1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
স্বাস্থ্য

বাবা-মায়ের বদভ্যাসই সন্তানের ডায়াবেটিসের কারণ?

১৭ অক্টোবর ২০১৭

অতিরিক্ত ওজন ও ডায়াবেটিস আজকের প্রজন্মের জন্য একটা বড় সমস্যা৷ কিন্তু এর জন্য কি খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারাই দায়ী? নাকি সেই সমস্যা কেউ উত্তরাধিকারসূত্রে জিনের মাধ্যমেও পেতে পারে? জার্মান বিজ্ঞানীরা এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন৷

https://p.dw.com/p/2luyv
Deutschland Insulinspritze
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Kalaene

ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী জীবনযাত্রা, না জিন?

এটা একটা মহামারির মতো৷ গোটা বিশ্বে প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজন টাইপ ২ ডায়াবেটিসে ভুগছে৷ এই প্রবণতা দ্রুত বেড়ে চলেছে৷ অতিরিক্ত ওজন ও অনিয়মিত জীবনযাত্রা এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে৷ তবে বিজ্ঞানীদের অনুমান, এর পেছনে অন্য কারণও কাজ করছে৷

মিউনিখ শহরে হেল্মহলৎস সেন্টারে গবেষকরা সেই রহস্য সমাধানের চেষ্টা করছেন৷ তার জন্য এমন এক পরীক্ষা চালাতে হবে, যার পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি তাঁদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে৷ এমন পরীক্ষার জন্য ইঁদুর সবচেয়ে উপযুক্ত প্রাণী৷ তাদের মেটাবলিজম অনেকটা মানুষের মতোই কাজ করে৷

মোটা ও রোগা ইঁদুর ঠিক মানুষের মতোই রোগে ভোগে৷ এমনকি তাদের ডায়াবেটিসও হয়৷ কিছু মোনোভুলার যমজের মতো এই ইঁদুরদের শরীরে একই জিন রয়েছে৷ অর্থাৎ তাদের মধ্যে পার্থক্য থাকলে তার কারণ জেনেটিক হতে পারে না৷

গবেষকরা ৬ সপ্তাহ ধরে ইঁদুরদের হাই-ক্যালোরি খাদ্য দিচ্ছেন৷ মানুষের মতই এমন ত্রুটিপূর্ণ খাদ্য খেয়ে তারা মোটা হয়ে যাচ্ছে এবং ডায়াবেটিসের আগের পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে৷ অনুমান করা হচ্ছে, ইঁদুররা এই বৈশিষ্ট্য পরবর্তী প্রজন্মের ঘাড়ে চাপিয়ে দেবে৷

জিনের মাধ্যমে এমন হস্তান্তর একমাত্র ডিম্বাণু ও বীর্যের মাধ্যমে ঘটতে পারে৷ স্থূলকায় বাবা-মার অন্য সব প্রভাব এড়াতে কৃত্রিম প্রজননের জন্য বিজ্ঞানীরা তাদের ডিম্বাণু ও শুক্রাণু সংগ্রহ করছেন৷

২৪ ঘণ্টা পর ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন প্রক্রিয়ায় ডিম্বকোষের বিভাজন ঘটে গেছে৷ গবেষকরা ইঁদুরের ভ্রূণ সারোগেট মায়ের শরীরে প্রতিস্থাপন করছেন৷এই সারোগেট মায়েদের স্বাস্থ্য যথেষ্ট ভালো এবং তারা রোগা৷ তারা শুধু তাদের গর্ভে ইঁদুরশিশু ধারণ করে না, জন্মের পর শিশুদের দেখাশোনাও করে৷ ইঁদুর শিশুদের প্রতিপালনের কাজে তাদের মোটা বাবা-মায়েদের আর কোনো ভূমিকা থাকে না৷ এমনকি খাদ্যাভ্যাসের ক্ষেত্রেও তারা ভুল আদর্শ হয়ে উঠতে পারে না৷ এ বিষয়ে ইয়োহানেস বেকার্স বলেন, ‘‘বাবা-মার সঙ্গে সামাজিক স্তরে যোগাযোগের কারণে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তনের সম্ভাবনা যে নেই, সে বিষয়ে আমরা নিশ্চিত হতে পারলাম৷ জরায়ু অথবা মায়ের দুধ পান করার প্রক্রিয়াও কোনো প্রভাব ফেলে না৷ পাকস্থলির ব্যাকটেরিয়াও এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে হস্তান্তর হয় না৷ অর্থাৎ এ সব থেকে বোঝা যাচ্ছে, যে পরবর্তী প্রজন্মে যে পরিবর্তন ঘটছে, তা ‘জার্ম ট্র্যাক সেল'-এর তথ্যের উপর নির্ভর করে৷''

গবেষকরা এই ইঁদুর শিশুদের বিকাশের উপর কড়া নজর রাখছেন এবং রোগা বাবা-মায়েদের সন্তানদের সঙ্গে তাদের তুলনা করছেন৷ সব শিশুদেরই একই খাবার দেওয়া হচ্ছে৷

এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, যে এই ইঁদুরদের  জিনগতভাবে প্রায় একই কাঠামো রয়েছে৷ একই পরিবেশে তারা বড় হয়েছে৷ একমাত্র তফাত হলো, তাদের আসল বাবা-মায়েরা হয় মোটা অথবা রোগা৷ অথচ এই বিষয়টিই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷মোটা ইঁদুরদের বংশধররা রোগা ইঁদুরদের বংশধরদের তুলনায় অনেক দ্রুত ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলো৷ অর্থাৎ নিশ্চয় বংশানুক্রমেই তারা এই প্রবণতা পেয়েছে৷ কিন্তু বাবা-মায়েরা ভুল খাবার খেয়ে এমন সমস্যা সৃষ্টি করেছে৷ বাবা এবং মা ডায়াবেটিস ও অতিরিক্ত ওজনের প্রবণতা তাদের সন্তানদের শরীরে হস্তান্তর করেছে৷ ত্রুটিপূর্ণ খাদ্য জিনের রেগুলেশন পরিবর্তন করে পরবর্তী প্রজন্মের শরীরে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে৷ অতএব ডায়াবেটিসের দ্রুত প্রসারের কারণ বোঝা যায়৷

এফা শুলটেস/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান