1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মন্ত্রিসভায় বড় বদল মোদীর, পশ্চিমবঙ্গ থেকে চার প্রতিমন্ত্রী

৭ জুলাই ২০২১

বড় আকারে মন্ত্রিসভার রদবদল করলেন নরেন্দ্র মোদী। তাতে চমক যেমন ছিল, তেমনই ছিল বার্তা দেয়ার বিষয়টি।

https://p.dw.com/p/3w97v
মন্ত্রিসভায় বড় রদবদল করছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ছবি: IANS

বিজেপি-তে একটা চালু কথা আছে, নরেন্দ্র মোদী যা করেন, তা বড় আকারেই করেন। তিনি সবসময় মেগা ইভেন্ট পছন্দ করেন। তার দ্বিতীয় মন্ত্রিসভার প্রথম রদবদলও তিনি বড় আকারেই করলেন। বুধবার সন্ধ্যায় ৪৩ জন মন্ত্রী শপথ নিলেন। মোট ১২ জন পুরনো মন্ত্রী বাদ পড়ছেন। 

প্রধানমন্ত্রী মোদীর চমকের তালিকায় ছিল পশ্চিমবঙ্গও। রাজ্য থেকে চারজন মন্ত্রী নিয়েছেন তিনি। নিশীথ প্রামাণিক, শান্তনু ঠাকুর, সুভাষ সরকার এবং জন বার্লা। তবে চারজনই প্রতিমন্ত্রী। এমনিতে প্রতিমন্ত্রীদের হাতে ক্ষমতা খুব বেশি থাকে না, তাও গত সাত বছরের মধ্যে এই প্রথমবার পশ্চিমবঙ্গ থেকে চারজন মন্ত্রী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেলেন। তবে আগে যে দুই জন মন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গ থেকে ছিলেন সেই বাবুল সুপ্রিয় ও দেবশ্রী চৌধুরী ইস্তফা দিয়েছেন। 

নিশীথ প্রমাণিক ও জন বার্লা উত্তরবঙ্গের নেতা। শান্তনু ঠাকুর মতুয়াদের নেতা। আর সুভাষ সরকার পেশায় চিকিৎসক ও বাঁকুড়ার নেতা। ভবিষ্যৎ ভোটের দিকে তাকিয়েই এই পরিবর্তন করছেন মোদী। রাজ্যে জিততে গেলে মতুয়া ও উত্তরবঙ্গের ভোট পাওয়া তার কাছে জরুরি। বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় প্রভাব বাড়াতে চাইছে বিজেপি। এর আগে উত্তরবঙ্গ থেকেই প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন দেবশ্রী চৌধুরী। তিনি পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগ করেছেন আরেক বাঙালি প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়

তবে যে বারোজন মন্ত্রী বাদ পড়েছেন সেই তালিকায় সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো রবিশঙ্কর প্রসাদ, হর্ষবর্ধন এবং প্রকাশ জাভড়েকর। এর মধ্যে জাভড়েকরকে সংগঠনে নেওয়া হবে বলে বিজেপি সূত্র জানচ্ছে। আর হর্ষবর্ধন ও তার প্রতিমন্ত্রীকে বাদ দেয়ার অর্থ, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে ব্যর্থতার দায় তাদের উপরই চাপিয়ে দেয়া হলো। আর টুইটারের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে রবিশঙ্কর প্রসাদকে ছেঁটে ফেলা তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, তিনিই তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী ছিলে। 

এছাড়া বাদ পড়েছেন মানব সম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক, শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গোয়ার। ইস্তফা দিয়েছেন সদানন্দ গৌড়াও। ইস্তফা দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী সঞ্জয় ধোতরে। 

Indischer Sänger Babul Supriyo
ইস্তফা দিয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়। ছবি: cc-by/www.bollywoodhungama.com

উত্তর প্রদেশ থকে সাতজন, মহারাষ্ট্র থেকে পাঁচজন, গুজরাট, কর্ণাটক ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে চারজন করে নতুন মন্ত্রী নেয়া হয়েছে। পুরোটাই ভোটের দিকে তাকিয়ে। উত্তর প্রদেশের নতুন মন্ত্রীরা তেমন পরিচিত মুখ নন। কিন্তু উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে, জাতপাতের কথা মাথায় রেখে তাদের বেছেছেন মোদী। 

১৫ জন নতুন ক্যাবিনেট মন্ত্রী হয়েছেন। তার মধ্যে কিছু পুরনো মন্ত্রী আছেন, যারা আগে প্রতিমন্ত্রী ছিলেন, এবার ক্যাবিনট মন্ত্রী হলেন। তার মধ্যে আছেন অনুরাগ ঠাকুর, হরদীপ সিং পুরি, কিরণ রিজিজু। তাছাড়া জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, নারায়ণ রানে, অনুপ্রিয়া প্যাটেল সহ একগুচ্ছ নতুন মন্ত্রী নিয়েছেন মোদী। 

এই রদবদলের মধ্যে দিয়ে বেশ কয়েকটি বার্তা দিতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। প্রথম বার্তাটি অবশ্যই উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের মতো রাজ্যগুলির জন্য, যেখান আর মাস সাতেকের মধ্যে বিধানসভা ভোট হবে। উত্তর প্রদেশ থেকে সাতজন নতুন মন্ত্রী নেয়া সেজন্যই। সেখানে জাতপাতের বিষয়টিও মাথায় রাখা হয়েছে। অনগ্রসর অনুপ্রিয়া প্যাটেলকে মন্ত্রী করা হয়েছে। উত্তরাখণ্ড থেকেও অজয় মিশ্র, অজয় ভাটের মতো নতুন মুখকে নিয়ে এসে মন্ত্রী করা হয়েছে।

Indien Wahlen in Westbengalen
নিশীথ প্রামাণিক মন্ত্রী হলেন। ছবি: Syamantak Ghosh/DW

মহারাষ্ট্র থেকে নারায়ণ রানে সহ পাঁচজন নতুন মন্ত্রী নেয়া হয়েছে। এটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। কারণ, মহারাষ্ট্রে ক্ষমতা দখল করতে উঠেপড়ে লেগেছে বিজেপি। শিবসেনাকে চাপ দেয়া হচ্ছে। কথাবার্তাও হয়েছে। কিন্তু শিবসেনার সঙ্গে হাত মেলালে উদ্ধবকে মুখ্যমন্ত্রী করতে হবে, যাতে রাজি নয় বিজেপি। তারা এনসিপি-কেও বাজিয়ে দেখছে।

প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয় বার্তাটি অনগ্রসরদের উদ্দেশ্যে। বেশ কিছু অনগ্রসর নেতাকে মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসা হয়েছে। এটাও প্রধাণত উত্তর প্রদেশের ভোটের দিকে তাকিয়েই।

Indien Jyotiraditya Scindia
মন্ত্রী হলেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। ছবি: imago images/Hindustan Times

মোদী এবার বেশ কয়েকজন নারী সাংসদকে মন্ত্রী করেছেন। নতুন মন্ত্রীদের তালিকায় পাঁচজন নারী। এটাও একটি বার্তা। মেয়েদের উদ্দেশে। পশ্চিমবঙ্গের ভোটে মেয়েরা ঢালাও মমতাকে ভোট দেয়ার পরই কি এই উপলব্ধি? তবে বিজেপি নেতারা বলছেন, এর আগে নির্মলা সীতারামনকে অর্থমন্ত্রী করেছেন মোদী, তাকে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক কমিটি ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটিতেও রেখেছেন।

প্রধানমন্ত্রী এবার বেশ কিছু কম বয়সি নেতাকে নতুন মন্ত্রী করেছেন। আর কয়েকজন তরুণ প্রতিমন্ত্রীকে ক্যাবিনেট মন্ত্রী করেছেন। এইভাবে তিনি মন্ত্রিসভাকে ইয়াং লুক দিতে চেয়েছেন।

জিএইচ/এসজি(পিটিআই)