1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শিশুদের পার্ক নাকি ‘শিশু তৈরির পার্ক'!

১৯ মার্চ ২০১৯

বাংলাদেশের শহরগুলোতে শিশুদের বিনোদনের ব্যবস্থা তেমন একটা নেই – এ কথা মোটাদাগে বলাই যায়৷ শিশু পার্ক যেগুলো আছে সেগুলোতে ছোটদের চেয়ে বড়দের আনাগোনাই বেশি৷ খুলনার গিলাতলায় এক শিশুপার্কে গিয়ে হয়েছে বিব্রতকর অভিজ্ঞতা৷

https://p.dw.com/p/3FB8n
Erwachsene in Kinderpark in Bangladesch
ছবি: DW/A. Islam

রাজধানী ঢাকায় শিশুদের নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার নানা ব্যবস্থা রয়েছে৷ প্রয়োজনের তুলনায় কম হলেও শিশুপার্কের পাশাপাশি বড় বড় শপিং মলগুলোতে রয়েছে শিশুদের জন্য আলাদা বিনোদন পার্ক৷ ঢাকার আশেপাশেও একাধিক এরকম পার্ক রয়েছে৷ কিন্তু রাজধানীর তুলনায় কম গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে শিশুদের জন্য ঘরের বাইরে চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা বলতে শুধু শিশু পার্ক৷

খুলনার গিলাতলায় সেরকমই এক শিশুপার্কে যাওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে এবার৷ বনবিলাস নামের পার্কটি বাইরে থেকে বেশ পরিচ্ছন্ন মনে হলো৷ ভেতরে শিশুদের নানারকম রাইডও আছে৷ কিন্তু সেগুলো ব্যবহার করতে গেলে দেখা যায় নানা বিড়ম্বনা৷ দাদাদাদির সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া দুই শিশুকে পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে বুঝলাম রাইডগুলোর অবস্থা বেশ নাজুক৷ কোনোটাতে ব্যাটারি নেই, কোনোটা নিয়মিত ব্যবহার করা হয় না বলে ময়লার আবরণে ঢাকা পড়ে গেছে৷

সবচেয়ে বিপজ্জনক ঘটনা ঘটলো যখন শিশু দু'টিকে নিয়ে তাদের দাদাদাদি মেশিনচালিত নাগরদোলায় উঠতে গেলেন৷ সেটির চালক জানালেন বড়ছোট সবাই সেই নাগরদোলায় উঠতে পারবে৷ তাদের বারংবার আশ্বাসে সেই নাগরদোলায় উঠতে গিয়ে আহত হলেন দাদি৷ নাগরদোলার একটি সিটের হাতলের কাছেই একটি লোহা ভেঙে সুচালো হয়ে ছিল৷ সেটির উপর হাত রাখতেই তালুর বেশ খানিকটা কেটে গেল তাঁর৷ ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য এ ধরনের আঘাত বিপজ্জনক৷

Arafatul Islam Kommentarbild App
আরাফাতুল ইসলাম, ডয়চে ভেলে

কিন্তু পার্ক কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর তাদের মধ্যে বিশেষ ভাবান্তর দেখা গেল না৷ তাদের নেই কোনো ‘ফার্স্ট এইডবক্স' কিংবা প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা৷ বরং পার্কের ম্যানেজারকে বিষয়টি জানানোর পর তিনি নিজের সাবেক সেনা পরিচয় দিয়ে একটি ভীতিকর পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করলেন৷

শিশুপার্কটিতে শিশুদের নানা রাইড রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়লেও পার্কটিতে দর্শণার্থীর তেমন একটা অভাব চোখে পড়লো না৷ বরং তরুণ বয়সিদের আনাগোনা সেখানে বেশি৷ জোড়ায় জোড়ায় তরুণ-তরুণীদের পার্কের নানা কোনায় অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে সময় কাটাতে দেখা গেল৷ শিশু পার্কে শিশুদের সামনেই তাদের অতিঘনিষ্ঠ হওয়ার দৃশ্য দৃষ্টিকটু বটে!

বনবিলাস পার্কটি তাই নামে শিশু পার্ক হলেও সেটি যে আসলে একটি ‘ডেটিং স্পট' তা বুঝতে বেশি সময় লাগেনি৷ আর তখন রাইডগুলোর দুরাবস্থার কারণ বোঝা গেল৷ মালিক কর্তৃপক্ষ সম্ভবত ‘শিশু পার্ক' নামটি ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে তরুণ-তরুণীদের প্রেমলীলার এক নিরাপদ আশ্রয় বানিয়েছেন পার্কটিকে৷ অথচ সেনানিবাসের খুব কাছে অবস্থিতি এই পার্কে শিশুদের জন্য আরো উন্নত পরিবেশ আশা করে সাধারণ মানুষ৷

খোঁজ নিয়ে জানলাম, শিশু পার্কটিতে যে এরকম কর্মকাণ্ড ঘটছে তা অতীতে বিচ্ছিন্নভাবে গণমাধ্যমে এসেছে৷ তবে তাতে পরিস্থিতি তেমন একটা বদলায়নি৷ বরং ফেসবুকে কেউ কেউ সেটির নাম দিয়েছে ‘শিশু তৈরির পার্ক'৷ অবশ্য শুধু বনবিলাস নয়, এরকম অবস্থা কমবেশি আরো অনেক শিশুপার্কে দেখা যায়৷ বিশেষ করে জেলা শহরগুলোতে শিশুদের জন্য তৈরি পার্কে জোড়ায় জোড়ায় তরুণ-তরুণীদের দেখা মেলে বেশি৷ তাই, অভিভাবকরা সেসব পার্কে না যাওয়াকেই শ্রেয় মনে করেন৷ ফলে বঞ্চিত হয় শিশুরা৷

প্রিয় পাঠক, শিশুদের নিয়ে শিশুপার্কে গিয়ে আপনি কি কখনো বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য