1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উত্তপ্ত রাজনীতি

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৮ মার্চ ২০১৩

দেশের প্রধান দুই দলের মধ্যে সংলাপ বা আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান আর হচ্ছেনা বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা৷ তাঁদের ধারণা, আরো রক্তক্ষয়ী সংঘাত আসন্ন৷ দুই দলই তাদের অস্তিত্বের লড়াইয়ে নেমেছে৷ দুই দলই জিততে চায়৷

https://p.dw.com/p/17zMv
ছবি: AFP/Getty Images

চলতি মাসে আগেই মোট ৫ দিন হরতাল করেছে বিরোধী দল৷ আর সোমবার থেকে শুরু হয়েছে সারাদেশে টানা ২ দিন বা ৪৮ ঘন্টার হরতাল৷ ঢাকায় অবশ্য এই হরতাল হবে ৩ দিন৷

গত ডিসেম্বরে ৩ দিন হরতাল এবং ১ দিন অবরোধ, জানুয়ারিতে ২ দিন হরতাল এবং ফেব্রুয়ারিতে ৭ দিন হরতাল করেছে বিরোধী দল৷

বিরোধী দলীয় নেতা বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া শনিবার মানিকগঞ্জের সিংগাইরের জনসভায় নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আলোচনা বা সংলাপের বিষয় নাকচ করে দিয়ে সরকার পতনের মাধ্যমেই দাবি আদায়ের ঘোষণা দিয়েছেন৷ এতে জান-মালের কিছু ক্ষতি হলেও দেশের জন্য জনগণকে এই ক্ষতি মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন৷ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আলোচনার দরজা সব সময় খোলা থাকার কথা বলেছেন৷ তবে কোনো শর্ত দিয়ে আলোচনা করার বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান অনড় আছে আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, হরতালে জান-মালের ক্ষতির দায় নিতে হবে খালেদা জিয়াকে৷

Bangladesch Opposition Demonstration Begum Khaleda Zia
খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে সংলাপ নাকচ করে দিয়ে সরকার পতনের মাধ্যমেই দাবি আদায়ের ঘোষণা দিয়েছেনছবি: Reuters

সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন-এর প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার এই পরিস্থিতিকে আশঙ্কাজনক উল্লেখ করে বলেন, সরকার এবং বিরোধী দল এখন অস্তিত্ব রক্ষার যুদ্ধে নেমেছে৷ বিরোধী দল মনে করছে, সরকারের পতন ঘটানো না গেলে আগামী নির্বাচনে তারা ক্ষমতায় আসতে পারবেনা৷ আর সরকারী দল মনে করে, কোনো চাপ বা আন্দোলনের মুখে পিছু হটলে নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি হবে৷ ফলে সরকার এবং বিরোধী দল এখন মুখোমুখি অবস্থানে ৷ কেউ কাউকে ছাড় দেবেনা৷ যার অনিবার্য পরিণতি আরো সংঘাত, আরো রক্তপাত৷

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাও মনে করেন আরো বড় ধরণের সংঘাতের দিকেই যাচ্ছে দেশ৷ এবারের নির্বাচনপূর্ব চিত্র আগের চেয়ে আলাদা৷ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের বিপরীতে জামায়াতে ইসলামী এবং হেফাজতে ইসলামের অবস্থান৷ আওয়ামী লীগসহ ১৪ দল শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চের পক্ষে অবস্থান দিয়েছে৷ আর মিত্র জামায়াতের জন্য বিএনপির নেতৃত্বে ১৮ দল এর বিপক্ষ অবস্থান নিয়েছে৷ যা দেশের মানুষের মধ্যেও একধরণের বিভাজন সৃষ্টি করেছে৷ তাই এই সংঘাত তৃণমূলে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাঁর৷

Syed Ashraful Islam is the local government minister of Bangladesh Government.
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আলোচনার দরজা সব সময় খোলা থাকার কথা বলেছেনছবি: Samir Kumar Dey

এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার আপাতত কোন পথ দেখছেন না ড. বদিউল আলম মজুমদার৷ তিনি মনে করেন, হয়তো সংঘাতের মাধ্যমেই জয় পরাজয় নির্ধারণ হতে পারে৷ আর যদি শুভবুদ্ধির উদয় হয় তাহলে ভিন্ন কথা৷

আর ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ জানান, এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক নানা মহল সক্রিয় হয়েছে৷ তারা তাদের কাজ শুরু করে দিয়েছেন৷ তবে সংঘাত বন্ধ করে সমঝোতার জন্য তাদের কাজ কবে দৃশ্যমান হবে তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যায়না৷ আর তারা সক্রিয় হলেই সংঘাত থেমে যাবে তাও নয়৷ তিনি ধারণা করেন এমনও হতে পারে যে শেষ পর্যন্ত সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘ রেফারির ভূমিকায় নামতে পারে৷ নির্বাচন হতে পারে তাদের তত্ত্বাবধানে৷ কিন্তু তার পথ আমাদের সংবিধানে নেই৷ সুতরাং পরিস্থিতি কতদূর গড়াবে তা ভবিষ্যতই বলে দেবে৷

এদিকে সোমবার ৪৮ ঘন্টার হরতাল শুরুর আগে রোববার দুপুর থেকেই হরতালের সমর্থনে সহিংসতা শুরু হয়৷ রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকায় ৮টি বাসে আগুন দেয়া হয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য