1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভোটের আগে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের কবর খোঁড়া কেন?

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি৬ এপ্রিল ২০১৪

আজ থেকে ২৩ বছর আগে পরিকল্পনা করেই ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংস করেছিল মৌলবাদী হিন্দু সংগঠন৷ কোবরাপোস্ট নামে এক বেসরকারি সংস্থার স্টিং অপারেশনে এমনটাই দাবি করা হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/1BcRw
বাবরি মসজিদে হামলার ছবিছবি: Getty Images/AFP/D .E. Curran

১৯৯২ সালের ৬ই ডিসেম্বর অযোধ্যার রামজন্মভূমি আন্দোলনের নামে ষোড়শ শতাব্দীর বাবরি মসজিদ গুঁড়িয়ে দিয়েছিল মৌলবাদী হিন্দু সংগঠন বজরং দল এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কিছু ধর্মান্ধ সদস্য৷ এতদিন পর্যন্ত দাবি করা হতো, নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া উন্মত্ত জনতা নাকি ধ্বংসের জন্য দায়ী৷ কিন্তু কোবরাপোস্ট নামে এক বেসরকারি সংস্থার স্টিং অপারেশনে বদলে গেল ধ্বংসের নেপথ্য কাহিনিটা৷ বিস্ফোরক এই নেপথ্য কাহিনিটা কী?

রামজন্মভূমি আন্দোলনের গবেষণাধর্মী ইতিহাস রচনার নামে কোবরাপোস্টের অ্যাসোশিয়েটেড এডিটর অযোধ্যা, ফয়জাবাদ, মথুরা, লক্ষ্ণৌ, মোরাদাবাদ, মুম্বই, গোয়ালিয়র-সহ ১১টি জায়গা সফর করে আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ২৩জন শীর্ষ ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেন৷ তাঁদের কথোপকথনের গোপন রেকর্ডিং-এর ভিত্তিতে দাবি করা হয় যে, ‘অপারেশন জন্মভূমি' নামে বাবরি মসজিদ ভাঙার ছক কষা হয়েছিল অনেক আগে থেকে পরিকল্পনা করে৷

ধ্বংসকাণ্ড যাতে নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করা হয়, তার জন্য সংঘ পরিবারের বিভিন্ন শাখার ৩৮ জন স্বেচ্ছাসেবককে বেছে নিয়ে তাঁদের ঐ কাজের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছিল লোকচক্ষুর আড়ালে৷ ‘লক্ষণ সেনা' নামে ঐ ৩৮ জনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কিছু কর্মী৷ প্রথম চেষ্টায় যদি বাবরি মসজিদ ভাঙা না যায়, তাহলে দ্বিতীয় বিকল্প হবে ডিনামাইট ব্যবহার করা৷ কথিত এই চক্রান্তের কথা জানতেন লালকৃষ্ণ আডবানি, উত্তর প্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং-সহ বিজেপির কিছু শীর্ষ নেতা৷ শুধু তাই নয়, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাও নাকি পরিকল্পনার কথা টের পেয়েছিলেন. কিন্তু ঠেকাবার কোনো কড়া পদক্ষেপ নেননি – এমনও অভিযোগ করা হয়৷

এই প্রসঙ্গে এক উর্দু সংবাদপত্রের সম্পাদক মনে করেন, বাবরি মসজিদ এমন প্রযুক্তিতে তৈরি, যা ধ্বংস করা সাধারণ লোহার রড, শাবল, কোদাল, গাঁইতির দ্বারা সম্ভব নয়৷ ব্যবহার করা হয়েছিল কম শক্তির বিস্ফোরক, যার জন্য দরকার হয়েছিল বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তি এবং বিশেষজ্ঞের৷

বিতর্ক শুরু হয়েছে এই সব চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশের সময় নিয়ে৷ আর দিন কয়েক পরেই ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচন৷ ঠিক তার আগের সময়টাকেই বেছে নেয়া হলো কেন? সাম্প্রদায়িকতা উসকে দিয়ে বিজেপি দুর্গে তোপ দাগায় স্বভাবতই বিচলিত বিজেপি শিবির৷ বিজেপির দাবি, এটা একটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ‘স্পনসর্ড' অপারেশন৷ ধর্মীয় মেরুকরণের লক্ষ্যে বিজেপি-র বিরুদ্ধে ঘুঁটি সাজানো হচ্ছে, এমনও অভিযোগ তুলেছে বিজেপি৷ বিজেপির পালের হাওয়া কেড়ে নিতে চাইছে তারা, যারা হালে পানি পাচ্ছে না৷

নির্বাচন কমিশনকে দেয়া এক চিঠিতে বিজেপি বলেছে, নির্বাচনি প্রচার যখন নির্বিঘ্নে এবং শান্তিপূর্ণভাবে চলেছে, তখন এই সব তথ্য আবহাওয়া বিষিয়ে তুলবে৷ অবিলম্বে এর প্রকাশ ও প্রচার নিষিদ্ধ করা জরুরি৷ আম জনতার কাছে সাম্প্রদায়িকতা এখন আর বিজেপির নির্বাচনি ইস্যু নয়৷ নির্বাচনি ইস্যু হলো কংগ্রেসের অপশাসন৷ নাগরিক সমাজ ক্ষুব্ধ এই কারণে যে, ২৩ বছর আগে বাবরি মসজিদ ধ্বংসকাণ্ডের কঙ্কাল তুলে আনা অহেতুক৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য