1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শীর্ষবৈঠক: বুচার নিন্দা করেও নিরপেক্ষ অবস্থানেই মোদী

১২ এপ্রিল ২০২২

রাশিয়া-ইউক্রেন বিরোধে ভারত যে নিরপেক্ষ অবস্থানেই থাকবে, তা বাইডেনকে আবার জানিয়ে দিলেন মোদী।

https://p.dw.com/p/49o6h
প্রেসিডেন্ট মোদী ও প্রধানমন্ত্রী মোদীর ভার্চুয়াল শীর্ষবৈঠক। ছবি: Carolyn Kaster/AP/picture alliance

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভার্চুয়াল বৈঠক হলো। সেখানে আলোচনার প্রধান বিষয়ই ছিল রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত। ভারত এখনো পর্যন্ত চাপ সত্ত্বেও জাতিসংঘের চারটি ভোটাভুটিতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেয়নি। তারা ভোটদানে বিরত থেকেছে। মোদী এদিন বুচার ঘটনার নিন্দা করলেও ভারত একবারের জন্যও রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খোলেনি। এই অবস্থায় অ্যামেরিকার বহু নেতা জানিয়েছেন, তারা ভারতের এই নিরপেক্ষ অবস্থানে আদৌ খুশি নন। বাইডেন প্রশাসনের তরফ থেকেও বারবার জানানো হচ্ছে, ভারত যেন সীমার মধ্যে থেকে রাশিয়া থেকে তেল কেনে।

মোদীর বক্তব্য

এই প্রেক্ষিতে বাইডেন-মোদী কথা হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে মোদীর প্রারম্ভিক ভাষণ প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে মোদী বলেছেন, কিছুদিন আগে ২০ হাজার ভারতীয় ছাত্র ইউক্রেনে আটকা পড়েছিলেন। অনেক কষ্ট করে তাদের ভারতে ফেরানো সম্ভব হয়েছে। একজন ছাত্র মারাও গিয়েছেন। মোদী বলেছেন, ''আমি একাধিকবার ফোনে ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি তাদের মুখোমুখি আলোচনায় বসার অনুরোধ করেছি। শান্তির জন্য আবেদন জানিয়েছি। আমাদের সংসদেও ইউক্রেন নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে।''

মোদী জানিয়েছেন, ''বুচায় মানুষের প্রাণহানির ঘটনা খুবই উদ্বেগজনক। আমরা এর নিন্দা করছি। আমরা চাই, এটা নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। আমরা আশা করি, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যে আলোচনা চলছে, তার ফলে শান্তি আসবে।'' 

মোদী বলেছেন, ''আমরা ইউক্রেনে বেসামরিক মানুষ যাতে নিরাপদে থাকেন, তার দাবি জানাচ্ছি। সেখানে ত্রাণ দিতে যাতে কোনোরকম অসুবিধা না হয়, তা-ও বলেছি। আমরা ইউক্রেনকে ওষুধ ও অন্য ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছি। ইউক্রেনের অনুরোধে আবার তাদের ওষুধ পাঠাচ্ছি।''

বাইডেন যা বলেছেন

ভার্চুয়াল বৈঠকের পর হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জানিয়েছেন, ''বাইডেন মোদীকে বলেছেন, রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করা ভারতের স্বার্থের বিরোধী হবে।  ভারত যাতে অন্য জায়গা থেকে তেল আমদানি করতে পারে, সেটা অ্যামেরিকা দেখবে। রাশিয়া থেকে ভারত যে তেল কেনে, তার থেকে অনেক বেশি তেল তারা অ্যামেরিকা থেকে কেনে।''

বাইডেন বলেছেন, '''ইউক্রেনকে ভারত যে মানবিক সাহায্য দিচ্ছে, আমি তা স্বাগত জানাই। ইউক্রেনের অবস্থা ভয়াবহ। সেখানে মানুষ ভয়ংকর কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। রেলস্টেশনে পর্যন্ত গোলা মারা হয়েছে। তার ফলে কয়েক ডজন মানুষ মারা গেছেন।''

তেল নিয়ে জয়শঙ্কর

বাইডেন রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে এই কথা বলার পর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেছেন, ''তেল কেনা নিয়ে ফোকাসটা ইউরোপের উপর হওয়া উচিত, আমাদের উপর নয়। আমরা এক মাসে যা তেল কিনি, ইউরোপ এক সন্ধ্যায় তা কেনে।''

মোদী-বাইডেন বৈঠকের পর দুই দেশের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা বৈঠকে বসেছিলেন। এটাকে বলা হচ্ছে, টু প্লাস টু ডিপ্লোমেসি।

মার্কিন কর্মকর্তাদের বক্তব্য

টাইমস অফ ইন্ডিয়া জানাচ্ছে, বৈঠকের পর মার্কিন কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, খুবই খোলাখুলি ও উষ্ণ পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্দিষ্ট করে কোনো দাবি করেননি। মোদীও রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করা নিয়ে কোনো কথা বলেননি বা কোনো প্রতিশ্রুতি দেননি। মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, তারা ভারতের উপর কোনো কিছু চাপিয়ে দিতে চাননি।

জিএইচ/এসজি(এপি, পিটিআই, এনডিটিভি, টাইমস অফ ইন্ডিয়া)