1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বেসরকারি শিক্ষায় সরকারি নজর

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
২ জুন ২০১৭

বেসরকারি হাসপাতালের পর এবার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান৷ সম্প্রতি কলকাতার একেবারে প্রথম সারির বেশ কয়েকটি স্কুল অধ্যক্ষ এবং প্রশাসনিক প্রধানদের তলব করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি৷

https://p.dw.com/p/2e1Da
ঢাকায় মমতা
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman

‘‌‘‌আপনার স্কুলে নাকি যারা বাংলায় কথা বলে, তাদের সবাইকে একটা আলাদা সেকশনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়?‌’’ 

মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি যাঁকে প্রশ্নটা করছেন, তিনি কলকাতার অন্যতম সেরা স্কুল ‘লা মার্টিনিয়ার ফর বয়েজ’-এর অধ্যক্ষ৷ একটু অপ্রতিভ হয়ে তিনি দাবি করলেন, ভাষার ভিত্তিতে এমন কোনও বিভাজন তাঁরা করেন না৷ সব ছেলে একসঙ্গেই মিলেমিশে থাকে৷

মুখ্যমন্ত্রীর পরের প্রশ্ন, ‘‘‌আপনাদের স্কুলে ভর্তি হতে কত টাকা লাগে?‌ ২ লক্ষ ৪৭ হাজার?‌ কেন, এত টাকা লাগে কেন!‌’’ 

‘লা মার্টিনিয়ার’-র অধ্যক্ষ আবার জানালেন, ওই টাকা একবারই লাগে৷ ভর্তির সময়৷

‘‌‘‌তা হলে প্রতি মাসে কত দিতে হয়?‌’’ মুখ্যমন্ত্রীর পরের প্রশ্ন৷ তারপর নিজেই বললেন, অন্য কোনও কারণে না, নিজের কৌতূহল মেটাতে টাকার অঙ্কটা জানতে চাইছেন৷

কলকাতার তাবড় বেসরকারি স্কুলের প্রধানদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর এই সওয়াল-জবাব সরকারি ব্যবস্থাপনাতেই সরাসরি দেখা গেল টিভিতে৷ সেখানে মুখ্যমন্ত্রী পরিষ্কার বোঝালেন, তাঁর সরকার নজর রাখছে৷ বেসরকারি বলেই লাগামহীন ফি নেওয়া, নিজেদের ইচ্ছেমতো চলা যাবে না৷ অবশ্য তার জন্য কোনও সরকারি বিধি-নিষেধ এসব বেসরকারি স্কুলের ওপর চাপিয়ে দেননি মুখ্যমন্ত্রী৷ বরং তাঁর প্রস্তাবে একটি সেল্ফ রেগুলেটরি কমিটি তৈরি হয়েছে, রাজ্যের শিক্ষাসচিব এবং প্রথম সারির স্কুলগুলির প্রতিনিধিদের নিয়ে৷ নিয়মিত বৈঠক করবে এই কমিটি, বিভিন্ন অভাব, অভিযোগ খতিয়ে দেখবে৷ এভাবেই স্বনিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা হবে৷

খামোকা কিছু হইচই, শোরগোল হবে, কাজের কাজ কিছু হবে না: সাবেক বামফ্রন্ট সরকারের শিক্ষামন্ত্রী

কিন্তু এমন একটা কমিটির কি প্রয়োজন ছিল?‌ অথবা স্বশাসিত স্কুলগুলিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে কতটা কার্যকর হবে এমন কমিটি?‌ পশ্চিমবঙ্গের পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের শিক্ষামন্ত্রী, অধ্যাপক সুদর্শন রায়চৌধুরী অবশ্য ডয়চে ভেলেকে বললেন, হতেই পারে যে এই স্কুলগুলির বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ সরকারের কাছে জমা পড়েছিল৷ এবং অনেক স্কুলের পরিচালন পর্ষদ তাদের যে জাতীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা, তার বিধি-নিষেধ মেনে চলে না৷ এ কারণে, অতীতে বামফ্রন্ট সরকারও একবার বেসরকারি স্কুলগুলিকে নিয়ন্ত্রণের একটা চেষ্টা করেছিল৷ তবে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর মতে, বর্তমান সরকার যা করল, তাতে খামোকা কিছু হইচই, শোরগোল হবে, কাজের কাজ কিছু হবে না৷ নিয়ন্ত্রণের ভান থাকবে মাত্র, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ কিছু হবে না৷

একাধিক নামী বেসরকারি স্কুলের অধ্যক্ষ অবশ্য কলকাতার টাউন হলে মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা এই বৈঠক থেকে বেরিয়ে বলেছেন, এমন একটা উদ্যোগ অবশ্যই দরকার৷ এবারের ক্লাস টেন এবং ক্লাস টুয়েলভের পরীক্ষায় অত্যন্ত ভালো ফল করা ‘‌হেরিটেজ স্কুল’-এর অধ্যক্ষা এমন কথাও বললেন, যে অবশ্যই, ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার পেছনে আজকাল যে বিপুল পরিমাণ খরচ হয়, সেটা কেন হয়, কোন খাতে হয়— তা জানার অধিকার অভিভাবকদের অবশ্যই আছে৷ এ ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে তাঁরা সম্পূর্ণ একমত৷

প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চাইলে জানান নীচে মন্তব্যের ঘরে...