1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সম্প্রসারণ তত্ত্ব নিয়ে সংশয়

৩১ আগস্ট ২০২০

বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের রহস্য উন্মোচন সহজ কাজ নয়৷ আজ যা সত্য হিসেবে প্রমাণিত, আগামীকাল কোনো নতুন আবিষ্কার তা নস্যাৎ করে দিতে পারে৷ অত্যাধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে পর্যবেক্ষণ ও পরিমাপের ফলে এমন সম্ভাবনা বেড়ে চলেছে৷

https://p.dw.com/p/3hoaK
ছবি: picture-alliance/Pacific Press

বিশ্বব্রহ্মাণ্ড পরিমাপের লক্ষ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বড় টেলিস্কোপগুলিকে কাজে লাগানো হয়েছিল৷ যেমন চিলির এক টেলিস্কোপ৷ দুই নিরপেক্ষ গবেষকদলের কাজের একই ফলাফল উঠে এসেছে৷ তাতে দেখা যাচ্ছে, যে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের শুধু সম্প্রসারণ ঘটে চলছে না৷ বিস্ময়কর ঘটনা হলো, সেই সম্প্রসারণের গতিও বেড়ে চলেছে৷ কোনো এক অজ্ঞাত ‘অন্ধকার জ্বালানি’ গ্যালাক্সিগুলিকে একে অপরের থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে৷

অন্য জ্যোতির্বিদরা অবশ্য এই তত্ত্বকে সম্পূর্ণ ভুল মনে করছেন৷ চিলির লাস কাম্পানাস অবজারভেটরিতেও তাঁরা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের পরিমাপ করেছেন৷ দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানী ইয়ং-উক লি মনে করেন, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সম্প্রসারণের গতি মোটেই বাড়ছে না৷ তাই ‘অন্ধকার জ্বালানি’ বলে কোনো শক্তির অস্তিত্বও নেই৷

মিউনিখের কাছে ইউরোপীয় সাদার্ন অবজারভেটারি ইএসও-য় ব্রুনো লাইবউন্টগুট সক্রিয় রয়েছেন৷ তিনি এমন এক দলের সদস্য ছিলেন, যেটি নাকি পরিমাপের তথ্যের ভুল বিশ্লেষণ করেছিলো৷ এ ক্ষেত্রে বিষয়টি শুধু কোনো মহাজাগতিক পর্যবেক্ষণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়৷ লাইবউন্টগুট মনে করেন, ‘‘সৃষ্টিতত্ত্বের প্রচলিত মডেল অনুযায়ী কোনো এক উপাদান বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সম্প্রসারণ ঘটিয়ে চলেছে৷ নতুন পরিমাপ সঠিক হয়ে থাকলে সৃষ্টিতত্ত্ব সংক্রান্ত গোটা মডেল ভেঙে পড়বে এবং আমাদের আবার নতুন করে শুরু করতে হবে৷’’

সে ক্ষেত্রে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের গঠন হবে একেবারে ভিন্ন৷ বর্তমান জ্ঞান অনুযায়ী বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের মোট তিনটি অংশ রয়েছে৷ তার মধ্যে একটি হলো দৃশ্যমান পদার্থ – যেমন গ্যালাক্সির মধ্যে নক্ষত্রসমূহ৷ সেই পদার্থের অনুপাত মাত্র পাঁচ শতাংশ!

আসলে ঘূর্ণীয়মান গ্যালাক্সিগুলির পরস্পর থেকে দূরে চলে যাওয়া উচিত৷ বিশ্লব্রহ্মাণ্ডের দ্বিতীয় অংশ সেই ঘটনা ঘটতে দেয় না৷ কোনো এক অদৃশ্য সংযোজক গ্যালাক্সিগুলিকে একত্র রাখে, যাকে ‘ডার্ক ম্যাটার' বলা হয়৷ একটি অ্যানিমেশনের মাধ্যমে গ্যালাক্সির মধ্যে সেই ডার্ক ম্যাটার দৃশ্যমান করে তোলা হয়েছে৷ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রায় এক চতুর্থাংশ ডার্ক ম্যাটার দিয়ে তৈরি৷

প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী তৃতীয় এবং সবচেয়ে বড় অংশ শুধু শক্তি বা জ্বালানি৷ সেই ‘অন্ধকার’ শক্তির দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে৷ গত শতাব্দীর বিশের দশকের শেষে মার্কিন বিজ্ঞানী এডউইন হাবলের পর্যবেক্ষণ এই সংক্রান্ত তত্ত্বকে সত্য প্রমাণিত করেছিল৷ সেই তত্ত্ব অনুযায়ী বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সম্প্রসারণ ঘটে চলেছে৷ যত দূরে যাওয়া যাবে, সম্প্রসারণের গতিও তত বেশি হবে৷

তারপর দুই গবেষকদলের আবিষ্কার জনসমক্ষে এলো৷ সেই দাবি অনুযায়ী সম্প্রসারণের গতি বেড়ে চলেছে৷ অন্ধকার শক্তি বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে ফুলিয়ে তুলছে৷ ২০১১ সালে পার্লমাটার, স্মিট ও রিস নামের তিন পদার্থবিজ্ঞানী এ জন্য নোবেল পুরস্কার পেলেন৷

ক্রিস্টিয়ান ফ্রিডল/এসবি