1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সমুদ্রের তলদেশে ড্রোন সাবমেরিনের সাফল্য

৯ অক্টোবর ২০১৮

নানা রকম প্রতিকূলতার কারণে সমুদ্রের নীচের জগতের নাগাল পাওয়া আজও সহজ নয়৷ ইউরোপের বিজ্ঞানীরা এবার এমন সাবমেরিন ড্রোন তৈরি করেছেন, যারা দলবদ্ধভাবে অনেক দুরূহ কাজ সেরে ফেলতে পারবে৷

https://p.dw.com/p/369Lx
Australien Rettungsschwimmer Drohne
ছবি: Getty Images/AFP/P. Parks

এক ইউরোপীয় গবেষণা প্রকল্পের আওতায় ইঞ্জিনিয়াররা এমন ড্রোন সাবমেরিন তৈরি করেছেন,যেগুলি শব্দসংকেতের মাধ্যমে পরস্পরের মধ্যে সংলাপ চালাতে পারে৷ রোম বিশ্ববিদ্যালয়ের কিয়ারা পেট্রিওলি এ বিষয়ে বলেন, ‘‘এই রোবটরা পানির নীচে পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ ও সহযোগিতা করতে সক্ষম৷ একে ‘ইন্টারনেট অফ আন্ডারওয়াটার থিংস' বলা চলে৷ এ এক অভিনব আইডিয়া, যার আওতায় সেন্সর ও রোবটের মতো বিভিন্ন ডিভাইস তথ্যের আদান-প্রদান করতে পারে৷ এর ফলে মহাসাগর, হ্রদ ও নদীগুলির উপর নজর রাখার নতুন পথ খুলে যাচ্ছে৷''

নির্দিষ্ট কিছু সেন্সর নিয়ে একদল রোবট সমুদ্রের তলদেশ ঘুরে হারিয়ে যাওয়া কোনো বস্তু বা রাসায়নিক পদার্থের লিক শনাক্ত করবে৷ একসঙ্গে কাজ করে কম সময়ের মধ্যে তারা অনেক তথ্য সংগ্রহ করতে পারে৷ পোর্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের রিকার্ডো মার্টিন্স বলেন, ‘‘তাদের সংলাপও অনেকটা মানুষের মতো৷ পানির নীচে যন্ত্ররা বিশাল পরিসরে ফ্রিকুয়েন্সি ব্যবহার করে৷ মানুষের কণ্ঠ ছাড়াও কানে শোনা যায় না – স্পেকট্রামের এমন ফ্রিকুয়েন্সিও কাজে লাগায় তারা৷''

সাবমেরিনগুলি সব তথ্য মাটির উপর এক নিয়ন্ত্রণকেন্দ্রে পাঠায়৷ তাদের নির্দিষ্ট অবস্থান এবং তাপমাত্রা ও সমুদ্রের পানির রাসায়নিক মিশ্রণের মতো পরিবেশগত তথ্য পর্দায় ফুটে ওঠে৷ রোম বিশ্ববিদ্যালয়ের রোব্যার্তো পেত্রোকিয়া বলেন, ‘‘একই সময়ে একাধিক যান একটি এলাকা চষে বেড়ায় এবং সেন্টার থেকে আমরা সেগুলি নিয়ন্ত্রণ করি৷ তাদের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাবার নির্দেশ দেই৷ প্রায় সব সময়ে তাদের উপর নজর রাখি৷ পানির নীচে থাকলে এক অ্যাকুস্টিক চ্যানেল, উপরে এলে রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে আমরা যোগাযোগ রাখি৷''

বিশেষ পানি-নিরোধক আবরণের কল্যাণে সাবমেরিন সমুদ্রের কয়েকশ' মিটার গভীরে নামতে পারে৷ অভিযান অনুযায়ী, তাদের বিভিন্ন ধরনের তথ্য সংগ্রহ, রেকর্ড ও প্রেরণ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়৷ পোর্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের রিকার্ডো মার্টিন্স বলেন, ‘‘অ্যাকুস্টিক মোডেম পানির নীচে যোগাযোগ সম্ভব করে৷ সেইসঙ্গে রয়েছে পরিবেশ সেন্সর এবং পানির নীচে চলাফেরা সম্ভব করতে এক কম্পিউটার সিস্টেম৷ প্রায় ৮ ঘন্টা চলাফেরা করার জন্য উপযুক্ত ব্যাটারিও রয়েছে৷ রেডিও ও স্যাটেলাইট যোগাযোগের মডিউল তো আছেই৷''

সাবমেরিনের মধ্যে এক সোনার ডিভাইসও রয়েছে, যার শব্দতরঙ্গের সাহায্যে ডুবে যাওয়া বস্তু শনাক্ত করা যায়৷ পোর্টো শহরের বন্দর এলাকায় হারানো একটি কন্টেনার শনাক্ত করেছে এই ব্যবস্থা৷ পোর্টো বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি লিনো আন্টুনেস বলেন, ‘‘তিন রকমের প্রয়োগের জন্য এমন ডিভাইস উপযুক্ত৷ প্রথমত নিরাপত্তা, দ্বিতীয়ত পরিবেশ পর্যবেক্ষণ, যা আমাদের জন্য জরুরি এবং তৃতীয়ত বন্দরের জাহাজগুলির নিরীক্ষণ৷''

সমুদ্র থেকে নদী – যেখানেই ডুবুরির জন্য ঝুঁকি ও ব্যয়ের মাত্রা বেশি, সেখানেই এই মিনি সাবমেরিন কাজে লাগানো যেতে পারে৷ নতুন এই প্রযুক্তি পানির নীচের নীরব জগত বুঝতে আমাদের আরও সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ রোম বিশ্ববিদ্যালয়ের কিয়ারা পেট্রিওলি বলেন, ‘‘পানির নীচে আগ্নেয়গিরি ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান আবিষ্কার থেকে শুরু করে আমাদের উপকূল, অবকাঠামো ও বন্দরের সুরক্ষার ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি আমাদের জগত সম্পর্কে আরও গভীর জ্ঞান অর্জনে সাহায্য করবে৷ মানবজাতির ভবিষ্যতের জন্য এটা অত্যন্ত জরুরি৷'' 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য