সেই বাস্তুহারাদের হাতে৷ সে যাবৎ মানুষজনের আশঙ্কা যে, মিরাফ্লোরেস গ্রামেরও সেই দশা হতে পারে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান