1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিন হাম্মামের সহযোগীকে বরখাস্ত করল ফিফা

১২ মার্চ ২০১৩

বিশ্ব ফুটবলে মোহামেদ বিন হাম্মাম দুর্নীতি কেলেংকারির জের ধরে ফিফা তার কার্যনির্বাহী পরিষদ থেকে আরো একজন নেতৃস্থানীয় এশীয় সদস্যকে সাসপেন্ড করেছে: শ্রীলঙ্কার ভার্নন মনিলাল ফার্নান্ডো৷

https://p.dw.com/p/17vQF
ছবি: picture-alliance/dpa

ফিফার সাবেক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বিন হাম্মামের একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন ফার্নান্ডো৷ ফার্নান্ডো'র আগামী তিন মাসের জন্য ফুটবল সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ ফিফার নীতিমালা সংক্রান্ত তদন্তে যাতে ‘‘সত্য নির্ণয়ে বাধা না ঘটে'', সেজন্যই ফার্নান্ডোকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে ফিফা জানিয়েছে৷

বিন হাম্মাম যখন এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন সম্ভাব্য তহবিল তছরুপ এবং বাণিজ্যিক কনট্র্যাক্ট দেওয়ার কাজে দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত করছেন ফিফার কৌঁসুলি মাইকেল জে গার্সিয়া৷ সেই সূত্রেই ফার্নান্ডোকে সাসপেন্ড করা হল৷ তাঁর মামলা ফিফার নীতিমালা পরিষদের বিচার বিভাগে পাঠানো হয়েছে৷

ফার্নান্ডোর বিরুদ্ধে কোনো বিশেষ অভিযোগ আনা হয়েছে কিনা, তা ফিফা জানায়নি৷ ৬৩ বছর বয়সি ফার্নান্ডো আদতে ফিফার শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ মহলের সদস্য হয়ে ওঠেন বিন হাম্মামের আমলে৷ আগামী ২০ ও ২১শে মার্চে জুরিখে ফিফার বোর্ড মিটিং'এ দুর্নীতি বিরোধী সংস্কারের প্রস্তাব দেওয়া হবে৷ ফার্নান্ডো সে বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারবেন না৷

Fußball FIFA Mohamed Bin Hammam
ফিফার সাবেক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বিন হাম্মামছবি: picture alliance/AP

বিন হাম্মামের উত্থান-পতন

২০১৮ এবং ২০২২ সালের বিশ্বকাপ কোথায় অনুষ্ঠিত হবে, সে ব্যাপারে কেলেংকারি ও উৎকোচের অভিযোগ বিন হাম্মামের পতন ঘটায়৷ তিনি নিজেই যাবতীয় ফুটবল সংক্রান্ত পদ থেকে সরে দাঁড়ান; ফিফাও তাঁকে সারা জীবনের জন্য নিষিদ্ধ করে৷ ইতিপূর্বে ফিফার নীতিমালা পরিষদ বিন হাম্মামের বিরুদ্ধে এশীয় ফুটবল ফেডারেশনের নেতৃত্বে থাকাকালীন বারংবার নীতিমালা লঙ্ঘণের অভিযোগ করে৷

কাতারি কর্মকর্তা বিন হাম্মাম ২০১১ সালে ফিফার প্রেসিডেন্ট পদে সেপ ব্লাটারের প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়া যাবৎ এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ফিফার যাবজ্জীবন নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হলেন৷ কিন্তু কোর্ট অফ আর্বিট্রেশন ফর স্পোর্ট বিন হাম্মামের উপর প্রথম নিষেধাজ্ঞাটি তুলে নিয়েছে৷ আদালত বলে, বিন হাম্মাম যে ক্যারিবিয়ান কর্মকর্তাদের চল্লিশ হাজার ডলার ঘুষ দিয়েছিলেন, তা প্রমাণ হয়নি৷

‘পয়েন্ট ম্যান'

২০১১ সালের মে মাসে যে সব উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বিন হাম্মামের সঙ্গে ত্রিনিদাদ গিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে ফার্নান্ডোও ছিলেন, যিনি পেশায় আইনজীবী৷ তাঁদের ত্রিনিদাদ যাত্রা ছিল ফিফার নির্বাচনের ঠিক তিন সপ্তাহ আগে৷ বিন হাম্মাম পরে দাবি করেন যে গোটা কেলেংকারিটা সেপ ব্লাটারের মনগড়া৷ তবুও তিনি নির্বাচনের আগেই তাঁর প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন এবং ফিফা তাঁকে যাবজ্জীবন নিষেধাজ্ঞা দেয়৷ ফার্নান্ডোকেও ঐ কেলেংকারিতে তাঁর ভূমিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল৷

Joseph Sepp Blatter
ফিফা সভাপতি সেপ ব্লাটারছবি: picture alliance/Sven Simon

ফিফার নয়া কৌঁসুলি গার্সিয়া গত জুলাই মাসে দায়িত্ব নেবার পরেই বিন হাম্মামের বিরুদ্ধে একটি দ্বিতীয় তদন্ত শুরু করেন৷ মালয়েশিয়া ভিত্তিক এশীয় ফুটবল ফেডারেশনের হিসেবপত্রের অডিট করা হয় প্রায় এক বছর ধরে, যা'তে নানারকমের ও নানা ধরনের অনিয়ম ধরা পড়ে৷ বিন হাম্মাম নাকি ২০০২ সালে প্রেসিডেন্ট হওয়া যাবৎ কনট্র্যাক্ট দেওয়ায় নানা নীতি লঙ্ঘণ করেছিলেন, এমনকি সংগঠনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নিয়েও কারচুপি করেছেন৷

ফার্নান্ডো ছিলেন দক্ষিণ এশিয়ায় বিন হাম্মামের ‘পয়েন্ট ম্যান', এবং ফিফার উন্নয়ন কর্মকর্তা৷ তাঁর কার্যালয় ছিল শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয়৷ ২০১১ সালের গোড়ায় এশিয়ার ফুটবল খেলা দেশগুলি ফিফার কার্যনির্বাহী পরিষদে যে চারজন প্রতিনিধি নির্বাচন করে, তাদের মধ্যে ফার্নান্ডোও ছিলেন৷ ঠিক সেই দিনই বিন হাম্মাম এএফসি'র প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হন এবং ব্লাটারের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নেন৷

আগামী দোসরা মে এএফসি'র নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবে৷ ফার্নান্ডো কোনো প্রার্থীর হয়ে প্রচারণা করতে পারবেন না৷ চারজন প্রার্থীর মধ্যে তিনজন আবার বিন হাম্মামের প্রাক্তন মিত্র৷

এসি / জেডএইচ (এপি, এএফপি)