1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্রিটেনের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিলেন জনসন?

১১ জুলাই ২০১৯

ওয়াশিংটনে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের পদত্যাগের জন্য ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী বরিস জনসনকে দায়ী করা হচ্ছে৷ বলা হচ্ছে, ট্রাম্পের সঙ্গে সুসম্পর্কের সংকীর্ণ স্বার্থে তিনি রাষ্ট্রদূতকে ‘বাসের নীচে ফেলে দিয়েছেন'৷

https://p.dw.com/p/3Lt36
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী বরিস জনসন
ছবি: picture-alliance/dpa/empics/PA Wire/B. Birchal

রাষ্ট্রদূত বনাম প্রেসিডেন্টের সংঘাতের পরিণতি কী হতে পারে, তা নিয়ে শুরু থেকেই সংশয় ছিল৷ কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতের সমর্থনে এগিয়ে আসায় কিছুটা আশার আলো দেখা গিয়েছিল৷ সম্ভাব্য হবু প্রধানমন্ত্রী সেই সম্ভাবনায় পানি ঢেলে দিতে আর শেষরক্ষা হলো না৷ রাষ্ট্রদূতকে হাল ছেড়ে দিয়ে পদত্যাগ করতে হলো৷

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও ওয়াশিংটনে ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূত কিম ড্যারক এই নাটকের প্রধান দুই চরিত্র৷ ড্যারক নিজের দায়িত্ব পালন করে ওয়াশিংটনের পরিস্থিতি সম্পর্কে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়মিত রিপোর্ট পাঠিয়ে গেছেন৷ তাতে তিনি ট্রাম্প ও তাঁর প্রশাসন সম্পর্কে অনেক অপ্রিয় মন্তব্য করেছেন৷ বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় ট্রাম্প রোষে ফেটে পড়েন এবং ড্যারক-এর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা ঘোষণা করেন৷ বিদায়ী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট রাষ্ট্রদূত ড্যারক-এর প্রতি আস্থা ও সমর্থন জানিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সামনে জোরালো অবস্থান দেখান৷ প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে হান্ট এ ক্ষেত্রে ব্রিটেনের সার্বভৌমত্বকেই প্রাধান্য দেন৷

অন্যদিকে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বরিস জনসন মঙ্গলবারের টেলিভিশন বিতর্কে ড্যারক-এর প্রতি আস্থা দেখাতে প্রস্তুত ছিলেন না৷ সম্ভাব্য পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর এমন আচরণে হতাশ হয়েই ড্যারক সম্ভবত আর সময় নষ্ট না করে বুধবার পদত্যাগের ঘোষণা করেন৷ পদত্যাগপত্রে তিনি লেখেন, যে বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁর পক্ষে দায়িত্ব পালন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে৷

ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের পদত্যাগ সম্পর্কে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যের মধ্যে বন্ধন যে কোনো ব্যক্তির তুলনায় অনেক বড় এবং অ্যামেরিকা এই সহযোগিতা এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়৷

ব্রিটেনের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অ্যালান ডানকান বলেন, জনসন নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষা করতে এই অসাধারণ কূটনীতিককে ‘বাসের নীচে ফেলে দিয়েছেন'৷ ডানকান মনে করেন, কিম ড্যারক-এর প্রতি জনসনের অবজ্ঞা ও তাঁর প্রতি সমর্থন না দেখানো অত্যন্ত ঘৃণ্য আচরণ৷

এমন এক সময়ে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে ঘিরে অপ্রিয় এই ঘটনাটি ঘটলো, যখন অ্যামেরিকা ও ব্রিটেনের সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ এক পর্যায়ে প্রবেশ করতে পারে৷ ব্রেক্সিট কার্যকর হলে ট্রাম্প ব্রিটেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করতে আগ্রহী৷ বরিস জনসন প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি লন্ডনে পছন্দের এক মানুষ পাবেন৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নে ব্রিটেনের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ড্যারক এমন এক চিত্রে বড়ই বেমানান ছিলেন৷

ট্রাম্প এর আগে ব্রেক্সিট আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা নাইজেল ফারাজ-কে ওয়াশিংটনে ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূত হিসেবে চেয়েছিলেন৷ চলতি সপ্তাহে ফারাজ সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেও ড্যারক-এর পদত্যাগের পর তিনি এক টুইট বার্তায় লেখেন, এবার ওয়াশিংটনে এমন কাউকে রাষ্ট্রদূত করার সময় এসেছে, যিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার বিপক্ষে এবং অ্যামেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে আগ্রহী৷

এমন প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প-জনসন-ফারাজ অক্ষশক্তির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷

এসবি/কেএম (রয়টার্স, ডিপিএ)