1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কুকুরদের টেলিভিশন

১৬ আগস্ট ২০১৩

মানুষের প্রিয় পোষ্য হল কুকুর৷ পশ্চিমে তাদের জন্য বিশেষ খাবার, খেলনা, আসবাবপত্র, লোম ছাঁটার সেলুন, গয়নাগাটি, ডাক্তার, থেরাপিস্ট, সবই আছে৷ তাহলে টেলিভিশনই বা থাকবে না কেন?

https://p.dw.com/p/19QSW
As temperatures in Havana, Cuba, decline during the winter season, a woman keeps her dog warm with a sweater Saturday, 05 February 2005. When temperaturs on the island decline many Cuban dog owners keep their dogs warm by using baby clothes. EPA/Alejandro Ernesto +++(c) dpa - Bildfunk+++
Hund im Pulloverছবি: picture-alliance/dpa/dpaweb

মানুষেরা সোফায় বসে বিয়ার হাতে টেলিভিশন দেখতে দেখতে অলস, মেদবহুল ও কায়িক পরিশ্রম বিমুখ হয়ে পড়ে৷ সেটা কি এবার কুকুরদের ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে? মার্কিন মুলুকের ‘‘ডগ টিভি''-র প্রোগ্রাম দেখে কি কুকুররা তাদের সবচেয়ে প্রিয় ‘হাঁটতে যাওয়া'-ও ছেড়ে দেবে?

মানুষের সবচেয়ে প্রিয় পোষ্য হবার দামও দিতে হয় কুকুরদের, মালিক-মালকিন যখন কাজে বা বাজারে গেছেন, তখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা একা বাড়িতে বা ফ্ল্যাটে আবদ্ধ থেকে৷ অর্থাৎ সুখী সারমেয় জীবনের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল একাকিত্ব এবং বোর হওয়া – অনেকটা একলা থাকা মানুষদের মতোই৷

একলা থাকা মানুষেরা, তা তারা যে বয়সেরই হোন, সাধারণত একাকিত্ব ও বোরডম দূর করার জন্য যে ম্যাজিক বক্সটির দ্বারস্থ হন, সেটি হল টেলিভিশন: হাজারটা চ্যানেলে কতরকমের যে অনুষ্ঠান চলছে চব্বিশ ঘণ্টা, তার ইয়ত্তা নেই৷ কিন্তু কুকুররা? তাদের জন্যে কি একটাও চ্যানেল থাকবে না?

সেরা ডগ-সিটার

কেন থাকবে না, ভাবলেন রন লেভি, এবং চব্বিশ ঘণ্টার ডগ চ্যানেল চালু করলেন, সপ্তাহে সাতদিন৷ অবশ্য চতুষ্পদদের জন্য টিভি প্রোগ্রাম করাটা যতো সোজা ভাবা হচ্ছে, ততোটা নয়৷ চ্যানেল খোলার আগে কুকুরদের আচরণ ও মানসিকতা নিয়ে রীতিমতো গবেষণা করতে হয়েছে – যেমন বস্টনের টাফ্টস ইউনিভার্সিটিতে৷

বহু ফ্ল্যাটে ক্যামেরা বসিয়ে একা থাকা কুকুরদের ভাবসাব পর্যবেক্ষণ করেছেন গবেষকরা৷ দেখা গেছে, টেলিভিশন চালু থাকলে কুকুররা ভালো বোধ করে, বিশেষ করে প্রোগ্রামে যা দেখানো হচ্ছে, তা যদি তাদের মনের মতো হয়৷ এই সব গবেষণা লব্ধ তথ্য থেকেই রন লেভি-র দাবি, তাঁর ‘‘ডগ টিভি'' হল কুকুরদের জন্য সেরা ডগ-সিটার৷

অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা

সব কুকুরের মানসিক পরিস্থিতি কিংবা প্রয়োজন তো এক হয় না, তাই নানা ধরনের প্রোগ্রাম ডেভেলপ করা হয়েছে৷ একটি অনুষ্ঠানের নাম ‘‘রিল্যাক্সেশন'': দেখানো হচ্ছে কুকুরের ঘুমন্ত বাচ্চা, হ্রদের জলে দাঁড়টানা নৌকো, সেই সঙ্গে পিয়ানোয় টুংটাং মিউজিক৷ এই প্রোগ্রামটা হল যে সব কুকুর যাকে-বলে-কিনা হাইপারঅ্যাকটিভ, তাদের ঠাণ্ডা করার জন্য৷

‘‘স্টিমিউলেশন'' বা ‘উত্তেজনা' প্রোগ্রামটি হল যে সব কুকুররা নড়তে চড়তে চায় না, তাদের চাঙ্গা করার জন্য৷ প্রোগ্রামটিতে ছটফটে সব ছবি দেখিয়ে অলস কুকুরদের সচল করা হয়৷ হয়তো কোনো গোল্ডেন রিট্রিভার জাতীয় কুকুর বাগানে একটি লাল বলের পিছনে ধাওয়া করছে, তার মালকিন প্রশংসা করে বলছেন: ‘‘গুড ডগ!'' ক্যামেরার অ্যাঙ্গল কিন্তু সবসময় কুকুরটির নাক বরাবর৷

পরে দেখা যাচ্ছে এক অ্যাসেশিয়ান কুকুর সুইমিং পুলে একটি রবারের খেলনার পিছনে সাঁতার কাটছে; অথবা একটি ছোট কুকুর জলের উপর সার্ফিং করছে৷ কিন্তু দেখাটাই তো কুকুরদের সব নয়, তারা দুনিয়াটাকে দেখে – বা শোঁকে – তাদের নাক দিয়ে৷ তাছাড়া কুকুররা নাকি ঠিকমতো রং দেখে না৷ কাজেই তারা ঠিকমতো টেলিভিশনের ছবি দেখবে কি করে? সেও এক প্রশ্ন৷

Crufts Hundeshow Birmingham 2013
ছবি: Reuters

আসলে তিন থেকে পাঁচ মিনিটের ক্লিপগুলোতে কুকুরদের হাঁকডাক কিংবা মানুষের রাগারাগি, চিল্লাচিল্লি গোত্রীয় কিছু নেই৷ কাজেই কুকুরদের এগুলো ভালো লাগারই কথা৷ অন্যদিকে ‘‘এক্সপোজার'' পর্যায়ের ক্লিপগুলিতে বাস্তবতার ছোঁয়া আছে, কেননা এখানে মানুষ এবং তার পোষ্যকে নানা দৈনন্দিন পরিস্থিতিতে দেখানো হয়েছে: ঝড়-বৃষ্টি-বজ্রপাত; ভাঙাচোরা রাস্তায় গাড়িতে করে যাওয়া৷ এবং অবশ্যই বেচারা ডাকপিয়নকে দন্তপ্রদর্শন৷

লেভি-র পরের প্রকল্প? প্রশ্ন করার প্রয়োজন আছে কি? স্বভাবতই ‘‘ক্যাট টিভি'' বা মার্জার টিভি৷

এসি / এসবি (ডিপিএ)