1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্রাজিলে স্কুলশিক্ষার মান বাড়াতে উদ্যোগ

২ আগস্ট ২০১৮

দক্ষিণ এশিয়ায় উচ্চ মানের শিক্ষা বেশিরভাগ পরিবারের আওতার বাইরে৷ অথচ দেশের সার্বিক উন্নতির জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা অত্যন্ত জরুরি৷ ব্রাজিলে এক ব্যক্তি একই সমস্যার সমাধানে অভিনব পন্থা গ্রহণ করছেন৷

https://p.dw.com/p/32UDH
Brasilianische Pädagogin Yvonne Bezerra und das Projekt Uere
ছবি: picture-alliance/AP Photo/S. Izquierdo

ব্রাজিলের স্কুলগুলিতে উপযুক্ত সরঞ্জাম ও শিক্ষকদের পড়ানোর উপকরণের অভাব বড় সমস্যা৷ বিত্তশালী মানুষ বেসরকারি স্কুল বেছে নেন৷ তবে সাঁও পাউলো শহরে একটি স্কুল এক ব্যতিক্রম৷ কারণ তারা অভিনব এক সুযোগের সদ্ব্যবহার করছে৷

ক্লাউডিও সাসাকির ৪টি সন্তান রয়েছে৷ তিনি সবার জন্য ডিজিটাল শিক্ষা কর্মসূচির ব্যবস্থা করতে চান৷ তাই তিনি ‘গিকি' নামের এক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করেছেন৷ ব্রাজিলের লক্ষ লক্ষ স্কুল পড়ুয়া সেটি ব্যবহার করছে৷ ক্লাউডিও বলেন, ‘‘ব্রাজিলের হাইস্কুলে ড্রপআউটের হার প্রায় ৫০ শতাংশ৷ যারা হাই স্কুল শেষ করে , তাদের মধ্যে ১০ শতাংশ পর্তুগিজ ও অংকের মৌলিক শিক্ষা গ্রহণ করে৷ উচ্চ মানের শিক্ষারসুযোগের ক্ষেত্রে বিশাল বৈষম্য আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা৷''

শিক্ষাক্রম অত্যন্ত আকর্ষণীয়৷ প্রত্যেক শিক্ষার্থী নিজের জ্ঞান ও ক্ষমতা পরীক্ষা করতে পারে৷ মাসে মাত্র আড়াই ইউরো মাশুল গুনতে হয়৷ সাসাকি সরকারি-বেসরকারি নানা স্কুলের সঙ্গে কাজ করছেন৷ শিক্ষিকা হিসেবে টালিটা সিলভা বলেন, ‘‘আমাদের পড়ানোর কায়দা বদলাতে হবে এবং অন্যভাবে বিষয়গুলি তুলে ধরতে হবে৷ কোনো বিষয়ের মধ্যে ঠিক কোন অংশটি শিক্ষার্থীদের মনে আগ্রহ জাগাতে পারে? শিক্ষার্থীদের জীবনের চাহিদা মেটাতে কীভাবে আমরা জ্ঞান বিতরণ করবো? দৈনন্দিন জীবনে নাগরিক হিসেবে তারা সেটা দিয়ে কী করবে, তা কীভাবে দেখাবো?''

স্কুলের শিক্ষার্থী কারিনা আস্ট্রাউস্কাসও বেশ উৎসাহ পাচ্ছে৷ তার মতে, ‘‘এই সব কর্মসূচি খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ সাধারণ বই ও নোটসের তুলনায় এগুলি অনেক ভালো৷ আমরা মোবাইল ফোন ও কম্পিউটারেও কাজ করতে পারি৷ ইন্টারনেটের মাধ্যমে সবসময়ে সংযোগ থাকে৷

ভালো শিক্ষাজীবন সামাজিক বৈষম্য দূর করতেও সাহায্য করে৷ সাসাকি এ বিষয়ে নিশ্চিত৷ তাঁর নিজেরই সেই অভিজ্ঞতা হয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার পিতামহরা জাপান থেকে ব্রাজিলে এসেছিলেন কফি প্লান্টেশনে কাজ করতে৷ প্রায় ক্রীতদাসের মতো শ্রম দিতে হতো৷ সন্তানদের ভালো শিক্ষা দিয়ে জীবনযাত্রায় উন্নতি আনাই ছিল তাঁদের স্বপ্ন৷ সেভাবেই আমার বাবা-মাকে মানুষ করা হয়েছে৷ আমার মা বেসরকারি ও সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন৷''

ক্লাউডিও সাসাকি তাঁর ক্লাসের সেরা ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন৷ তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে বড় বড় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকে কাজ করেছেন৷ তারপর তিনি সপরিবারে ব্রাজিলে ফিরে আসেন৷ নিজের দেশে শিক্ষা ব্যবস্থায় বিপ্লব আনাই ছিল তাঁর লক্ষ্য৷ ছ'বছর আগে সাঁও পাউলো শহরে তিনি নিজের কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন৷

খেলাচ্ছলে শিক্ষা ও ডিজিটাল প্রযুক্তির মেলবন্ধন ঘটছে৷ মডিউলগুলি প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য উপযুক্ত করে তোলা যায়৷ তারা তাতে বেশ মজাও পায়৷

গিকি কোম্পানিতে বর্তমানে প্রায় ৩০০ জন কর্মী কাজ করছেন৷ তবে সবকিছু সহজভাবে হয় নি৷ প্রায়ই কর্মীর অভাব দেখা যেত৷ ভালো কর্মীদের আকর্ষণ করতে প্রতিষ্ঠাতাকে অনেক বোঝাতে হতো৷ ক্লাউডিও সাসাকি বলেন, ‘‘মেশিন লার্নিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, শিক্ষাক্ষেত্রে তার প্রয়োগ নিয়ে কাজ করার জ্ঞান আছে, এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর৷ গুগল, মাইক্রোসফট, ফেসবুকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শুধু ব্রাজিল নয়, বিদেশ থেকেও আমাদের প্রতিনিয়ত দক্ষ কর্মী খুঁজতে হয়৷

ব্রাজিলে প্রতিদিন দারিদ্র্য দেখে সাসাকি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন৷ ল্যাটিন অ্যামেরিকার সবচেয়ে বড় এই দেশে সম্পদের প্রাচুর্য কম নয়৷ কিন্তু তার অসম বণ্টন বড় সমস্যা৷ দারিদ্র্যের ফলে শিক্ষার অভাব এবং তার ফলে সুযোগের অভাব ব্রাজিলের অনেক মানুষের কাছে কঠিন বাস্তব৷ ক্লাউডিও বলেন, ‘‘মানুষকে শিক্ষা ও প্রয়োজনীয় দক্ষতা না দিতে পারলে আমরা কখনো দেশ হিসেবে প্রতিযোগিতার বাজারে পাল্লা দিতে পারবো না৷ যে কাজই করুক না কেন, তাদের আরও উৎপাদনশীল, আরও দক্ষ হতে হবে৷''

সাসাকির শিক্ষা কর্মসূচি আজ গোটা ব্রাজিলে ব্যবহার করা হচ্ছে৷ পরের ধাপে তিনি আর্জেন্টিনায়ও সম্প্রসারণ করতে চান৷

মানুয়েলা কাস্পার-ক্লারিজ/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান