1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইন্টারনেটের জাদুকর

৪ আগস্ট ২০১৭

লন্ডনের ২৩ বছরের তরুণ জুলিয়াস ডেইন-কে রাস্তার ম্যাজিশিয়ান বলা চলে৷ অপরদিকে তিনি ইন্টারনেটের, ফেসবুকের ম্যাজিশিয়ান, কেননা সেখানেই তাঁর অগুনতি ফ্যান আর ফলোয়ার৷

https://p.dw.com/p/2hfmj
জাদু দেখাচ্ছেন জুলিয়াস ডেইনছবি: DW

মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে এই ভিডিওটা ফেসবুকে দেখা হয়েছে দু'কোটি চল্লিশ লাখ বার৷ ম্যাজিক দেখিয়ে ইন্টারনেটে লক্ষ লক্ষ দর্শককে খুশি করার, চমকে দেওয়ার ক্ষমতা আছে লন্ডনের এই ২৩ বছর বয়সি তরুণের৷

ইন্টারনেট ম্যাজিশিয়ান জুলিয়াস ডেইন বললেন, ‘‘আমার বাবা ব্যাপারটা এখনও বুঝে উঠতে পারেননি৷ সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে ওঁর কোনো সম্পর্ক নেই৷ কাজেই আমি যখন বাবাকে বললাম, গত সপ্তাহে আমার এই ভিডিওটা ফেসবুকে পাঁচ কোটি বার দেখা হয়েছে, তখন বাবা বললেন: ‘বাঃ বেশ৷ তোমার পরীক্ষা কেমন চলছে?’ তখন আমি সবে ভিডিও তৈরি করা শুরু করেছি৷’’

ইন্টার্নশিপের বদলে ম্যাজিক

মাত্র বছর দুয়েক আগে নেশা বা পেশাটার শুরু: এক্সচেঞ্জ স্টুডেন্ট হিসেবে ক্যালিফর্নিয়ায় গিয়ে, সেখানে তাঁর প্রথম ক্লিপগুলো তৈরি করেন জুলিয়াস ডেইন৷ সতীর্থরা যখন ইন্টার্নশিপ নিয়ে ব্যস্ত, জুলিয়াস তখন নেটে তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়ানোয় মশগুল৷ দেশে ফিরে নিজের ট্রিকগুলোকে আরো চমকদার করার ফাঁকে পড়াশুনো শেষ করে, পুরোপুরি জাদুবিদ্যায় মন ঢেলে দেন জুলিয়াস৷

বিশেষ করে যে সব ভিডিও-য় তিনি ছোটখাট ম্যাজিক দেখিয়ে মহিলাদের মুগ্ধ করেন, সেগুলো বিশেষভাবে জনপ্রিয়৷ তাঁর ‘‘কী করে একটি মেয়েকে ম্যাজিক দেখিয়ে চমকে দিতে হয়’’ পর্যায়ের ভিডিওগুলো সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ কোটি ক্লিক পেয়েছে৷

ছাত্রাবস্থাতেই ঘরোয়া আসর বা পার্টিতে ম্যাজিক দেখিয়েছেন জুলিয়াস৷ আজ তাঁর ফেসবুকে ফলোয়ারের সংখ্যা ৮০ লাখের বেশি৷ তাদের নানারকম প্রতিক্রিয়া শোনা যায়৷

ফর্মুলা

ধরা যাক জুলিয়াস বেরিয়েছেন ইস্ট লন্ডনে, কয়েকটা নতুন ম্যাজিক ট্রাই করে দেখার জন্য৷ কিন্তু ঠিক দর্শক পাওয়া চাই৷ জুলিয়াস বলেন, ‘‘পাঁচ কোটি ভিউয়ারের পছন্দের মতো ভিডিও তৈরি করার জন্য এমন দর্শক চাই, যাদের প্রতিক্রিয়া দেখার মতো হবে৷ সাধারণত সে ধরনের মানুষদের দেখলে বোঝা যায়, তারা নিজের ওপর আস্থা রাখে, তারা খোশমেজাজের, তাদের সঙ্গে কথা বলা যায়৷’’

খানিক বাদেই একটা চুল কাটার সেলুনের সামনে সেরকম দর্শক পাওয়া গেল৷ আজকের ম্যাজিকটা দেখানোর জন্য জুলিয়াসের একটা ফেল্টপেনের বেশি কিছু লাগবে না – এক জাদুবিদ্যা ছাড়া? তাহলে তো হয়েই যেতো৷ ‘‘ইন্টারনেটে এক থেকে পাঁচ মিনিটের ভিডিও দেখলে মনে হবে যেন তৈরি করতে কোনো কষ্টই হয়নি – আসলে কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লাগে৷ ঠিক টিম, ঠিক লোকেশান, ঠিক ম্যাজিক – যা শিখতে ১০ ঘণ্টা থেকে ১০০ ঘণ্টা সময় লেগে যেতে পারে,’’ জানালেন জুলিয়াস ডেইন৷

শুধু ভেলকি দেখানোই নয়, লোকজনকে বোকা বানাতেও জুলিয়াসের জুড়ি নেই, বিশেষ করে রাস্তাঘাটে সম্পূর্ণ অচেনা মানুষদের৷ নিজের দাদিমাও জুলিয়াসের ফাজলামো থেকে রেহাই পাননি: ফেসবুকে ন'কোটি বিশ লাখ বার দেখা হয়েছে সে ভিডিও, জুলিয়াসের বিগেস্ট হিট৷ তবে ভাইরাল ভিডিও তৈরি করতে গেলে খেয়াল রাখতে হবে, ফ্যানরা ঠিক কি চায়: ‘‘চটপটে উপস্থাপনা; সেই রকমই চটপটে কন্টেন্ট, চটপট পাতা উলটে যাওয়ার মতো৷ শীর্ষকগুলো বেশি বড় হলে চলবে না – পুরোটা একটা ফর্মুলা৷ ফর্মুলা ফলো না করলে ভাইরাল হওয়া যাবে না৷’’

এ এমন একটা ফর্মুলা, যার কল্যাণে জুলিয়াস আজ অনলাইনে ম্যাজিক দেখিয়েই জীবনধারণ করতে পারেন৷ তবে বড় বড় ম্যাজিশিয়ানরা যা রোজগার করেন, জুলিয়াসের আমদানি তার ধারে-কাছে নয়৷

অথচ তাঁর রাস্তার ম্যাজিক দেখিয়েই দুনিয়াকে মুগ্ধ করেছেন জুলিয়াস ডেইন৷

রোব্যার্ট রিশটার/এসি