1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মুম্বইয়ের বস্তিতে ঢুকে পড়লো করোনা

২ এপ্রিল ২০২০

মুম্বইয়ের সব চেয়ে বড় বস্তি ধারাভিতে ঢুকে পড়লো করোনা। মৃত্যু হল একজনের। এক দিনে সব চেয়ে বেশি লোক আক্রান্ত হল ভারতে।

https://p.dw.com/p/3aKXl
ছবি: picture-alliance/imageBroker/F. Bienewald

আশঙ্কা সত্যি হল। ভারতের গরিব এলাকায় ঢুকে পড়লো করোনা। মুম্বইয়ের ধারাভি বস্তিতে ৫৬ বছর বয়সী একজন করোনায় মারা গিয়েছেন। তাঁর বাড়ি সিল করে দেওয়া হয়েছে।  বাড়ির বাকিদের করোনা পরীক্ষা হয়েছে। সব মিলিয়ে ভারতে করোনায় মারা গেলেন ৫০ জন। গত ২৪ ঘন্টায় ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় রেকর্ড বৃদ্ধি হয়েছে। একদিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৫৭ জন। তার মধ্যে অন্ততপক্ষে ২০০ জন তাবলিগের জমায়েত থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মোট এক হাজার ৯৬৫ জন করোনায় আক্রান্ত হলেন।

ধারাভি হলো এশিয়ার সব চেয়ে বড় বস্তি। এখানকার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা অতীতে বারবার তাঁদের আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। সেই ধারাভিতে করোনা ঢুকে পড়ায় বিশেষজ্ঞরা রীতিমতো চিন্তিত। শুধু ধারাভি নয়, দিল্লির নিজামুদ্দিনে তাবলিগের জমায়েত থেকে যাওয়া প্রচারকারীদের মাধ্যমেও দেশের গরিব এলাকাগুলিতে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

কেন্দ্রীয় স্বরষ্ট্র মন্ত্রক ও রাজ্য সরকারগুলি যে তথ্য দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, তাবলিগের জমায়েতে যোগ দেওয়া প্রায় ৪০০ জনের করোনা হয়েছে। সব চেয়ে বেশি হয়েছে তামিলনাড়ুতে, সেখানে ১৯০ জন আক্রান্ত। এ ছাড়া অন্ধ্রে ৭১, দিল্লিতে ৫৩, তেলেঙ্গানায় ২৮, অসমে ১৩, মহারাষ্ট্রে ১২, আন্দামানে ১০, জম্মু ও কাশ্মীরে ছয়, গুজরাট ও পুদুচেরিতে দুই জন করে আক্রান্ত হয়েছেন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক বলছে, তাবলিগের সঙ্গে জড়িত অন্তত নয় হাজার জনের করোনার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। এর মধ্যে সাত হাজার ৬৮৮ জন তাবলিগের স্থানীয় কর্মী এবং এক হাজার ৩০৬ জন বিদেশি। তাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে। বাকিদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে।

বিপদ হলো, এই কর্মীরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে লোকেদের সঙ্গে মিশেছেন। তাঁরা সংখ্যালঘু অধ্যুষিত গরিব এলাকায় বেশি কাজ করেন। ফলে সেই এলাকাতেও করোনা ছড়ানোর প্রবল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের খবর করা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রবীণ সাংবাদিক অবন্তিকা ঘোষ ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''ধারাভিতে করোনা ঢুকে গিয়েছে। তাবলিগের প্রচারকারীরা করোনা আক্রান্ত হলে, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে গরিব এলাকায় করোনা ছড়িয়ে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। তাই স্বাস্থ্য মন্ত্রক রীতিমতো চিন্তিত।''

ধারাভিতে পাঁচ বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে ১০ লাখেরও বেশি গরিব মানুষ থাকেন। অপরিসর নোংরা রাস্তা, খোলা নিকাশি নালা, গায়ে গায়ে বাড়ি, একটা ঘরে প্রচুর লোক গাদাগাদি করে থাকেন। এ হেন ধারাভিতে করোনা ঢুকে পড়া মানে পরিস্থিতি যে কোনও সময় ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পার্থ প্রতিম বোস ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''আমরা ঠিক এই আশঙ্কাই করছিলাম। ধারাভিতে এবং দেশের গরিব এলাকায় করোনা ঢুকে পড়লে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা।''

সরকারি তথ্য বলছে, ভারতে করোনাঢুকেছে মূলত বিত্তবানদের হাত ধরে। বিদেশ থেকে যে বিত্তবানরা ফিরেছেন, তাঁদের মধ্যে কয়েকজন করোনা নিয়ে ফিরেছেন। ভারতে আসা বিদেশিরাও করোনার বাহক ছিলেন। লকডাউন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলার কারণ হল, করোনা যাতে না ছড়ায় তার ব্যবস্থা করা। কিন্তু গরিব এলাকায় এই সামাজিক দূরত্ব অনেক সময়ই বজায় রাখা সম্ভব হয় না।  সে জন্যই এতটা চিন্তিত বিশেষজ্ঞরা।

এ ছাড়া প্রতিটি রাজ্যেই কম বেশি করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। গুজরাট ও হরিয়ানায় একজন করে করোনায় আক্রান্ত মারা গিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালের খবর, মহারাষ্ট্রে আরও তিনজন আক্রান্ত হয়েছেন। আসামেও তাই। রাজস্থানে নয় জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং ওড়িশায় একজন।  

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এএনআই)