1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশে এক বছরে ১৫৪ সংখ্যালঘুকে হত্যা, ধর্ষণের শিকার ৩৯

৬ জানুয়ারি ২০২৩

২০২২ সালে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ১৫৪ জনকে হত্যা করা হয়েছে এবং ৩৯জন নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে৷ এক সংবাদ সম্মেলনে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার এসব তথ্য তুলে ধরে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট৷

https://p.dw.com/p/4Lody
ছবি: Rahul Das

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক৷

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত এক বছরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অন্তত ৮৯ হাজার ৯৯০ একর জমি দখল করা হয়েছে৷ বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে ৫৭২টি পরিবারকে, দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে ৪৪৫টি পরিবারকে৷ এছাড়া সারা বছরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মোট ২২০ কোটি ৮৯ লাখ টাকার সমপরিমাণ আর্থিক ক্ষতি করা হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়৷ 

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, গত বছরের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে৷ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য ও সারা দেশে থাকা তাদের কর্মীদের দেওয়া তথ্য সংগ্রহের পর সেসব যাচাই-বাছাই করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানান গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক৷

লিখিত বক্তব্যে গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, গত এক বছরে দেশের হিন্দুসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ১৫৪ জনকে হত্যা করা হয়েছে৷ হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে ৮৪৯ জনকে, হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে ৪২৪ জনকে এবং আহত করা হয়েছে ৩৬০ জনকে, নিখোঁজ রয়েছেন ৬২ জন, চাঁদাবাজি হয়েছে ২৭ কোটি ৪৬ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা৷ এ সময়ে সংখ্যালঘুদের মোট ২২০ কোটি ৮৯ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে৷

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সময় পরিবার ও মন্দির লুট হয়েছে ৩১৯টি, বসতবাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে ৮৯১টি, অগ্নিসংযোগ হয়েছে ৫১৯টি এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর হয়েছে ১৭৩টি৷

ঘরবাড়ি দখল হয়েছে ৫৭টি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ৫০টি এবং মন্দিরের ভূমি দখল হয়েছে ৫১টি৷ দখলের তৎপরতা ৯৮৪ একর ১২ শতাংশ৷ বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে ৫৭২টি পরিবারকে৷ উচ্ছেদের চেষ্টা করা হয়েছে ৩ হাজার৬৯৪টি পরিবারকে এবং  উচ্ছেদের হুমকি দেওয়া হয়েছে ৩৫ হাজার ৮১৮টি পরিবারকে৷

দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে ৪৪৫টি পরিবারকে, উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশত্যাগের হুমকির মুখে ১৫ হাজার ১১৫টি পরিবার এবং নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে ১ লাখ ৯৫ হাজার ৯৯১টি পরিবার৷ সংঘবদ্ধ হামলা ৯৫৩টি৷ মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ১২৮টি, প্রতিমা ভাঙচুর ৪৮১টি, প্রতিমা চুরি ৭২টি৷ অপহরণ করা হয়েছে ১২৭ জনকে এবং অপহরণের চেষ্টা করা হয়েছে ২৭ জনকে৷

হিন্দু মহাজোটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৩৯ জন নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে৷ তাদের মধ্যে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২৭ জন৷ ধর্ষণের পর ১৪ জনকে হত্যা করা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে৷ তাতে বলা হয়েছে, ৫৫ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে, ১৫২ জনকে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে৷ ধর্মান্তরের চেষ্টা করা হয়েছে ৪০ জনকে৷

সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের ঘটনা ঘটেছে ১২৭টি৷ মিথ্যা মামলায় আসামি গ্রেপ্তার, বরখাস্ত, চাকরিচ্যুত করা এবং জেল-জরিমানার শিকার হয়েছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৭৯১ জন৷

১ হাজার ৬৫৭টি পরিবারকে অবরুদ্ধ করা হয়েছে৷ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ‘অপবিত্রকরণের' ঘটনা ঘটেছে ১৭৯টি এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে বাধা দেওয়ার ঘটনা ১২৯টি৷ ‘ধর্মীয়ভাবে নিষিদ্ধ' গরুর মাংস খাইয়ে ৩৩৩ জনকে ‘অপবিত্রকরণসহ' একটি পরিবারের ওপর গোমাংস নিক্ষেপও করা হয়েছে৷

তিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও এ দেশের হিন্দু সম্প্রদায় কখনোই  স্বাধীনতার স্বাদ লাভ করেনি৷''

এ সময় বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের পক্ষ থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা ও নির্যাতন নিরোধকল্পে এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব সুনিশ্চিত করতে জাতীয় সংসদে ৬০টি সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা, সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা এবং একটি উপরাষ্ট্রপতি ও উপপ্রধানমন্ত্রীর পদ সৃষ্টি করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত রাখার দাবি জানানো হয়৷

এনএস/এসিবি (প্রথম আলো) 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য