1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলা সিরিয়ালের সংকট কি মিটবে?‌

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
২৭ আগস্ট ২০১৮

শেষ পর্যন্ত স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির হস্তক্ষেপে প্রায় এক সপ্তাহের কর্মবিরতি উঠে গেল বাংলা টিভি সিরিয়ালে৷ কিন্তু সমস্যা মেটার সম্ভাবনা কতটা?‌

https://p.dw.com/p/33qXK
ছবি: DW/S. Bandopadhyay

প্রায় কান্নাকাটি পড়ে গিয়েছিল বাংলার ঘরে ঘরে৷ টিভি সিরিয়াল বন্ধ!‌ রোজ সন্ধেয় যেসব মনগড়া কাহিনি, অলিক সম্পর্কের টানাপোড়েন, অলস কল্পনার স্বপ্নজাল, আর ইচ্ছে পূরণের কাহিনিতে বুঁদ হয়ে থাকেন বাড়ির মেয়ে-উরা, সেই টিভি-জীবনের ধারাবাহিকতা আচমকা থমকে গিয়েছিল৷ টান পড়েছিল নিত্য বিনোদনের খোরাকে৷ পাশাপাশি কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন এই বিনোদন বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত বহু শিল্পী, কলাকুশলী, কারিগরি কর্মীরা৷ টানা ৪-৫ দিন শুটিং বন্ধ থাকায় তৈরি হচ্ছিল না কোনো নতুন এপিসোড৷ পুরনোগুলোকেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখানো হচ্ছিল৷ ফলে সন্ধে ৭টা থেকে রাত ১০টার যে প্রাইম টাইম স্লট, সেগুলো উলটে হতাশা ছড়াচ্ছিল ঘরে ঘরে৷

মূল সমস্যা ছিল বাংলা টিভি সিরিয়ালের শিল্পী, কলা-কুশলীদের সঙ্গে প্রযোজকদের প্রত্যক্ষ সংঘাত৷ প্রধান ইস্যু, সময়ে পারিশ্রমিক না পাওয়া৷ বেশিরভাগই চুক্তিভিত্তিক কাজ, যেখানে প্রতি মাসের একটা নির্দিষ্ট সময়ে পারিশ্রমিক পাওয়ার কথা, যেটা পাওয়া যাচ্ছিল না৷ বারবার তাগাদা দিয়েও এই ব্যাপারে প্রযোজকদের দায়িত্বশীল করতে না পেরে শিল্পীরা শেষপর্যন্ত কর্মবিরতির মতো চূড়ান্ত পথ বেছে নেন৷ সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, বকেয়া টাকা না পেলে কেউ আর কাজ করবেন না৷

এর পাশাপাশি উঠে আসে আরো কিছু প্রাসঙ্গিক ইস্যু৷ যেমন খরচ বাঁচাতে প্রযোজকরা সবসময়ই যত বেশিক্ষণ সম্ভব কাজ করিয়ে একসঙ্গে অনেক এপিসোডের কাজ এগিয়ে রাখার চেষ্টায় থাকেন৷ কিন্তু সেটা শারীরিকভাবে অত্যন্ত কষ্টকর৷ অভিনেতা, কলাকুশলী, সবার পক্ষেই৷ যে সমস্যার কথা ডয়চে ভেলেকে জানালেন চলচ্চিত্র সমালোচক অনিরুদ্ধ ধর৷

অনিরুদ্ধ ধর

তিনি বলেন, ‘‘অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সঙ্গে দিনে ৮ ঘণ্টা কাজ করার একটা চুক্তি ছিল৷ কিন্তু কার্যত সেটা ১২-১৩-১৪ ঘণ্টা অবধি টানা হচ্ছিল৷’’ তার পরেও প্রযোজকরা সময়মতো পারিশ্রমিকের টাকা দিচ্ছিলেন না বলে জানান অনিরুদ্ধ৷ এ নিয়ে সংঘাতের জেরেই টিভি সিরিয়ালের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বলেও জানান তিনি৷

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, যিনি নিজেও অবসর সময়ে টিভি সিরিয়ালের একজন অনুরাগী দর্শক, তিনি বাধ্য হয়েই এই অচলাবস্থা কাটাতে উদ্যোগী হন৷ রাজ্য সচিবালয়ে গত শুক্রবার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে বৈঠকে ডেকে এই কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার অলিখিত নির্দেশ দেন তিনি৷ তবে অভিনেতা ও কলাকুশলীদেরই পক্ষ নেন মুখ্যমন্ত্রী৷ অবিলম্বে সব বকেয়া পাওনা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন প্রযোজকদের৷ এবং ভবিষ্যতে যাতে আবারও এরকম পরিস্থিতি না তৈরি হয়, সেজন্য মুখ্যমন্ত্রী একটি কমিটি গড়ে দিয়েছেন৷ পরিচালক-অভিনেতা এবং শিল্পী সংসদের অন্যতম প্রমুখ সদস্য অরিন্দম শীল ডয়চে ভেলেকে জানালেন, শিল্পী, কলাকুশলী এবং সিনেমা ও টিভি শিল্পের অন্যান্য গিল্ডের একজন করে প্রতিনিধি থাকছেন ওই কমিটিতে, যার মাথায় আছেন বাংলা ছবির বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়৷ সরকারের পক্ষ থেকে এই কমিটির বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস৷ এই কমিটি নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে বৈঠকে বসবে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে, রিপোর্ট দেবে সরকারকে৷

শুক্রবারের ওই বৈঠকের পরদিন থেকেই একটু একটু করে সরগরম হয়েছে টালিগঞ্জের স্টুডিওপাড়া৷ ফের শুরু হয়েছে শ্যুটিং, চালু হয়েছে টিভি সিরিয়াল, হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে বিনোদনপ্রিয় বাঙালি সমাজ৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য