‘‘নির্বাচনি মাঠে ব্যক্তি হিসেবে আমিই জনপ্রিয়তায় এগিয়ে ও শক্তিশালী প্রার্থী''- প্রার্থিতা ফিরে পেয়ে হিরো আলমের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ডয়চে ভেলের পাঠক মরিয়ম ঝুমার ব্যক্তিগত মতামত এরকম, ‘‘উনি অনেক বড় অসাধ্য সাধন করে দেখিয়েছেন৷ যাঁরা অল্পতে হাল ছেড়ে দেয়, তাঁরা ওনাকে দেখে প্রেরণা পেতে পারে৷ উনি সহজ-সরল হলেও কিন্তু একেবারে বোকা নন, তা তিনি বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন৷''
আর হিরো আলমকে ভোট দেওয়া প্রসঙ্গে মোহাম্মদ হাবীব লিখেছেন, ‘‘এখন দলীয় নেতাদের চুরি করার ধান্দা আছে, তার চেয়ে হিরোকে ভোট দিলে ভালো হবে৷''
তবে পুরোপুরি ভিন্নমত পাঠক হাম্মাদ সেজুলের৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘এগুলো একটা জাতির পতনের চিহ্ন৷ জাতির সূর্যসন্তানদের জেলে বন্দি রেখে, পর্দার আড়ালে পচতে দিয়ে এখন এসব মূর্খ, অশিক্ষিত, জোকারদের নিয়ে সময় ব্যয় করছে মেইনস্ট্রিম মিডিয়া! যে টপিক নিয়ে প্রথম পাতায় কিংবা প্রাইমটাইম নিউজ হওয়ার কথা, দেখা যাচ্ছে সেখানে জায়গা জুড়ে নিয়েছে হিরো আলম ও খান হেলাল নামের উদ্ভটরা৷''
-
নির্বাচনি প্রচারণার কয়েকটি নীতিমালা
চাঁদা দেয়া যাবে না
কোনো প্রার্থী বা তাঁর পক্ষ থেকে অন্য কেউ নির্বাচনের আগে উক্ত প্রার্থীর নির্বাচনি এলাকায় বসবাসকারী কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী কিংবা উক্ত এলাকা বা অন্যত্র অবস্থিত কোনো প্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে বা গোপনে কোনো চাঁদা বা অনুদান দেয়া বা দেয়ার অঙ্গীকার করতে পারবেন না৷
-
নির্বাচনি প্রচারণার কয়েকটি নীতিমালা
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন চলবে না
নির্বাচনপূর্ব সময়ে কোনো সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে রাজস্ব বা উন্নয়ন তহবিলভুক্ত কোনো প্রকল্পের অনুমোদন, ঘোষণা বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন বা ফলক উন্মোচন করা যাবে না৷
-
নির্বাচনি প্রচারণার কয়েকটি নীতিমালা
পোস্টারের আকার
সাদা-কালো রংয়ের ও আয়তন অনধিক ৬০X৪৫ সেন্টিমিটার এবং ব্যানার সাদা-কালো রংয়ের ও আয়তন অনধিক ৩X১ মিটার হতে হবে এবং পোস্টারে বা ব্যানারে প্রার্থী তাঁর প্রতীক ও নিজের ছবি ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তির ছবি বা প্রতীক ছাপাতে পারবেন না৷ তবে প্রার্থী কোনো নিবন্ধিত দলের মনোনীত হলে সেক্ষেত্রে তিনি কেবল তাঁর বর্তমান দলীয় প্রধানের ছবি পোস্টারে ছাপাতে পারবেন৷
-
নির্বাচনি প্রচারণার কয়েকটি নীতিমালা
যেখানে পোস্টার লাগানো যাবে না
কোনো প্রার্থী কিংবা তাঁর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি সিটি কর্পোরেশন ও পৌর এলাকায় অবস্থিত দালান, দেয়াল, গাছ, বেড়া, বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের খুঁটি, সরকারি বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের স্থাপনাসমূহ এবং বাস, ট্রাক, ট্রেন, স্টিমার, লঞ্চ, রিক্সা কিংবা অন্য কোনো প্রকার যানবাহনে পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল লাগাতে পারবেন না৷ তবে দেশের যে কোনো স্থানে এসব ঝুলানো বা টাঙানো যাবে৷
-
নির্বাচনি প্রচারণার কয়েকটি নীতিমালা
অন্যের পোস্টারে নয়
কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পোস্টার, লিফলেট, হ্যান্ডবিল ইত্যাদির উপর অন্য কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পোস্টার, লিফলেট, হ্যান্ডবিল ইত্যাদি লাগানো যাবে না এবং উক্ত পোস্টার, লিফলেট ও হ্যান্ডবিলের কোনো প্রকার ক্ষতিসাধন তথা বিকৃতি বা বিনষ্ট করা যাবে না৷
-
নির্বাচনি প্রচারণার কয়েকটি নীতিমালা
হেলিকপ্টার নয়
কোনো দল বা তার মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি ট্রাক, বাস, মোটর সাইকেল, নৌযান, ট্রেন কিংবা অন্য কোনো যান্ত্রিক যানবাহন নিয়ে মিছিল বের করতে পারবেন না কিংবা কোনো শোডাউন করতে পারবেন না৷ প্রচারণাকাজে হেলিকপ্টার বা অন্য কোনো আকাশযান ব্যবহার করা যাবে না৷ তবে দলীয় প্রধানরা যাতায়াতের জন্য তা ব্যবহার করতে পারবেন৷
-
নির্বাচনি প্রচারণার কয়েকটি নীতিমালা
ভয় দেখানো চলবে না
কোনো দল বা তার মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি প্রচারণার ক্ষেত্রে সমান অধিকার পাবে৷ তবে প্রতিপক্ষের সভা, শোভাযাত্রা এবং অন্যান্য প্রচারাভিযান পন্ড বা তাতে বাধা প্রদান বা ভীতিসঞ্চারমূলক কিছু করতে পারবে না৷
-
নির্বাচনি প্রচারণার কয়েকটি নীতিমালা
দেয়াললিখন নয়
দেয়ালে লিখে প্রচারণা চালানো যাবে না৷ কালি বা রং দিয়ে বা অন্য কোনোভাবে দেয়াল ছাড়াও কোনো দালান, থাম, বাড়ি বা ঘরের ছাদ, সেতু, সড়কদ্বীপ, রোড ডিভাইডার, যানবাহন বা অন্য কোনো স্থাপনায় প্রচারণামূলক কোনো লিখন বা অংকন করা যাবে না৷ প্রতীক হিসাবে জীবন্ত প্রাণী ব্যবহার করা যাবে না৷ উপরের ছবিটি প্রতীকী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে৷
-
নির্বাচনি প্রচারণার কয়েকটি নীতিমালা
খাবার দেয়া যাবে না
নির্বাচনি ক্যাম্পে ভোটারদের কোনোরকম কোমল পানীয় বা খাদ্য পরিবেশন বা কোনো উপঢৌকন দেয়া যাবে না৷
-
নির্বাচনি প্রচারণার কয়েকটি নীতিমালা
মসজিদ, মন্দিরে নয়
মসজিদ, মন্দির, গির্জা বা অন্য কোনো ধর্মীয় উপাসনালয়ে কোনো নির্বাচনি প্রচারণা চালানো যাবে না৷ প্রচারণার সময় ব্যক্তিগত চরিত্র হনন করে বক্তব্য দেয়া বা কোনো ধরনের তিক্ত বা উসকানিমূলক বা মানহানিকর কিংবা লিঙ্গবৈষম্যমূলক, সাম্প্রদায়িক বা ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগে এমন বক্তব্য দেয়া যাবে না৷
-
নির্বাচনি প্রচারণার কয়েকটি নীতিমালা
মাইক ব্যবহারের নিয়ম
নির্বাচনি এলাকায় মাইক বা শব্দের মাত্রা বর্ধনকারী কোনো যন্ত্রের ব্যবহার দুপুর দুইটা থেকে রাত আটটার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে৷
-
নির্বাচনি প্রচারণার কয়েকটি নীতিমালা
নিয়ম না মানলে
কোনো প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি কোনো নিয়ম ভঙ্গ করলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন৷ দলের ক্ষেত্রেও এই শাস্তি প্রযোজ্য হবে৷
আর পাঠক রাজু খান মনে করেন, সমাজের উঁচু শ্রেণির মানুষগুলো যখন অহংকার, লুটপাট, বিদ্বেষপূর্ণ সমাজ চালু রাখবে, তখন হিরো আলমরাই এগিয়ে আসতে চাইবে৷''
অন্যদিকে সালাউদ্দিনের প্রশ্ন, ‘‘১২৫ কোটি জনসংখ্যার দেশ ইন্ডিয়াতে একজন দলিত, চা বিক্রেতার ছেলে যদি দেশের প্রধান হতে পারে, তা হলে হিরো আলমের মতো একজন বড় মাপের হিরো এমপি হতে পারবে না? যদি হিরো আলম এমপি হতে পারে, তাহলে ওর নির্বাচনি এলাকা হবে বাংলাদেশের একটি ডিজিটাল এলাকা!''
ওদিকে সাকিলা জাহান কলি মনে করেন, হিরো আলম ইয়াবা সম্রাট বদির চেয়ে যোগ্য প্রার্থী৷ তবে আলী হোসেন মনে করেন, ‘‘যে কোনো নাগরিকেরই ভোটে জিতে সংসদে যাবার অধিকার আছে৷''
হিরো আলম যেহেতু অভিনয় করে জিরো থেকে হিরো হয়েছে, সেহেতু তিনি রাজনীতিতেও জিরো থেকে হিরো হবেন বলে ধারণা হিরো আলমের ভক্ত নূর মোহাম্মদের৷
পাঠক শামীম আলম লিখেছেন, ‘‘আমিও চাই হিরো আলম এগিয়ে যাক, বেস্ট অফ লাক হিরো আলম৷'' আর হাসিনা হোসেনের মতে দেশের ‘শিক্ষিত চোর' নেতাদের চেয়ে হিরো আলম অনেক ভালো৷
তবে কামাল হোসেন হিরো আলমকে প্রার্থী হতে দেখে লিখেছেন, ‘‘সংসদে মনে হয় শিক্ষার কোনো দাম নেই৷'' পাঠক মাহমুদ হাসান এবং মিরাজ আনামের মন্তব্য, ‘‘ইটস আ জোক৷''
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী