1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বর্ণবাদী ছিলেন আইনস্টাইন!

১৫ জুন ২০১৮

কিংবদন্তী পদার্থবিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের ভ্রমণ ডায়েরির ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ হয়েছে৷ ডায়েরিতে বিভিন্ন দেশের মানুষ, বিশেষ করে চীনাদের সম্পর্কে তাঁর মনোভাবকে অনেকেই তীব্র বর্ণবাদী হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/2zcI6
Albert Einstein
ছবি: Imago/UIG

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসনে থাকার সময় আফ্রিকান-অ্যামেরিকানদের বিষয়ে শ্বেতাঙ্গদের বৈষম্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন আইনস্টাইন৷ এমন আচরণকে ‘ সাদা মানুষদের রোগ’ হিসেবেও বর্ণনা করেছিলেন তিনি৷

তবে এবার হয়তো তাঁর সম্পূর্ণ বিপরীত দিকটাও সবার সামনে উঠে আসতে যাচ্ছে৷ সম্প্রতি ইংরেজিতে অনূদিত ট্রাভেল ডায়েরিজ অব আলবার্ট আইনস্টাইন: দ্য ফার ইস্ট, প্যালেস্টাইন অ্যান্ড স্পেন, ১৯২২-১৯২৩ বইটিতে পাওয়া যাচ্ছে এমন ধারণা৷

আইনস্টাইনের এই ব্যক্তিগত ডায়েরিতে উনিশ শতকের বিশের দশকে এশিয়া সফরের সময় তাঁর বর্ণবাদী মনোভাব ফুটে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান৷ জার্মান ভাষায় লেখা এই ডায়েরি অনুবাদ করে প্রকাশ করেছে প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস৷

ডায়েরির এক জায়গায় মিশরের পোর্ট সাঈদে নেমে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের মানুষের সাথে সাক্ষাতের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন তিনি৷ বলেছেন, ‘‘মনে হচ্ছে, এদের সরাসরি নরক থেকে পাঠানো হয়েছে৷’’

কলম্বোতে অবস্থানের বর্ণনাও দিয়েছেন তিনি৷ বলেছেন, ‘‘এরা প্রচণ্ড নোংরাভাবে বসবাস করে, কাজ করে না বললেই চলে, চাহিদাও একেবারেই কম৷’’

অন্যান্য অনেক কিছুর মধ্যে হংকং ও সাংহাইয়ে প্রতিদিনকার জীবন সম্পর্কে খুঁটিনাটি লিখেছেন এই পদার্থবিদ৷ শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট-দুঃখ-বেদনার চিত্রও উঠে এসেছে তাঁর লেখনীতে৷ তবে পরিশ্রমী হিসেবে প্রশংসা করলেও এক জায়গায় চীনাদের ‘নোংরা ও স্বল্পবুদ্ধির’ জাতি হিসেবে বর্ণনা করেছেন আইনস্টাইন৷

গার্ডিয়ান বলছে, ভিন্ন সংস্কৃতির সম্মিলনে কী ধরনের জটিলতা তৈরি হতে পারে, সে সম্পর্কে আইনস্টাইনের ধারণা ছিল ঠিকই, কিন্তু তারপরও চীনের মানুষদের দেখতে গিয়ে তিনি তাঁর ইউরোপীয় দৃষ্টিভঙ্গীর বাইরে যেতে পারেননি৷

চীনের পুরুষ ও নারীর মধ্যে পার্থক্য খুবই অল্প বলে নিজের ধারণা প্রকাশ করেছেন তিনি৷ ডায়েরির এক জায়গায় তিনি বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন, ‘‘আমি জানি না, চীনের নারীদের মধ্যে কী এমন আছে, যা পুরুষদের এমনভাবে আকর্ষণ করে যে, তারা সন্তান উৎপাদন থেকে বিরত থাকতে পারে না৷’’

হংকং ভ্রমণের সময় এক জায়গায় তিনি লিখেছেন, ‘‘চীনারা অন্যান্য জাতির চেয়ে ওপরে উঠে গেলে সেটা খুব দুঃখের বিষয় হবে৷ এমন চিন্তা করলেও আমার দারুণ ভয় হচ্ছে৷’’

ডায়েরি প্রকাশের সাথে জড়িত সেফ রোসেনক্রান্স এই অংশটি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন৷ তাঁর মতে, ‘‘আইনস্টাইন অন্য একটি জাতিকে হুমকি হিসেবে বিবেচনা করতেন, যা বর্ণবাদী আচরণেরই বহিঃপ্রকাশ৷’’

প্রতিক্রিয়া

চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে গার্ডিয়ানের এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে৷ তবে এতে চীনা কর্তৃপক্ষের কোনো মন্তব্য দেয়া হয়নি৷ রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো বক্তব্য না এলেও, পাঠকেরা এ নিয়ে নিজেদের অসন্তোষের কথা ঠিকই জানিয়েছেন৷

একজন মন্তব্য করেছেন, ‘‘একজন বিজ্ঞানী হিসেবে আইনস্টাইন বিখ্যাত ছিলেন৷ কিন্তু অন্যদের প্রতি সম্মান না দেখিয়ে মানুষ হিসেবে তিনি নিজের যোগ্যতা হারিয়েছেন৷’’

এই মন্তব্যকারীকে সমর্থন জানিয়ে আরেকজন লিখেছেন, ‘‘আইনস্টাইনের বক্তব্য প্রচণ্ড বর্ণবাদী৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে হলে তিনি অবশ্যই এমন কিছু লিখতেন না৷ এ কারণেই সম্ভবত আইনস্টাইন ডায়েরি প্রকাশে অনীহা দেখিয়েছিলেন৷’’

মিয়াও তিয়ান ও লি শিতাও/এডিকে

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য