1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়াতে অভিনব উদ্যোগ

১৫ অক্টোবর ২০১৯

মেক্সিকোয় সূর্যালোকের অভাব না থাকলেও সৌরশক্তির ব্যবহার এখনো সীমিত৷ আর্থিক ও পরিবেশগত সুবিধা তুলে ধরে একটি কোম্পানি শিল্পক্ষেত্রে সৌরশক্তির প্রয়োগ বাড়াতে ব্যাপক উদ্যোগ নিচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/3RI9r
ছবি: DW/Wolfgang Bernert

আর্থিক সাশ্রয়ের লক্ষ্যে বিনিয়োগ

লাকতেয়স মোহিকা চিজ ডেয়ারি এক পারিবারিক ব্যবসা৷ এই কোম্পানি প্রতি সপ্তাহে মেক্সিকোর বাজারের জন্য ৪০ টন চিজ উৎপাদন করে৷ প্রতি সপ্তাহে কারখানায় ৪০,০০০ লিটার গরম পানি ব্যবহার করা হয়৷ জীবাণু মেরে ফেলতে তাপমাত্রা ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখতে হয়৷ সেই পানি গরম করতে প্রায় এ লাখ লিটার তরল গ্যাস ব্যবহার করা হয়৷

ছাদের উপর ট্যাংকগুলি বসানো রয়েছে৷ নতুন সৌর প্রযুক্তির মাধ্যমে অবশ্য এর মধ্যেই আর্থিক সাশ্রয় হচ্ছে৷ কোম্পানির মালিক রিগোব্যার্তো মোহিকা গর্বের সঙ্গে বলেন, ‘‘এখনো পর্যন্ত আমাদের মাসে ৮০,০০০ মেক্সিকান পেসো মাশুল দিতে হতো৷ এখন সেই ব্যয় ৩০ শতাংশ কমে গেছে৷’’

কিন্তু এই প্রযুক্তি প্রয়োগের প্রক্রিয়ার ব্যয় তাঁর জন্য মোটেই কম ছিল না৷ ছাদের উপর প্রায় ১২০ বর্গ মিটার জায়গা জুড়ে সৌরশক্তির মাধ্যমে পানি গরম করার প্রণালীর খরচ পড়েছে প্রায় ৭৫ হাজার ইউরোর মতো৷ এখন সরাসরি সূর্যালোকের মাধ্যমে পানি গরম করা হচ্ছে৷ কিন্তু এখনো উন্নতির সুযোগ রয়েছে৷

সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়াতে জার্মান সহায়তা

সেই কাজে সহায়তা করতে ইনভেন্টিভ পাওয়ার কোম্পানির প্রযুক্তি বিভাগের প্রধান লদো আগ্রাস উইত্রন কারখানায় এসেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘সৌরশক্তি সংগ্রহ করে তার উত্তাপ কারখানার প্রচলিত প্রক্রিয়ায় কাজে লাগানোই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ৷ সাধারণত কোম্পানিগুলি জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানির সাহায্যে বাষ্প সৃষ্টি করে৷ প্রচলিত বয়লারের বদলে সৌর প্রণালী ব্যবহার করেও যে একই কাজ করা যায়, ক্রেতাদের তা বোঝানো সহজ নয়৷’’

জ্বালানির আদর্শ ব্যবহার

কোম্পানির দুই প্রতিষ্ঠাতা শুধু বিপণনের বিষয়ে আগ্রহী নয়৷ উচ্চাকাঙ্ক্ষী ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে তাঁরা দুজনেই ডেয়ারিতে আরও দক্ষতার সঙ্গে জ্বালানির ব্যবহার করতে চান৷ ইনভেন্টিভ পাওয়ার কোম্পানির কর্ণধার আনখেল মেহিয়া সান্তিয়াগো বলেন, ‘‘প্রত্যেক প্রকল্পই অদ্বিতীয়৷ ব্যবসার প্রক্রিয়া আদর্শ করে তুলতে এবং জ্বালানির ব্যবহার ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে সময় লাগে৷’’

প্রায় সাড়ে পাঁচশো কিলোমিটার পূর্বে মেক্সিকো সিটি অবস্থিত৷ জনসংখ্যা প্রায় দুই কোটি৷ পৃথিবীর এই প্রান্তে পর্যাপ্ত সূর্যালোক সত্ত্বেও সৌরশক্তি এখনো বড় ব্যবসা হয়ে উঠতে পারে নি৷

আনখেল মেহিয়া একই জায়গায় মোট তিনটি বাণিজ্যমেলায় গেছেন৷ তার মধ্যে একটির নাম ইন্টারসোলার মেক্সিকো৷ মেহিয়া মেলা ঘুরে দেখে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে ধারণা পেতে চান৷ সেইসঙ্গে নিজের ব্যবসাও চাঙ্গা করতে চান৷ মেলায় তাঁর কোম্পানিরও নিজস্ব স্টল রয়েছে৷ আনখেল বলেন, ‘‘আমাদের প্রযুক্তি সম্পর্কে দর্শকদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলা অন্যতম প্রধান লক্ষ্য৷ এমন ধরনের প্রযুক্তি যে মেক্সিকোয় একশোরও বেশি কোম্পানিতে প্রয়োগ করা হচ্ছে, তা জানানো প্রয়োজন৷ অর্থাৎ দর্শকদের বোঝাতে হবে, যে এই প্রযুক্তি সত্যি চালু আছে এবং এখনই তা কাজে লাগানো সম্ভব৷’’

সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়াতে জার্মানির সহযোগিতা

তবে শিল্পক্ষেত্রে থার্মাল বা উত্তাপভিত্তিক সৌর প্রযুক্তির প্রয়োগ এখনো বাজারের এক সামান্য অংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ৷ সোলার মার্কেটিং স্ট্র্যাটিজিস্ট হিসেবে মারিসোল ওরোপেসা সেই পরিস্থিতি বদলানোর পরিকল্পনা করছেন৷ জার্মান সরকারের সহায়তায় তিনি গোটা দেশে সোলার থার্মাল প্রযুক্তির ভাবমূর্তি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন৷ মারিসোল বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে সচেতনতার অভাব রয়েছে৷ অনেক মানুষ এখনো জানে না, যে সৌর জ্বালানি ব্যবহার করে পানি গরম করা যায়৷ অনেকের ধারণা, সৌরশক্তি ব্যবহার করে শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব৷ তাই মানুষকে এর অন্য প্রয়োগ সম্পর্কেও বোঝাতে হবে৷’’

২০১০ সালে ইনভেন্টিভ পাওয়ার কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল৷ এই কোম্পানি ৬০টি সোলার থার্মাল প্লান্ট গড়ে তুলেছে, সম্মিলিতভাবে যেগুলি বছরে প্রায় ৪,০০০ টন কার্বন নির্গমন কমাচ্ছে৷ আলদো আগ্রাস উইত্রন এই প্রযুক্তির উপযোগিতা ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘এই সোলার কালেক্টরের আকার প্যারাবোলিক বা অধিবৃত্তের মতো৷ সেটির উপরিভাগে যত শক্তি ধরা পড়ে, তা এই রিসিভারে প্রতিফলিত হয়৷ ফলে সেখানে উচ্চ তাপমাত্রা সৃষ্টি হয়৷ নলের মধ্য দিয়ে পানি যাবার সময়ে সূর্যের আলো থেকে পাওয়া প্রবল উত্তাপ শুষে নেয়৷’’

প্রযুক্তির আদর্শ প্রয়োগ

তবে সেই কালেক্টারের অবস্থান নিখুঁত হতে হবে৷ আলদো আগ্রাস উইত্রন তার কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘যতটা সম্ভব শক্তি ধরতে কালেক্টরটিকে সারাদিন সূর্যের গতিপথ অনুযায়ী অবস্থান নিতে হয়৷ সেটা সম্ভব করতে আমরা পাওয়ার ট্র্যাকার প্রো ব্যবহার করি৷ সেই ইলেকট্রনিক বোর্ডের মধ্যে সেন্সরসহ নানা যন্ত্রপাতি রয়েছে, যার মাধ্যমে প্রকল্পগুলিতে সৌরশক্তির ব্যবহারের উপর নজর রাখা যায়৷’’

এই ডেয়ারি কোম্পানির প্রধান প্রকল্পগুলির মধ্যে পড়ে৷ মালিক হিসেবে রিগোব্যার্তো আগামি পাঁচ বছরের মধ্যে বিনিয়োগের সুফল পাবার আশা করছেন৷ পরিবেশে উন্নয়নের ক্ষেত্রে এই উদ্যোগ অবশ্যই বিশাল অবদান রাখছে৷

ভল্ফগাং ব্যার্নার্ট/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য