1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বলগাহীন ব্রেক্সিট রুখতে শেষ প্রচেষ্টা

১ এপ্রিল ২০১৯

সোম, মঙ্গল ও বুধবার ব্রিটিশ সংসদে ব্রেক্সিট নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভোটাভুটির মাধ্যমে কোনো এক সমাধানসূত্র উঠে আসতে পারে৷ তবে তার মূল্য হিসেবে সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে৷ ১০ই এপ্রিলের মধ্যে ফয়সালা করতেই হবে৷

https://p.dw.com/p/3G03D
ছবি: picture-alliance/AP Photo/House of Commons/M. Duffy

গত সপ্তাহে ব্রিটেনের সংসদে ব্রেক্সিটকে কেন্দ্র করে চরম অচলাবস্থার পর চলতি সপ্তাহে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বোঝাপড়ার প্রশ্নে ঐক্য অর্জন করতে শেষ চেষ্টা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার ও সংসদ৷ এই প্রচেষ্টা বিফল হলে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট অথবা ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ বিলম্ব অনিবার্য হয়ে পড়বে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ মোটকথা দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে ব্রিটেনকে তার অবস্থান স্পষ্ট করে জানাতে হবে৷ আগামী ১০ই এপ্রিল ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে সেই সিদ্ধান্ত পেশ করতে হবে৷

ব্রিটেনের সংসদ গত সপ্তাহে সরকারের হাত থেকে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার রাশ কেড়ে নেবার চেষ্টা চালিয়েছিল৷ ব্রেক্সিট চুক্তির মোট ৮টি বিকল্প নিয়ে ভোটাভুটি করেও কোনো একটির পক্ষে ঐকমত্য অর্জন করা সম্ভব হয়নি৷ তার মধ্য থেকে সম্ভবত দুটি প্রস্তাব নিয়ে সোমবার সংসদে আবার ভোটাভুটি হবার কথা৷ এই ‘ইন্ডিকেটিভ' ভোট প্রতীকী হওয়া সত্ত্বেও কোনো একটি প্রস্তাবের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা সম্ভব হলে সরকারের উপর সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য চাপ বাড়বে৷ ইইউ-র শুল্ক কাঠামোয় স্থায়ীভাবে থেকে যাবার প্রস্তাব অনুমোদনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷

বলা বাহুল্য, কট্টর ব্রেক্সিটপন্থিরা এমন ‘সফট' ব্রেক্সিটের ঘোর বিরোধী৷ তারা বরং অন্য কোনো বিকল্পের অভাবে অবিলম্বে চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট কার্যকর করার পক্ষে৷ তাদের মনে এই আশঙ্কা কাজে লাগিয়ে কোণঠাসা প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে মঙ্গলবার চতুর্থবারের মতো ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদনের চেষ্টা চালাতে পারেন৷ তবে তার জন্য স্পিকার জন বার্কো-র অনুমোদন পেতে হবে৷ একই সংসদীয় অধিবেশনে একই প্রস্তাব বার বার পেশ করার বিরুদ্ধে তিনি এর আগেও আপত্তি তুলেছিলেন৷ শেষ পর্যন্ত তিনি সম্মতি দিলে এবং ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদিত হলে ব্রিটেন নির্বিঘ্নে ও নির্ধারিত তারিখেই ইইউ ত্যাগ করতে পারবে৷

কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর শেষ চেষ্টা ব্যর্থ হলে সংসদ আইন প্রণয়ন করে তাঁকে ‘সফট' ব্রেক্সিট কার্যকর করতে বাধ্য করতে পারে৷ অর্থাৎ সোমবার কোনো একটি বিকল্প সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে বুধবারই সংসদ সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার উদ্যোগ নিতে পারে৷ সে ক্ষেত্রে টেরেসা মে-কে ব্রাসেলসে গিয়ে ইইউ-র কাছে নতুন এই বিকল্প মেনে নেবার অনুরোধ করতে হবে৷

প্রধানমন্ত্রী বাধ্য হয়ে ‘সফট' ব্রেক্সিটের পথে অগ্রসর হলে সরকার ও মন্ত্রিসভার স্থায়িত্ব অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে৷ সরকারের মধ্যে কট্টর ব্রেক্সিটপন্থিরা এমন হুমকি দিয়ে চলেছেন৷ সানডে টেলিগ্রাফ সংবাদপত্রের সূত্র অনুযায়ী মন্ত্রী হিসেবে আন্দ্রেয়া লিডসম এরই মধ্যে ১০ জন মন্ত্রীর স্বাক্ষরসহ একটি চিঠি প্রস্তুত করেছেন৷ তাতে ২২শে মে-র পর ব্রেক্সিটের ক্ষেত্রে কোনো রকম বিলম্ব না চাওয়ার দাবি জানানো হয়েছে৷ তাছাড়া শুল্ক ইউনিয়নের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন টোরি দলের নির্বাচনি ইশতাহারের প্রতিও মনোযোগ আকর্ষণ করা হয়েছে৷ উল্লেখ্য, গত নির্বাচনে ব্রেক্সিটের পক্ষে যুক্তি হিসেবে টোরি দল অন্যান্য দেশের সঙ্গে আকর্ষণীয় বাণিজ্য চুক্তির সুবিধা তুলে ধরেছিল৷ 

ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট জঁ ক্লোদ ইয়ুংকার রবিবার এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেন, ইইউ ব্রেক্সিটকে কেন্দ্র করে ধৈর্য হারাচ্ছে৷ তিনি অবিলম্বে এই প্রশ্নে ব্রিটেনে ঐকমত্যের আহ্বান জানিয়েছেন৷

এসবি/জেডএইচ (এএফপি, রয়টার্স)