1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরোপে নতুন প্রতিরক্ষা উদ্যোগ

৮ নভেম্বর ২০১৮

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে এমন উদ্যোগ বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছেন৷ জার্মানিসহ মোট দশটি দেশ এতে অংশ নিতে সম্মত হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/37tcW
ছবি: picture-alliance/N. Probst

‘ইউরোপিয়ান ইন্টারভেনশন ইনিশিয়েটিভ’ বা ইআইটু নামে এই উদ্যোগ বুধবার প্যারিসে বাস্তব রূপ নেয়৷ দশ দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা এই সময় উপস্থিত ছিলেন৷ দেশগুলো হচ্ছে, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, স্পেন, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, এস্তোনিয়া, পর্তুগাল, ফিনল্যান্ড ও ফ্রান্স৷

ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক টুইটে বলেছে, ‘‘নতুন হুমকি মোকাবিলা করতে ইউরোপের জন্য একটি শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দরকার৷’’

ইউরোপের সীমান্তের কাছে সামরিক কিংবা মানবিক সংকট তৈরি হলে সেক্ষেত্রে তাড়াতাড়ি প্রতিক্রিয়া দেখাতে এই উদ্যোগ গড়ে তোলা হয়েছে, বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন৷ ‘‘এমন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে ইউরোপ সক্ষম এবং সমসময় প্রস্তুত – ইআইটু উদ্যোগের মাধ্যমে এ রকম বার্তা সবার কাছে অবশ্যই পৌঁছে দিতে হবে,’’ বলে মন্তব্য করেন ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা৷

তবে ন্যাটোর সঙ্গে নতুন এই উদ্যোগের কোনো সংঘাত হবে না বলে আশ্বস্ত করেছে ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়৷ বরং ‘‘ইউরোপিয়ান ইন্টারভেনশন ইনিশিয়েটিভের কারণে পুরো ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোতে ইইউর ভূমিকা আরো শক্তিশালী হবে,’’ বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়৷

প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ যখন এক বছরেরও বেশি সময় আগে এমন উদ্যোগের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন, তখন অনেকে এটি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন৷ কারণ, সেই সময় ‘পেসকো’ নামে ইইউ'র আরেকটি প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছিল৷ পরবর্তীতে গত বছরের ডিসেম্বরে পেসকো সংক্রান্ত চুক্তি সই হয়৷ ইইউ'র ২৫টি দেশ তাতে সই করে৷ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সামরিক মহড়া ও প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতা আদানপ্রদান পেসকো চুক্তির লক্ষ্য৷

তবে প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁর আসল স্বপ্ন হচ্ছে, একটি ‘ইউরোপীয় সেনাবাহিনী’ গড়ে তোলা৷ ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এমন এক বাহিনীর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন তিনি৷ ‘‘আমাদের এমন ইউরোপ দরকার যে, যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভর করা ছাড়া একাই নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম,’’ মঙ্গলবার বলেন তিনি৷

ইআইটু উদ্যোগে জার্মানির একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা চায় ফ্রান্স৷ যদিও এই উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে অনেকদিন সময় নিয়েছে জার্মানি৷ এমনকি চাপে পড়ে জার্মানি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করেন ক্লাউডিয়া মায়োর৷ তিনি বার্লিনের ‘জার্মান ইন্সটিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্স’-এর আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা৷

ডয়চে ভেলেকে তিনি জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাঠামোর বাইরে ইআইটু উদ্যোগ গড়ে ওঠায় জার্মানির কর্মকর্তা একটু সতর্ক৷ ‘‘ইইউ কাঠামো ও ন্যাটোর বাইরে পরিকল্পনা করে অর্থপূর্ণ আরেকটি কাঠামো গড়ে তোলার বিষয়টি জার্মানরা ইতিবাচক হিসেবে দেখে না,’’ বলেন তিনি৷ বরং এমন উদ্যোগ ইইউকে দুর্বল করতে পারে বলে মনে করেন তাঁরা৷

মায়োর বলেন, ‘‘জার্মানি এই উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত হতে চাপ অনুভব করেছে, কারণ, তা না হলে ফ্রান্স আর জার্মানিকে যে ইউরোপের ইঞ্জিন বলা হয় এবং ইউরোপীয় সহযোগিতা ও ইন্টিগ্রেশনের চালিকাশক্তি মনে করা হয়, সেই ধারণা ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷’’

লুইস স্যান্ডার্স/জেডএইচ