1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাবা-মেয়ের আত্মহত্যা

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২ মে ২০১৭

গাজীপুরে ট্রেনের নীচে বাবা-মেয়ের আত্মহত্যার ঘটনার পেছনে আছে স্থানীয় সমাজপতিদের লোভ এর পুলিশ প্রশাসনের অবহেলা৷ বিচার না পেয়েই যে বাবা তাঁর ১০ বছরের ‘পালিত' মেয়েকে নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন, তা এখন স্পষ্ট৷

https://p.dw.com/p/2cEwf
Symbolbild Kindesmisshandlung Bestrafung
ছবি: picture alliance/dpa/P. Pleul

২৯ এপ্রিল সকালে হযরত আলী এবং তাঁর মেয়ে আয়েশা (১০) গাজীপুরের শ্রীপুর রেল স্টেশনের দক্ষিণ পাশের আউটার সিগন্যালের কাছে ট্রেনের নিচে কাটা পড়েন৷ তবে তার বেশ আগে থেকেই হযরত আলী ট্রেন লাইনের কাছে য়েকে নিয়ে অবস্থান করেন৷ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় এ এন ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষক জুয়েনা আক্তার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমি হঠাৎ দেখলাম লোকটি মেয়েটিকে কাঁধে নিয়ে রেল লাইনের ওপর বসে পড়ল এবং লাইনের ওপর মাথা দিল৷ তারপর তাদের ওপর দিয়ে রেলগাড়ি চলে গেল৷ আমি চিৎকার করেছি৷ কিন্তু তখন কী করব ভেবে পাইনি৷''

তিনি বলেন, ‘‘ট্রেন চলে যাওয়ার পর আরো লোকজন আসে৷ ততক্ষণে শেষ হয়ে গেছে৷ সকাল ৯টার দিকে ঘটনা ঘটে৷''

Jwena Akhtar - MP3-Stereo

নিহত হযরত আলীর স্ত্রী হালিমা বেগম সাংবাদিদের জানান, ‘‘কয়েক মাস আগে ফারুক নামের এক বখাটে তার মেয়ে আয়েশাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে৷ স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল হোসেন এর বিচারের দায়িত্ব নেন৷ কিন্তু কোনো মীমাংসা ছাড়াই তিনি বিষয়টি ধামাচাপা দেন৷ আর এতেই তার স্বামী মেয়েকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়েছেন৷''

স্থানীয় সাংবাদিক অপূর্ব রায় ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এ নিয়ে থানায় জিডিও করা হয়েছিল৷ কিন্তু পুলিশ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি৷''

তবে শ্রীপুর থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান দাবি করেন, ‘‘আগে এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি৷ অভিযুক্ত ইউপি সদস্যকে আটক করা হয়েছে৷ আর ফারুককে আটকের চেষ্টা চলছে৷''

Apurba - MP3-Stereo

অপূর্ব রায় আরো জানান, ‘‘এই পরিবারটির ওপর গত কয়েকমাসে নানা ধরণের নির্যাতন হয়েছে৷ ফারুকের অপরাধের বিচার চেয়ে তারা পাননি৷ উল্টো তাদের তিনবিঘা জমির ওপর নজর পড়েছিল ইউপি সদস্যসহ আরো কয়েকজনের৷ তারাই মূলত পরিবারটিকে নানাভাবে হেনস্তা করছিল৷ তাদের বাড়ির গরুও চুরি করা হয়৷ তাদের বাড়ি থেকে চলে যাওয়ারও হুমকি দেয়া হয়েছে কয়েকবার৷'' তিনি জানান, ‘‘বিচার পেতে তারা দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছেন, বিচার পাননি৷ আর এই বিচারহীনতাই হয়তো তাদের আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিয়েছে৷''

পুলিশ ইউপি সদস্য আবুল হোসেনকে আটক করলেও আত্মহত্যার নেপথ্যে থাকা ফারুককে এখনো আটক করতে পারেনি৷এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী স্কুল শিক্ষক জুয়েনা আক্তার জানান, ‘‘ট্রেনের নীচে ঝাঁপ দেয়ার আগে লোকটি অনেকক্ষণ ঘার গুঁজে বসেছিলেন৷ তার চোখে-মুখে ছিল হতাশা৷''