1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিজেপি-কে ভোট নয়, কলকাতায় আবেদন কৃষক নেতাদের

গৌতম হোড় নয়াদিল্লি
১৫ মার্চ ২০২১

দিল্লির সীমানায় কৃষকরা এখনো বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তার ফাঁকে নেতারা গেলেন পশ্চিমবঙ্গে। তাদের আবেদন, বিজেপি-কে ভোট দেবেন না।

https://p.dw.com/p/3qdvH
কলকাতায় এই মিছিলে কৃষক নেতারাও যোগ দিয়েছিলেন। ছবি: Dipayan Bose/Zumapress/picture alliance

সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম, আসানসোল, কলকাতায় ঘুরে বিজেপি-র বিরুদ্ধে ভোট দেয়ার জন্য আবেদন জানালেন কৃষক আন্দোলনের নেতারা। রাকেশ টিকায়েত, যোগেন্দ্র যাদব, মেধা পাটকর, বলবীর সিং রাজেন্দ্রওয়ালরা জনসভা করেছেন, বৈঠক করেছেন, মহাপঞ্চায়েত করেছেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা একটাই আবেদন জানিয়েছেন, বিজেপি-কে ভোট দেবেন না। কারণ, বিজেপি কৃষকদের দাবি মানছে না। তারা তিনটি কৃষি আইন বাতিল করছে না। তারা ন্যূনতম সংগ্রহ মূল্যকেও আইনি করছে না।

তারা পশ্চিমবঙ্গে নির্দিষ্ট করে কোনো দলকে ভোট দেয়ার কথা বলেননি। রাজ্যে বিজেপির বিরোধী দল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস এবং বামেদের নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত মোর্চা। কংগ্রেস ও আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট এই জোটের শরিক। সিপিএমের কৃষক সংগঠন দিল্লির আন্দোলনের সঙ্গে আছে। কৃষক ফ্রন্টের নেতা হান্নান মোল্লা কৃষক আন্দোলনের সাত সদস্যের স্টিয়ারিং কমিটিতেও আছেন। কিন্তু শনি ও রোববার নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুর, কলকাতায় তাকে বা সিপিএমের নেতা-কর্মীদের দেখা যায়নি।

তার কারণ, এই সফরের আয়োজন করেছিল কলকাতার কয়েকটি গুরুদ্বারের সদস্য। তাদের মধ্যে তৃণমূলের প্রভাব রয়েছে। হান্নান মোল্লা ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, মোট ৫০০টি কৃষক সংগঠন আন্দোলনের সঙ্গে আছে। সেখানে একটাই সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সব রাজ্যে কৃষক নেতারা যাবেন। তারা বিজেপি-র বিরুদ্ধে কথা বলবেন। এর মধ্যে নির্বাচনের ঘোষণা হয়ে গেছে। তাই যে রাজ্যগুলিতে ভোট আসন্ন সেখানে গিয়ে তারা বিজেপি-র বিরুদ্ধে ভোট দেয়ার কথা বলবেন। কোনো দলকে ভোট দেয়ার কথা বলবেন না। পশ্চিমবঙ্গে এসে তারা ঠিক সেটাই করেছেন। হান্নান মোল্লার যুক্তি, ''শনি ও রোববারের সভার আয়োজক ছিলেন অন্যরা। সেখানে আমি বা আমার দলের কেউ আমন্ত্রিত ছিলাম না।  তাই যাইনি। কিন্তু যারা গিয়েছিলেন, তারা সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কথা বলেছেন। তার বাইরে যাননি।'' ফলে পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে কৃষক নেতাদের ঐক্যে যে কিঞ্চিত চিড় ধরেছে, সেটা বোঝা যাচ্ছে।

এই কৃষক নেতারা যে পশ্চিমবঙ্গে গেলেন, বিজেপি-র বিরুদ্ধে ভোট দেয়ার কথা বললেন, তাতে কার লাভ হবে? পশ্চিমবঙ্গের ভোটে কি আদৌ তারা কোনো প্রভাব ফেলতে পারবেন? প্রবীণ সংবাদিক শুভাশিস মৈত্র মনে করেন, দিল্লির কৃষক নেতাদের কথার কোনো প্রভাব পশ্চিমবঙ্গে পড়বে না। তবে তারা একটা দীর্ঘমেয়াদী আন্দোলন করছেন। তার অঙ্গ হিসাবে এটাকে দেখা যেতে পারে। ডয়চে ভেলেকে শুভাশিস বলেছেন,  কৃষক নেতারা বলছেন, বিজেপি-কে হারাতে। ধরা যাক, যারা মমতাকে ভোট দেবেন, তারা এমনিতেই দেবেন। রাজেশ টিকায়েত বা যোগেন্দ্র যাদবের কথায় দেবেন না। আর কৃষক নেতারা শহরের দিকেই সভা করেছেন। নন্দীগ্রাম ও সিঙ্গুর বাদ দিলে। শহুরে শিক্ষিত মানুষের তাদের সম্পর্কে উৎসাহ আছে। তারা কীভাবে আন্দোলন করছেন, তাও মানুষ জানতে চান। ওই পর্যন্ত। ভোটে তাদের প্রভাব কিছু পড়বে বলে মনে হয় না।

হান্নান মোল্লাও বলছেন, ''কোনো লাভ-লোকসানের কথা ভেবে আমরা রাজ্য সফর করছি না। আমরা আন্দোলনের অংশ হিসাবে করছি। কেন্দ্রীয় সরকার এই আন্দোলনের বিরোধিতা করছে। কৃষকদের স্বার্থ দেখছে না। তারা কৃষকদের শত্রু বলে তাদের বিরুদ্ধে ভোট দেয়ার কথা বলা হয়েছে। আমরা একই কথা সব রাজ্যে বলছি। কার লাভ হবে, কার লোকসান হবে তা দেখা আমাদের কাজ নয়।''

সিপিএমও বুঝে গেছে, কৃষক নেতাদের এই আবেদনে তাদের অন্তত কোনো লাভ হবে না, সম্ভবত লোকসানও নয়।