1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মুসলিম দেশগুলোর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের প্রতি আবারও আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ তাঁদের উপর নির্যাতন বন্ধ ও ‘বাঙালি’ হিসেবে অপপ্রচার বন্ধ করাসহ ছয়টি পদক্ষেপ নেয়ার প্রস্তাব করেছেন মুসলিম দেশগুলোর নেতাদের কাছে৷

https://p.dw.com/p/2kLUj
১২ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গাদের দেখতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাছবি: picture alliance/AP Photo/S. Kallol

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে ওআইসিভুক্ত ইসলামিক দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন শেখ হাসিনা৷ এখনই ব্যবস্থা না নিলে অনেক দেরি হয়ে যাবে বলেও সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি৷ মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ওআইসি কনট্যাক্ট গ্রুপের বৈঠকে শেখ হাসিনা এই সমস্যা সমাধানে ৬ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন৷

প্রথমত, রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সব ধরনের নিপীড়ন এই মুহূর্তে বন্ধ করতে হবে৷ দুই. নিরপরাধ বেসামরিক জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য মিয়ানমারের ভেতরে নিরাপদ এলাকা (সেফ জোন) তৈরি করা যেতে পারে, যেখানে তাদের সুরক্ষা দেওয়া হবে৷ তিন. বাস্তুচ্যূত সব রোহিঙ্গা যেন নিরাপদে এবং মর্যাদার সঙ্গে  তাদের বাড়িতে ফিরতে পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে৷ চার. রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে কোফি আনান কমিশনের পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ অবিলম্বে নিঃশর্তভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে৷ পাঁচ. রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি’ হিসেবে চিহ্নিত করার যে রাষ্ট্রীয় অপপ্রচার মিয়ানমার চালাচ্ছে, তা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে৷ ছয়. রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে না ফেরা পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের জরুরি মানবিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে হবে ভ্রাতৃপ্রতিম মুসলিম দেশগুলোকে

বৌদ্ধ অধ্যুষিত মিয়ানমারে সহিংসতা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ৪ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে৷

মঙ্গলবার রাতে ঐ বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘আমরা মিয়ানমারকে বলেছি রোহিঙ্গারা তোমাদের নাগরিক, তোমাদের অবশ্যই তাদের ফিরিয়ে নেয়া উচিত, উচিত তাদের নিরাপত্তা দেয়া, আশ্রয় দেয়া, তাদের উপর দমন-নিপীড়ন, নির্যাতন বন্ধ করা৷’’ তিনি আরও জানান, মিয়ানমার যাতে শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয় এজন্য কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখবেন তিনি৷ বলেন, ‘‘মিয়ানমার সরকার আমাদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি৷ বরং তারা সীমান্তে ভূমি মাইন স্থাপন করেছে, যাতে রোহিঙ্গারা নিজেদের দেশে ফিরে যেতে না পারে৷’’

মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী নেত্রী অং সান সু চি'র ভাষণের কয়েক ঘণ্টা পরই শেখ হাসিনা মুসলিম দেশগুলোর সামনে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন৷ বলেন, ‘‘মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী বলে অভিহিত করে আসছে এবং তাদের নাগরিকত্ব দিতে রাজি নয়৷ অথচ এই রোহিঙ্গারা বহু বছর ধরে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে বসবাস করে আসছে সেখানে৷ প্রথমত তারা নিবন্ধিত জাতিগোষ্ঠীর তালিকা থেকে রোহিঙ্গাদের বাদ দিয়েছে৷ তারপর ১৯৮২ সালের আইনে তাদের নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকার করা হয়েছে৷ রোহিঙ্গাদের নিজ দেশেই আইডিপি ক্যাম্পে পাঠিয়েছে তারা৷’’

বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বাসস জানিয়েছে, মুসলিম দেশগুলোর কাছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য অবিলম্বে জরুরি মানবিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী৷ তিনি বলেছেন, ‘‘এ এক অবর্ণনীয় মানবিক বিপর্যয়৷ আমি শরণার্থী শিবিরগুলোতে গিয়েছি, তাদের অভিজ্ঞতা নিজ কানে শুনেছি৷ বিশেষ করে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে৷ আমি চাই আপনারা সবাই বাংলাদেশে এসে তাদের কাছ থেকেই শুনুন মিয়ানমারে কী নির্মম অত্যাচার নির্যাতন চালানো হয়েছে তাদের উপর৷’’

এপিবি/এসিবি (এপি, বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম, এএফপি)