1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফরাসি সাংবাদিকের চোখে মুক্তিযুদ্ধ

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২ মার্চ ২০১৪

ফরাসি সাংবাদিক ফিলিপ আলফঁনসি৷ ১৯৭১ সালে তিনি কাজ করছিলেন ফ্রান্সের একমাত্র টিভি চ্যানেলে৷ সেই সুবাদে তখন হাজার মাইল দূর থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন মুক্তিযুদ্ধের খবর সংগ্রহ করতে৷ সেই আলফঁনসি আবার ঢাকায় এসেছেন৷

https://p.dw.com/p/1BHyc
Französischer Journalist Philippe Marc Edouard Alfonsi in Bangladesch
ঢাকায় ফরাসি সাংবাদিক ফিলিপ আলফঁনসিছবি: DW

১৯৭১ সালে তাঁর সংগ্রহ করা প্রায় দুই ঘণ্টার ভিডিও চিত্র নিয়ে তৈরি করা হয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর তথ্যচিত্র৷ তাঁর পরিবেশন করা খবর সেই সময়ে আলোড়ন তোলে ফ্রান্সে৷ তবে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তাঁর পক্ষে বাংলাদেশে প্রবেশ অত সহজ ছিলো না৷

এপ্রিল মাসে তিনি কলকাতা থেকে শরণার্থীদের পথ ধরে চুয়াডাঙ্গার কাছে পৌঁছান৷ তিনি সেখানে পৌঁছানোর আগে ঐ এলাকায় বোমাবর্ষণের ঘটনা ঘটে৷ তখন তাঁকে এক দল মুক্তিযোদ্ধা জানালেন, বাংলাদেশে ঢুকতে হলে পাসপোর্টে স্বাধীন বাংলাদেশের ভিসা লাগবে৷ তখন তাঁর পাসপোর্টে মুক্তিযোদ্ধারা সত্যি সত্যি একটা সিল দিয়ে দিলেন৷ ফিলিপ আলফঁনসি জানান, যতদূর মনে পড়ে, একটা আলু কেটে সেই সিলটা বানানো হয়েছিল৷

Französischer Journalist Philippe Marc Edouard Alfonsi in Bangladesch
ফরাসি সাংবাদিক ফিলিপ আলফঁনসিছবি: DW

সেই ফরাসি সাংবাদিক বাংলাদেশকে ভোলেননি৷ ভোলেননি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে৷ তাই আবার এসেছেন স্বাধীন বাংলাদেশে৷ সঙ্গে নিয়ে এসেছেন তাঁর সেই পাসপোর্ট আর ভিসা, যা তিনি হস্তান্তর করেছেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের কাছে৷

শনিবার সকালে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে পাসপোর্ট হস্তান্তর উপলক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও ফ্রান্স বাংলাদেশ ইকোনমিক চেম্বার একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে৷ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি জিয়া উদ্দিন তারিক আলি ও ফ্রান্স বাংলাদেশ ইকোনমিক চেম্বারের প্রেসিডেন্ট কাজী এনায়েত উল্লাহ৷

পাসপোর্ট হস্তান্তরের পর ফিলিপ আলফঁনসি বলেন, ‘‘এ দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়কালের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হস্তান্তর করতে পেরে আমি আনন্দিত৷ আমি ঐ নয় মাসের সঙ্গী ছিলাম৷ আমি দেখেছি, পাকিস্তানের অগ্নিবোমা৷ এর মধ্যেও আমি ভিসা পেয়েছি৷''

ফরাসি এই সাংবাদিক বলেন, ‘‘ওই সময় আমার সঙ্গে সাংবাদিক অ্যালান কোন্সেস ছিলেন৷ তিনি এখন আর বেঁচে নেই৷ আমার এ পাসপোর্টটি ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকবে৷ তার মানে আমি আপনাদের মধ্যে আছি৷''

Französischer Journalist Philippe Marc Edouard Alfonsi in Bangladesch
‘‘স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়কালের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হস্তান্তর করতে পেরে আমি আনন্দিত’’ছবি: DW

আলফঁনসির ভাষায়, এর মাধ্যমে তিনি জাদুঘরে সব সময় থাকবেন৷

প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালে প্রথম দফায় বাংলাদেশে ঢুকে আলফঁনসি কয়েকদিন অবস্থান করেন৷ এরপর তিনি কলকাতায় ফিরে গিয়ে দেখেন সেখানে অনেক সাংবাদিক অপেক্ষমাণ৷ তারা তাঁকে রীতিমতো ছেঁকে ধরেছিলেন৷ সেসময় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তাঁর সাহসী প্রতিবেদন টেলিভিশনে প্রচারিত হওয়ার পর বিপুল সাড়া জাগে ফ্রান্সে৷

আলফঁনসি বলেন, ‘‘সামরিক শক্তির দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে ছিলো পাকিস্তানি বাহিনী৷ কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ছিল খুব দৃঢ়৷ স্বভাবে তাঁরা ছিলেন শান্ত৷ যথেষ্ট শৃঙ্খলাও ছিল তাঁদের মধ্যে৷ তাঁদের দেখেছি সাধারণ মানুষজনকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছিলেন৷ সাধারণ মানুষজনও পুরোপুরি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের৷''

উল্লেখ্য, একাত্তরে আলফঁনসির ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ দিয়ে নির্মিত তথ্যচিত্রের প্রদর্শনী গত ২৪ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ সেই তথ্যচিত্রের নাম ‘নায়ক'৷ আর সেটি নির্মাণ করেছেন প্যারিস প্রবাসী বাংলাদেশের শ্রীমঙ্গলের ছেলে প্রকাশ রায়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য