1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীলতা কমান’

৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে ইউরোপকে স্বনির্ভর হবার পরামর্শ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তিন দূতের৷ ডয়চে ভেলেতে লেখা এক মতামতে তাঁরা বলেন, যদি জ্বালানির জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ে, তা পশ্চিমের জন্য ভয়ঙ্কর হতে পারে৷

https://p.dw.com/p/3CuGx
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Sauer

জার্মানি, ডেনমার্ক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের তিন মার্কিন রাষ্ট্রদূত রিচার্ড অ্যালেন গ্রেনেল, কার্লা স্যান্ডস ও গর্ডন সন্ডল্যান্ড যৌথভাবে এই মতামত লিখেছেন জার্মান আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলেতে৷ সেখানে তাঁরা রাশিয়ার সঙ্গে নর্ড স্ট্রিম-২ গ্যাস পাইপলাইনটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য কতটা ‘ক্ষতিকর’ তা তুলে ধরেন৷

তাঁরা লিখেছেন, ‘‘এই মুহূর্তে ডজনখানেক ইউরোপের দেশ ৭৫ ভাগ প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা মেটায় রাশিয়ার কাছ থেকে আমদানি করে৷ এটা যু্ক্তরাষ্ট্রের মিত্র রাষ্ট্রগুলোকে মস্কো’র ইচ্ছা-অনিচ্ছার কাছে অরক্ষিত অবস্থায় ফেলে রেখেছে৷ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন বারবার, যেমন ২০০৬, ২০০৯, ২০১৪ ও সর্বশেষ গত বছর মার্চে, এই গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়াকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন৷’’

Richard Grenell
রিচার্ড অ্যালেন গ্রেনেল, জার্মানিতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের দূতছবি: Gemeinfrei

নর্ড স্ট্রিম ২ পাইপলাইনটি রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ বন্ধের কৌশলকে আরো শক্তিশালী করবে বলে মনে করেন তাঁরা৷ তাঁরা লিখেছেন, ‘‘ইউরোপের জ্বালানি খাতে স্বনির্ভরতা ফিরিয়ে আনা উচিত৷’’

বাল্টিক সাগরের নীচ দিয়ে দ্বিতীয় পাইপলাইনটি শুধু যে রাশিয়ার গ্যাসের ওপর ইউরোপের নির্ভরতা বাড়াবে তা-ই নয়, এতে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও স্থিতিশীলতার ওপর মস্কোর প্রভাব আরো বাড়বে বলে মনে করেন তিন মার্কিন রাষ্ট্রদূত৷

তাঁরা লিখেছেন, ‘‘গ্যাসের বিনিময়ে ইউরোপ বিলিয়ন বিলিয়ন ইউরো রাশিয়াকে দেবে এবং সেই অর্থ ইউক্রেন ও সিরিয়ার মতো দেশগুলোতে সামরিক আগ্রাসন বাড়াতে ব্যয় করবে রাশিয়া৷’’ শুধু তাই নয়, পুরো ইউরোপে রাশিয়ার আগ্রাসন আরো বাড়বে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তাঁরা৷

Carla Sands
কার্লা স্যান্ডস, ডেনমার্কে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের দূতছবি: Public Domain

লেখায় তাঁরা জার্মানি ও অন্য যেসব দেশ এই পাইপলাইনের পক্ষে, তাদেরকে প্রকল্পের বিরোধিতাকারী প্রতিবেশীদের শঙ্কার কথা স্মরণ করিয়ে দেন৷

‘‘ইইউ’র অর্ধেকেরও বেশি দেশ খোলাখুলিভাবে নর্ড স্ট্রিম ২-এর বিরোধিতা করেছে এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ‘ইউরোপের জ্বালানি নিরাপত্তার ওপর হুমকিস্বরূপ রাজনৈতিক প্রকল্প’ মর্মে একটি রেজল্যুশন পাস করেছে৷’’

তাঁদের মতে, ‘‘এখনো দেরি হয়ে যায়নি, প্রকল্প বন্ধ করার সময় আছে৷ তবে সময় খুব দ্রুত চলে যাচ্ছে৷’’

তিন মার্কিন দূতের মতে, ইইউ’র বাজারে যে নিয়মের মধ্যে (থার্ড এনার্জি প্যাকেজ) জ্বালানি কোম্পানিগুলো অপারেট করে, ইইউ'র বাইরে থেকে আসা কোম্পানিগুলোকেও সেই নিয়মের মধ্যেই আসা উচিত৷ তাঁরা মনে করেন, গ্যাজপ্রম (রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় কোম্পানি) ইইউ’র কোম্পানিগুলোর চেয়ে নিম্নমানের এবং এটি ইউরোপের গ্যাসের বাজার নষ্ট করবে৷ তাই নর্ড স্ট্রিম-২ বন্ধ করা কঠিন হলে থার্ড এনার্জি প্যাকেজের গ্যাস সংক্রান্ত নিয়মে পরিবর্তন আনার পরামর্শ দেন তাঁরা৷

Gordon Sondland
গর্ডন সন্ডল্যান্ড, ইইউতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের দূতছবি: Public Domain

উল্লেখ্য, নর্ড স্ট্রিম একটি জোড়া পাইপলাইন প্রকল্প, যার একটি ২০১১ সালে এবং পরেরটি ২০১২ সালে চালু হয়৷ রাশিয়ার লেনিনগ্রাদ থেকে জার্মানির গ্রিফসভাল্ড পর্যন্ত এই পাইপলাইন তৈরি করা হয়৷ বছরে প্রায় ১ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের ক্ষমতা আছে পাইপলাইন দু'টির৷ এই পাইপলাইনের সিংহভাগ শেয়ার গ্যাজপ্রমের৷

এর ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে ২০১৮ সালের মে মাসে আরো দু'টি পাইপলাইন (নর্ডস্ট্রিম ২) তৈরির কাজ শুরু হয়েছে৷ এ বছর তা শেষ হবার কথা রয়েছে৷ এর সরবরাহ ক্ষমতা বছরে ৩ দশমিক ৯ টিসিএফ৷ এই পাইপলাইন দু'টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও পূর্ব ইউরোপের বেশ ক'টি দেশ আপত্তি জানিয়ে আসছে৷

জেডএ/এসিবি