1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বার বার স্মার্টফোনের দিকে তাকানো কি ভালো?

১৬ এপ্রিল ২০১৯

আধুনিক শহুরে জীবনযাত্রায় কোনো বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া ক্রমশঃ কঠিন হয়ে পড়ছে৷  একটু সময় পেলেই চোখ চলে যায় স্মার্টফোনের দিকে৷ বিজ্ঞানীরা এই আচরণ বিশ্লেষণ করে ‘স্বাভাবিক' জীবনযাত্রার পথ বাতলে দিচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/3Glh3
Partnerschaft - Internetsucht
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Wuestenhagen

আধুনিক যুগে মানুষের জীবনযাত্রা অত্যন্ত ব্যস্ত হতে পারে৷ এক সমীক্ষা অনুযায়ী জার্মানির অর্ধেক মানুষ নিজেদের সবসময় ব্যস্ত মনে করেন৷ আমাদের মতো অনেকে যখন বাসের অপেক্ষায়  হাতে একটু সময় পাই, তখন স্মার্টফোন সেই সময় গ্রাস করে ফেলে৷

সাম্প্রতিক এক   গবেষণা অনুযায়ী আমরা দিনে গড়ে ৮৮ বার ফোনের দিকে তাকাই৷ তথ্য সংগ্রহ করি, বন্ধুদের সঙ্গে চ্যাট করি, সংবাদ পড়ি৷ জার্মানির মানুষ দিনে গড়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা অনলাইন থাকেন৷ তরুণ প্রজন্ম এমনকি দিনে সাত ঘণ্টা ফোন ও অন্যান্য মোবাইল ডিভাইস নিয়ে ব্যস্ত থাকে৷ স্নায়ুবিজ্ঞানী হেনিং বেক অবশ্য বাসের জন্য অপেক্ষার সময় কোনোমতেই ফোন বার করেন না৷ এমন সিদ্ধান্তের পেছনে কারণও রয়েছে৷

বেশিরভাগ মানুষ কেন সারাক্ষণ নিজেদের ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকেন? হেনিং বেক মনে করেন, ‘‘যা কিছু নতুন, তার থেকে বেশি আকর্ষণীয় কিছু হতে পারে না৷ জন্ম থেকেই আমাদের মধ্যে সহজাত কৌতূহল রয়েছে৷ বিস্ময়ের সব কারণ আমরা ভালোবাসি৷ আধুনিক ফোন সত্যি সেই চাহিদা মেটায়৷''

হেনিং বেক ফ্রাংকফুর্ট শহরে এক থিংক ট্যাংক গোষ্ঠীর সঙ্গে মিলিত হয়েছেন৷ এই গোষ্ঠী ভবিষ্যৎ প্রবণতা সম্পর্কে গবেষণা চালিয়ে বিভিন্ন কোম্পানিকে পরামর্শ দেয়৷ সাংস্কৃতিক নৃতত্ববিদ হিসেবে লেনা পাপাসাবাস আমাদের জীবনে ডিজিটাল মিডিয়ার প্রভাব সম্পর্কে এক ওয়ার্কশপ আয়োজন করেছেন৷ লেনা বলেন, ‘‘ব্যবহারকারী সাড়া পাবার আশায় এমনটা করেন বলে আমার বিশ্বাস৷ আপনি জানতে চান, কেউ কি আমাকে কিছু লিখেছে, আমার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে? আমি কি নতুন লাইক পেয়েছি? সবাই সাড়া পেতে চায়৷ এমন সাড়া অন্য কেউ, চারিপাশের জগত, এমনকি নিজের সঙ্গে নিজের সম্পর্ক নিশ্চিত করে৷ কেউ কোথাও আমাকে দেখছে, শুনছে এবং তার ফলে আমি নিজেকে ঠিকমতো জীবিত বলে মনে করছি৷''

ফোন হাতে নেবার পেছনে আরও কিছু উদ্দেশ্য রয়েছে৷ একটি কারণ হলো, আমরা একঘেয়েমি পছন্দ করি না৷ অ্যামেরিকায় এক গবেষণা এই সত্য তুলে ধরেছে৷ বিজ্ঞানীরা কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবীকে একটি ঘরে ছেড়ে দিয়েছিলেন৷ সেখানে তাদের এমন যন্ত্রের সামনে বসানো হয়েছিল, যা মৃদু বৈদ্যুতিক শক দেয়৷ মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে পুরুষদের দুই-তৃতীয়াংশ ও নারীদের এক-চতুর্থাংশ যন্ত্রের বোতাম টিপেছিলেন৷ লেনা পাপাসাবাস এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘অনেক মানুষ সর্বত্র তাঁদের মোবাইল ফোন নিয়ে যান, এমনকি অন্য ঘরে গেলেও সেটি সঙ্গে থাকে৷ এমনকি ফোন সঙ্গে না থাকলেও তার ভাইব্রেশন অথবা রিং টোন কল্পনা করেন৷ ফলে তাদের কিছুটা বাতিকগ্রস্ত বলা চলে৷''

অথচ কিছু না করাই অনেক বেশি ফলদায়ক হতে পারে৷ কারণ জীবনযাত্রার গতি কমিয়ে আনলেই মস্তিষ্ক সৃজনশীল হবার সুযোগ পায়৷ সে সময়েই সেরা আইডিয়া মাথায় আসে৷

দুই বিশেষজ্ঞই মনে করেন, যে মাইন্ডফুলনেস বা মনোযোগ ডিজিটাল যুগে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে৷ হেনিং বেক বলেন, ‘‘খাবার খেলে তা হজম করতে শরীরের কিছু সময় লাগে৷ লাগাতার খেয়ে গেলে আমার শরীর ফেটে যেত৷ তথ্যের ক্ষেত্রেও বিষয়টি এক৷  মস্তিষ্কেরও ভেবে দেখার, চিন্তা করার সময় লাগে, অগ্রাধিকার স্থির করতে হয়৷

সে কারণেই হেনিং বেক বাসের জন্য অপেক্ষা করার সময় ফোন পকেটেই রাখেন৷ এভাবে তিনি তাজা অভিজ্ঞতাগুলি ‘হজম' করার সুযোগ পান৷

সিগরিড লাউফ/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান