1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বুন্ডেসলিগায় বিক্ষোভের আগুন, চকলেট আর টেনিস বল

১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

খেলা শুরু হলেই মাঠে চকলেট কয়েন, প্লাস্টিকের বল, টেনিস বল ইত্যাদি ছুঁড়তে শুরু করেন দর্শকরা৷সেসব সরিয়ে খেলা আবার শুরু করতে গিয়ে হিমসিম খায় বুন্ডেসলিগা কর্তৃপক্ষ৷

https://p.dw.com/p/4cJIN
হানোফার ৯৬ আর হানসা রস্টক ম্যাচে মাঠের এক পাশে ছড়িয়ে থাকা টেনিস বল আর চকলেট কয়েন
বিনিয়োগকারীকে ডেকে আনার উদ্যোগের প্রতিবাদে গ্যালারি থেকে চকলেট কয়েন অথবা প্লাস্টিকের বা টেনিস খেলার বল ছুঁড়ে মারছেন অনেকেছবি: Carmen Jaspersen/dpa/picture alliance

একটি বিদেশি বিনিয়োগকারীর জন্য জার্মান লিগে বিনিয়োগের সুযোগ উন্মুক্ত করতে গিয়ে এমন বিক্ষোভের মুখে পড়েছে তারা৷

ইতিমধ্যে রবুন্ডেসলিগা এবং বুন্ডেসলিগা ২-এর ৩৬টি ক্লাব ভোটের মাধ্যমে জার্মান ফুটবল লিগ (ডিএফএল)-এ এক বিদেশি বিনিয়োগকারীকে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য দুই তৃতীয়াংশ ভোটের প্রয়োজন ছিল৷২০২৩ সালের মে মাসের প্রথম দফা ভোটে সেই লক্ষ্য অর্জিত হয়নি৷গত ১১ ডিসেম্বর তাই আবার সব ক্লাব এ বিষয়ে ভোট দিয়ে তাদের সিদ্ধান্ত জানায়৷ সেখানে টেনেটুনে ২৪ ভোটই পড়ে বিদেশি বিনিয়োগকারীর পক্ষে৷ কিন্তু তাতেই বে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট অনুকুলে আসায় জার্মান ফুটবলকে চাঙা করার নতুন এই উদ্যোগের সামনে থেকে সরে যায় প্রশাসনিক সব প্রতিকুলতা৷

এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করার মাধ্যমে বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠানকে মোট খরচের সর্বোচ্চ ৮ শতাংশ বিনিয়োগের সুযোগ দিতে চায় ডিএফএল৷ প্রথম ধাপে বিনিয়োগের এ সুযোগ দেয়া হবে ২০ বছরের জন্য৷

যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ সংস্থা ব্ল্যাকস্টোন এবং লুক্সেমবার্গভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সিভিসিসহ বেশ কিছু বিদেশি প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে এ বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে৷

কিন্তু ১১ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর থেকেই শুরু হয়েছে বিদেশি বিনিয়োগকারী-বিরোধী বিক্ষোভ৷বুন্ডেসলিগার সমর্থকগোষীগুলো মনে করছে একটি বিদেশি বিনিয়োগকারীকে সুযোগ দেয়া আসলে জার্মান ফুটবলে বহুকাল ধরে প্রচলিত ৫০+১ নিয়ম ভাঙার পাঁয়তারা৷ তাদের সন্দেহ, প্রথমে একটি বিদেশি বিনিয়োগকারীকে সুযোগ দেয়া হলেও পরে ধীরে ধীরে জার্মানির ক্লাবগুলোর উপর থেকে ক্লাবের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি তুলে নেয়া হবে৷

গ্যালারিতে হানোফার-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর মার্টিন কিন্ড-এর বিকৃত করা ছবি হাতে বিক্ষোভ
ক্লাবের পক্ষ থেকে বিপক্ষে ভোট দেয়ার অনুরোধ করা হলেও মার্টিন কিন্ড তা মেনেছেন কিনা এ নিয়ে দেখা দিয়েছে সন্দেহ৷ তাই তার বিরুদ্ধেও চলছে বিক্ষোভ৷ছবি: Oliver Ruhnke/IMAGO

৫০+১-এর মূল কথা হলো, সব ক্লাবে ন্যূনতম ৫১ ভাগ লভ্যাংশ থাকতে হবে ক্লাব কর্তৃপক্ষের হাতে৷

গত মে মাসে সম্ভব না হলেও ডিসেম্বরে কিভাবে ঠিক ২৪টি ভোট পড়ে গেল বিদেশি বিনিয়োগকারী অনুমোদনের পক্ষে? বুন্ডেসলিগার বেশির ভাগ সমর্থকগোষ্ঠী মনে করে, দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাব হানোফার ৯৬-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মার্টিন কিন্ড এর জন্য দায়ী৷ ১৯৯৭ সাল থেকে হানোফার ৯৬-এর পৃষ্ঠপোষকতা করে আসা কিন্ড বরাবরই ৫০+১ নীতির ঘোর বিরোধী৷ তাই ১১ ডিসেম্বরের ভোটের আগে ক্লাবের পক্ষ থেকে বিপক্ষে ভোট দেয়ার অনুরোধ জানানো হয় তাকে৷ভোট গ্রহণ শেষের পর তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল ‘‘কোন দিকে ভোট দিয়েছেন?'' জবাবে কিন্ড বলেছেন, ‘‘এ বিষয়ে গোপনীয়তা ভঙ্গের কোনো ইচ্ছে নেই আমার৷''

এই বক্তব্যের পর তাকে ঘিরে সমর্থকগোষ্ঠীগুলোর সন্দেহ আরো বেড়ে যায়৷ বিভিন্ন ম্যাচে বৈচিত্র্যপূর্ণ প্রতিবাদে দর্শকদের উদ্বুদ্ধ করতে থাকে কিছু ফ্যান অর্গ্যানাইজেশন৷

এফসি কোলন আর বরুসিয়া ডর্টমুন্ড ম্যাচে মাঠ থেকে চকলেট কয়েন পরিষ্কার করার দৃশ্য
বিদেশি বিনিয়োগকারীকে ডেকে আনার উদ্যোগের প্রতিবাদে গ্যালারি থেকে চকলেট কয়েন অথবা প্লাস্টিকের বা টেনিস খেলার বল ছুঁড়ে মারছেন অনেকেছবি: Gerhard Schultheifl/IMAGO

ম্যাচ শুরুর প্রথম কয়েক মিনিট সমর্থকরা যে চেঁচিয়ে প্রিয় ক্লাবের প্রতি সমর্থন জানান, কিছু উগ্র সমর্থক গোষ্ঠী তা অনেক সময় হতে দিচ্ছে না৷ ফলে কিছু ম্যাচে শুরু থেকেই জেঁকে বসছে ম্যাড়ম্যাড়ে ভাব৷তবে হঠাৎ শোরগোলও শুরু হচ্ছে বিভিন্ন ম্যাচে৷ টাকার জন্য ডিএফএল-এর বিদেশি বিনিয়োগকারীকে ডেকে আনার উদ্যোগের প্রতিবাদে গ্যালারি থেকে পয়সার মতো গোল চকলেট (চকলেট কয়েন) অথবা প্লাস্টিকের বা টেনিস খেলার বল ছুঁড়ে মারছেন অনেকে৷

শনিবার বায়ার্ন মিউনিখ- বায়ার লেভার কুজেন ম্যাচেও একাধিকবার বিঘ্ন ঘটায় দর্শকদের এমন প্রতিবাদ৷

এ কারণে ইউনিয়ন বার্লিন এবং ভোল্ফসবুর্গের ম্যাচ শেষ করতে হয় ৩০ মিনিটেরও বেশি ‘অতিরিক্ত' সময় যোগ করে৷

বিক্ষোভের প্রতিক্রিয়া প্রভাব

বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে ডিএফএল জানায়, প্রতিবাদ-বিক্ষোভ সত্ত্বেও বিদেশি বিনিয়োগকারীকে সুযোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার পরিকল্পনা নেই তাদের৷ বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য ভক্তদের গোষ্ঠীগুলোকে ইতিমধ্যে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে ডিএফএল৷তবে পাঁচটি ফ্যান ক্লাব এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, এ আলোচনায় তারা অংশ নেবে না৷ তারা বলেছে, ‘‘সমর্থকদের প্রতিবাদকে যত অবজ্ঞা করা হবে, আমরা ততই একতাবদ্ধ হবো এবং আরো জোরালোভাবে নতুন ভোটের দাবি জানাবো৷''

স্টেফান নেস্টার, চাক পেনফোল্ড/ এসিবি